জিএসটি ঘাটতি পূরণে কেন্দ্রের বিকল্প ঋণ প্রস্তাব মানতে রাজি নয় বিভিন্ন রাজ্য। উল্টে কেন্দ্রকেই ঋণ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে রাজ্য সরকারগুলো। বিরোধীতার কথা জানিয়ে ইতিমধ্যেই তেলেঙ্গানা, দিল্লি, তামিলনাড়ু ও ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন।
দিন কয়েক আগেই জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নিমর্লা সীতারমন জানিয়েছিলেন যে, পণ্য ও পরিষেবা করের ক্ষতিপূরণের দায়িত্ব নেবে না কেন্দ্র। ক্ষতিপূরণ মেটাতে রাজ্যগুলিকে ধার নিতে হবে। দু’টি বিকল্প প্রস্তাবও দেন সীতারমন। প্রথম বিকল্প হিসাবে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘বিশেষ জানালা’ আইন অনুযায়ী রাজ্যগুলি ৯৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিতে পারে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের থেকে। সেক্ষেত্রে সুদের হার সহজ করার পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্র। এই ঋণ পাঁচ বছরের মেয়াদে দেওয়া হবে, এরপর সেস তহবিলের পক্ষ থেকে তা মিটিয়ে দিতে হবে রাজ্যগুলিকে। দ্বিতীয় বিকল্প হিসাবে, কেন্দ্র তরফে বলা হয়েছে, লোকসানের ২ লক্ষ ৩৫ হাজার কোটি টাকার পুরোটাই ঋণ হিসাবে নিতে পারে রাজ্যগুলি। ক্ষতিপূরণের জন্য এই ঋণের ব্যবস্থা কেবলমাত্র চলতি অর্থবর্ষেই কার্যকরী থাকবে, একথাও জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।
এ প্রসঙ্গে কেরালার অর্থমন্ত্রী থমাস ইশাক বলেন, কেন্দ্রের দু'টি বিকল্প প্রস্তাব রাজ্যগুলো শুধু ফেরাচ্ছে না- তৃতীয় বিকল্পেরও হদিশ দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে কেন্দ্র ঘাটতি বাবদ অর্থ ঋণ নিক। প্রয়োজনে ঘাটতি মেটাতে দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে সেস বাড়িয়ে দেবে রাজ্য সরকারগুলো।
প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপের রাস্তাতেও হাঁটতে হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন থমাস ইশাক। তাঁর কথায়, কোভিডের সঙ্গে জিএসটি ক্ষতিপূরণের কোনও যোগ নেই। তাই করোনা ও জিএসটি দু'টি বিষয়কে গুলিয়ে দেওয়া বেআইনি কাজ। জিএসটি কাউন্সিলের পরবর্তী বৈঠক হতে পারে ১৯ সেপ্টেম্বর। সেখানেই এই ইস্যুতে ভোটাভুটির সম্ভাবনা রয়েছে।
জিএসটি ক্ষতিপূরণ আদায়কে রাজ্যগুলোর সাংবিধানিক অধিকার বলে দাবি করেছেন থমাস। ক্ষতিপূরণ আদায়ে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এখনও পর্যন্ত বিরোধী শাসিত পাঞ্জাব, বাংলা, কেরালা, দিল্লি, ছত্তিশগড়, রাজস্থান, তেলেঙ্গানা, পদুচেরি সীতারমনের জিএসটি ঘাটতি পূরণে বিকল্প প্রস্তাবের প্রতিবাদ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদীকে লেখা চিঠিতে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও বলেছেন, 'মহামারীতে রাজ্যগুলোর খরচ বেড়েছে। জিএসটি চালুর পর থেকে রাজ্যের আয় তলানিতে। অন্যদিকে কেন্দ্র এখনও আয়কর, কর্পোরেশন ট্যাক্স এবং শুল্ক কর নিজেদের হাতেই রেখেছে।'
কেন্দ্রের তরফে আইনগতভাবে আরও উপযুক্ত ও পোক্ত বিরল্পের দাবি জানানো হয়েছে। এক্ষেত্রেও কেন্দ্রকে ঋণ নেওয়ার আর্জি জানানো হয়। সেস আদায়ের সীমাও ২০২২ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
কেন্দ্রের দু'টি প্রস্তাবেই রাজ্যগুলোকে ঋণ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে, যা প্রশাসনিকভাবে বাস্তবায়ণ করা অসুবিধার ও ব্যাসাপেক্ষ। কেন্দ্রকে লেখা চিঠিতে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী পালানিস্বামী এ কথা জানিয়েছেন।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন