/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2018/08/income-tax.jpg)
বাজেটে করযোগ্য আয়ে পাঁচ লক্ষ টাকা অবধি আয়কর ছাড়ের ঘোষণা এখন সারা দেশের মধ্যবিত্ত চাকুরীজীবি, পেনশনভোগী এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছে চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে। যাঁদের বার্ষিক মোট আয় ১০ লক্ষ টাকা, তাঁরাও এখন নিজেদের চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টের দরজায় লাইন দিলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ, আয়কর ছাড়ের নতুন ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এখন লক্ষ্য একটাই: করযোগ্য আয় যেভাবেই হোক পাঁচ লক্ষের নিচে নামিয়ে আনা।
যাঁদের করযোগ্য আয় পাঁচ লক্ষের বেশি, তাঁদের জন্যও করের বোঝা কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী পীযুষ গোয়েল। সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, জুলাইয়ে পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশের সময় হতে পারে সেই কাঙ্খিত ঘোষণা, "এটা পূর্ণাঙ্গ বাজেট না হয়ে ইন্টেরিম বাজেট ছিল বলে কিছু বাধা ছিল। তবু কিছু সিদ্ধান্ত নিতে আর দেরি করা যেত না, বিশেষ করে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত আয়করদাতাদের উপর করের বোঝা কমানো। বাকিটা জুলাইয়ে পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করার সময় তৎকালীন অর্থমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন।"
আরও পড়ুন: আয়করে বিপুল ছাড়! কী বলছে বাজেট?
করযোগ্য আয় কী? মোট আয়ের থেকে ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয় (৮০ সি ধারায়, জীবনবীমা, প্রভিডেন্ট ফান্ড, স্বাস্থ্যবীমা, মিউচুয়াল ফান্ড ইত্যাদি) তো ছাড়ের আওতায় আসেই, তার সঙ্গে বাড়ি কেনার জন্য ঋণের সুদ বাবদও করযোগ্য আয় কমিয়ে আনতে পারেন করদাতারা।
উদাহরণ? বার্ষিক ৭৫ হাজার টাকা প্রিমিয়ামের স্বাস্থ্যবীমা থাকলে সেটা ছাড়যোগ্য আয়। সঙ্গে ধরুন ন্যাশনাল পেনশন স্কিমে বার্ষিক ৫০ হাজার টাকা দিলেন। এটাও ছাড়যোগ্য। এ ছাড়া শিক্ষার জন্য ঋণ নিলেও পাবেন স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের সুবিধে।
এইভাবে ভেবেচিন্তে বিনিয়োগ করলে যাঁদের মোট আয় দশ লক্ষেরও বেশি, তাঁরাও করযোগ্য আয় নামিয়ে আনতে পারেন পাঁচ লক্ষের নিচে। যে ক্ষেত্রে আয়কর দেওয়ার কোন ঝামেলাই থাকবে না। এক পয়সাও ট্যাক্স দিতে হবে না আর। আয়কর বাবদ যে টাকাটা বাঁচবে করদাতাদের, তা যদি বাজারে কেনাকাটার খরচ হিসাবে ফিরে আসে অর্থব্যবস্থায়, দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেই মনে করছেন বিষেশজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: দিনে ১৫ টাকা? ওতে এক কাপ চা হয়, বলল কিসান সভা
ইতিবাচক দিক আরও আছে। 'Plan Ahead Wealth Advisor’-এর কর্ণধার বিশাল ধাওয়ান যেমন মনে করেন, "নতুন ঘোষণার ফলে করদাতাদের মধ্যে টাকা বাঁচানোর সদভ্যাস এবং পরিকল্পিত বিনিয়োগের প্রবণতা বাড়বে, যাতে করযোগ্য আয় কমিয়ে আনা যায়। এতে আখেরে দেশের অর্থনীতিই লাভবান হবে।" ধাওয়ান আরও মনে করেন, উচ্চকোটির করদাতাদেরও এই বাজেটে সন্তুষ্ট হওয়ার কারণ আছে, কারণ ট্যাক্স-স্ল্যাব বা করের হার অপরিবর্তিতই আছে।
এই বাজেটের দুটি ঘোষণায় অবশ্য সব স্তরের করদাতারাই লাভবান হবেন। এক, স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের উর্দ্ধসীমা ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়ানো। দুই, ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসে বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত সুদের টিডিএস (ট্যাক্স ডিডাকশন অ্যাট সোর্স)-এর সীমা ৪০ হাজার টাকা অবধি বাড়ানো। প্রথমটি, অর্থাৎ স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের কথা যদি ধরি, যাঁদের বার্ষিক মোট আয় দশ লক্ষের বেশি, এবারের ঘোষণার ফলে তাঁরা বছরে তিন হাজার টাকা বাঁচাতে পারবেন।