Fuel Price: গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অব্যাহত জ্বালানির দৌড়। গত দুই সপ্তাহে মোট ৪ বার বেড়েছে পেট্রোল-ডিজেলের দাম। মুম্বাই-সহ মহারাষ্ট্রে বহু আগেই সেঞ্চুরি পেরিয়েছে পেট্রোল। পিছিয়ে নেই কলকাতাও। শনিবার মধ্যরাতে পাওয়া হিসেবে, কলকাতায় লিটার প্রতি ৯৫ টাকা ছাড়িয়েছে পেট্রোলের দাম। ডিজেল ৮৯ ছুঁইছুঁই। জানা গিয়েছে, পেট্রোলে লিটার প্রতি দাম বেড়েছে ২৬ পয়সা আর ডিজেল বেড়েছে ২৯ পয়সা। বর্ধিত দরের হিসেবে কলকাতায় এক লিটার পেট্রোল ৯৫.০২ আর ডিজেল ৮৮.৮০ পয়সা। পাঁচ রাজ্যে ভোটপর্বের পর থেকে পালা করে দেশে দৌড় অব্যাহত রেখেছে জ্বালানি।
পরিস্থিতি এতটাই উদ্বিগ্ন যে, তেলের দরবৃদ্ধি ও মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কায় সরব হয়েছেন নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান। শনিবার রাজীব কুমার মন্তব্য করেছেন, অবিলম্বে বিকল্প ভাবা উচিত কেন্দ্রের। স্টেট ব্যাঙ্কের মুখ্য অর্থনীতিবিদ সৌম্যকান্তি ঘোষের মতে, তেলের দর চড়তে থাকলে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন।
ইতিমধ্যে, রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ, মহারাষ্ট্র-সহ প্রায় হাফ ডজন রাজ্যে সেঞ্চুরি ছাড়িয়েছে পেট্রোল। প্রথম মেট্রো শহর হিসেবে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে রেকর্ড গড়েছে বাণিজ্য নগরী। পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডিজেলও। পণ্য পরিবহণ ডিজেল কেন্দ্রিক বাড়ায়, আঁচ এসে পড়ছে সব্জির বাজারে। যদিও জ্বালানির এই মুল্যবৃদ্ধির ডায় ঝেড়েছে কেন্দ্র। বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম এবং রাজ্যের চাপান অস্বাভাবিক ভ্যাটকে দায়ী করেছে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক।
তবে বিরোধীদের দাবি, ‘লকডাউন ও করোনার কারণে কমেছে জিএসটি আদায়।তাই জ্বালানি থেকে ঘুরিয়ে রাজস্ব ঘরে তুলছে কেন্দ্র। আখেরে যা সাধারণ মানুষের কাছে অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠছে।‘ অবিলম্বে এই দরবৃদ্ধিতে রাশ না টানলে মূল্যবৃদ্ধি নিশ্চিত। এমনটাই দাবি বিরোধী শিবিরের।
এদিকে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে কাবু ভারত। একাধিক রাজ্যে মে মাসেই লাগু হয়েছে লকডাউন। যা অর্থনীতির উপর সাংঘাতিক আঘাত আনবে বলেই মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু, মে মাসে জিএসটি আদায়ের পরিসংখ্যান অনুসারে বলা যায়, যতটা আশঙ্কা করা হচ্ছিল সেই তুলনায় বাস্তব পরিস্থিতি ভিন্ন। এপ্রিলের তুলনায় কম হলেও চলতি বছর মে মাসেও জিএসটি সংগ্রহ হয়েছে ১ লক্ষ কোটির বেশি। ভারতীয় অর্থনীতির ক্ষেত্রে যা বেশ আশাব্যঞ্জক বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে, ভিন্ন মতও রয়েছে। অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, লকডাউনের ধাক্কা ভারতীয় অর্থনীতির উপর কতটা প্রভাব ফেলছে তা নির্ণয়ের জন্য আগামী কয়েক মাসের জিএসটি আদায়ের পরিসংখ্যানের উপর নজর রাখা প্রয়োজন।
অর্থমন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুসারে, চলতি বছর মে মাসে জিএসটি আদায় হয়েছে ১,০২ লক্ষ কোটি। এপ্রিলে এই সংখ্যা ছিল ১,৪১,৩১৪ লক্ষ কোটি। মহামারীকালে যা রেকর্ড। এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে জিএসটি আদায় হয়েছে ২৭ শতাংশ কম। কিন্তু, করোনা আবহে বিভিন্ন রাজ্যে লকডাউনের মধ্যেও জিএসটি আদায় লক্ষে কোটির বেশি সংগ্রহ হওয়াকে কিছুটা হলেও স্বস্তির ইঙ্গিত বলে মনে করছে কেন্দ্র।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন