ভয়াবহ বন্যার গ্রাসে অসম। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে আরও ১০ জনের। এই নিয়ে অসমে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১১৮। বন্যা কবলিত রাজ্যের ৩০ জেলার প্রায় ৫০ লাখের বেশি মানুষ। প্লাবিত হয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার গ্রাম। অসমের সামগ্রিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কেন্দ্রও।
অসম বন্যায় ২৫ কোটি টাকা অনুদান পাঠালেন রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি। বন্যা-দুর্গত মানুষদের সাহায্যের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে বিপুল পরিমাণ আর্থিক সাহায্য করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা শুক্রবার এক টুইট বার্তায় একথা জানান। সেই সঙ্গে তিনি অসমের বন্যা কবলিত মানুষদের পাশে থাকার জন্য মুকেশ ও তাঁর ছেলে অনন্ত আম্বানিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ধন্যবাদ জানান।
এর আগে বলিউড অভিনেতা অর্জুন কাপুর এবং পরিচালক রোহিত শেঠিও রাজ্যের বন্যা-দুর্গত মানুষের জন্য মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে ৫ লক্ষ টাকা অনুদান পাঠান। অন্যদিকে অসমের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিব্বতের ধর্মগুরু দলাই লামা। সামগ্রিক বন্যা পরিস্থিতির খোঁজ খবর নেওয়ার পাশাপাশি তিনি মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে ১০ লক্ষ টাকা অনুদান পাঠিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক বিবৃতিতে বলেন যে কেন্দ্র অবিরাম আসামের বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। অসমের এই কঠিন বন্যা পরিস্থিতিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে কেন্দ্র। তিনি বলেন, সেনাবাহিনী এবং এনডিআরএফ দলকে বন্যা কবলিত এলাকায় পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে বিমান বাহিনীর ২৫০ জন সদস্যকে উদ্ধার অভিযানে নামানো হয়েছে’।
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “অসমের সামগ্রিক বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে একটি কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলকে অসমে পাঠানো হবে। দলের সদস্যরা অসম এবং মেঘালয় দুটি রাজ্যের বন্যার সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন।“বর্ষায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় দুটি রাজ্য। এদিকে অসম বন্যা নিয়ে এক টুইট বার্তায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, অসমের বন্যা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।
ইতিমধ্যেই সেখানে এনডিআরএফ দল এবং সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুপুরী অসমের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে এর আগেও অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার কাছ থেকে রাজ্যের ব্যপারে খোঁজ খবর নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
রাজ্যের বেশ কিছু জেলায় নদীর জল কিছুটা কমলেও ধুবড়িতে নগাঁওয়ের জল এখনও বিপদসীমার ওপর দিয়েই বয়ে চলেছে। শিলচরের চিত্রটা আরও ভয়ানক। বন্যা দুর্গতদের ত্রাণ ও অন্যান্য সামগ্রী পৌঁছে দিতে সেনাবাহিনীকে কাজে লাগানো হচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, ৩২টি জেলা বন্যা কবলিত। ব্রহ্মপুত্র নদের জলস্ফীতির পর ৫ হাজারের বেশি গ্রাম প্লাবিত। বিপুল ক্ষতির মুখে চাষের। প্রায় ৭০ হাজার হেক্টর চাষের জমি এখন জলে ডুবে রয়েছে।