একদিকে সীমান্তে উত্তেজনা, অন্যদিকে চিনা বিনিয়োগ নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রের পদক্ষেপ- এই দু'য়ের জেরে ভারতে চিনা বিনিয়োগের মাত্রা তলানীতে। ভারতে বেসরকারি কোম্পানিগুলোর আর্থিক লেনদেন দেখার দায়িত্বপ্রাপ্ত ভেঞ্চার ইন্টালিজেন্স থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে চিন এবং হংকং-স্থিত কোম্পানিগুলো থেকে ভারতে বিনিয়োগের হার অনেকটাই কমেছে। ২০১৯ সালে বিনিয়োগের মাত্রা যেখানে ছিল ৩.৫ বিলিয়ান ডলার, সেখানে ২০২০ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১.০৫ বিলিয়ান ডলার।
তবে, এই সময়কালে ভারতীয় সংস্থাগুলোতে সার্বিকভাবে বেসরকারী ইক্যুইটি এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল (পিই-ভিসি) বিনিয়োগ আগের বছরের তুলনায় ৩৬.৪ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ২০২০ সালে ৩৯.৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের তথ্য অনুসারে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়া ছ'মাসের সময়কালে এদেশে চিনা বিনিয়োগে উল্লেখযোগ্য ধীরগতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। ২০২০ সালের এপ্রিল-সেপ্টেম্বর সময়কালের মধ্যে, চিন থেকে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের হার ছিল ৫৫ মিলিয়ন ডলার- যা গত তিন বছরের ছ'মাসে সময়সীমায় (সেপ্টেম্বর 2019 থেকে মার্চ 2020) সবচেয়ে কম।
এদেশে চিনা প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের সবচেয়ে বেশি হয়েছিল ২০১৭ সালের অক্টোব থেকে ২০১৮ সারে মার্চ পর্যন্ত। যার পরিমাণ ২৪৭ মিলিয়ন ডলার। ২০২০-র এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চিন থেকে সমষ্টিগত এফডিআই-য়ের হার ২.৪৩ বিলিয়ন ডলার। স্লথ হয়েছে হংকং থেকে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগও। বিদিশি বিনিয়োগের হারে এই অঞ্চল ভারতের প্রথম সারিতে ছিল। কিন্তু বিনিয়োগের ধীরগতির জন্য ভারতে বিনিদেশি বিনিয়োগের তালিকায় হংকং ১২ থেকে ১৪ নম্বর স্থানে মেনে আসে ২০২০-র সেপ্টেম্বরে।
ভারতে চিনের বিনিয়োগ নিয়ন্ত্রে এপ্রিলে এফডিআই নিয়মে বদল আনে কেন্দ্রীয় সরকার। নিয়ম অনুসারে, ভারতের সঙ্গে স্থলসীমান্ত রয়েছে, এমন দেশের কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা ভারতীয় কোনও সংস্থায় বিনিয়োগ করতে চাইলে সরকারের মাধ্যমেই তা করতে হবে। সরাসরি দুই সংস্থার মধ্যে চুক্তির ভিত্তিতে বিনিয়োগ করা যাবে না। আগে এই নিয়ম কার্যকর ছিল শুধুমাত্র বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের ক্ষেত্রে। কিন্তু নয়া এই সিদ্ধান্তের ফলে তার আওতায় পড়ে যায়, চিন, নেপাল, ভুটান, মায়ানমারও।
সীমান্তে উত্তেজনা ও চিনা বিনিয়োগ নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রের পদক্ষেপের জেরে চিনা কোম্পানিগুলো ভারতে বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছে বলে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের কাছে জানিয়েছেন সেদেশের অটোমোবাইল সংস্থার এক শীর্ষ আধিকারিক।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন