মুকেশ অম্বানিকে ছাপিয়ে এশিয়ার সেরা ধনী ব্যক্তি হলেন গৌতম আদানি। পণ্য বেচাকেনা দিয়ে তাঁর ব্যবসা জীবনের সূত্রপাত। বর্তমানে, খনি থেকে একগুচ্ছ বন্দর, দূষণমুক্ত বিদ্যুৎ উত্পাদন-সহ নানাক্ষেত্রে ছড়িয়ে রয়েছে আদানির ব্যবসা। আর, তারই সুবাদে এশিয়া সেরা ধনী ব্যক্তি হলেন ৫৯ বছরের এই শিল্পপতি। যার সম্পত্তির মোট মূল্য ৮,৮৫০ কোটি মার্কিন ডলার।
ব্লুমবার্গ বিলিওনেয়ারস ইনডেক্স নামে সংস্থার তালিকা অনুযায়ী, গৌতম আদানির কাছাকাছিই রয়েছেন অপর ভারতীয় শিল্পপতি মুকেশ অম্বানি। তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৮,৭৯০ কোটি মার্কিন ডলার। শুধুমাত্র এবছরই গৌতম আদানির সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে ১,২০০ কোটি মার্কিন ডলার। যার সুবাদে তিনি এবছর সবচেয়ে বেশি সম্পত্তি অর্জনকারী ব্যক্তির শিরোপাও পেয়েছেন। তবে, গৌতম আদানির চলার পথটা যে সবসময় মসৃণ হয়েছে, তেমনটা নয়।
অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর বিতর্কিত খনি প্রকল্প নিয়ে আপত্তি তুলেছেন পরিবেশবিদরা। এমনকী, গ্রেটা থুনবার্গের মতো পরিবেশবিদরাও সরব হয়েছেন আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে। কয়লা এবং খনি ছাড়াও বিমানবন্দর, পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি, তথ্য কেন্দ্র এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও আদানির ব্যবসা রীতিমতো ফুলেফেঁপে উঠেছে। শিল্পপতি হিসেবে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। দেশের আর্থিক মেরুদণ্ড গড়ে তোলা এবং দেশের দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক লক্ষ্যপূরণেও আদানিকে কাজে লাগিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রচলিত সমস্ত ধরনের শিল্পেই আদানিদের বিনিয়োগ রয়েছে। সঠিক সময়ে বিনিয়োগের জেরেই লাভবান হয়েছে আদানি গোষ্ঠী। যার সুবাদে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছেও আদানি গোষ্ঠী রীতিমতো উজ্জ্বল নাম। এর ফলে, সংস্থার বিস্তারে অর্থ জোগাড়ের ক্ষেত্রেও কোনও সমস্যায় পড়তে হয়নি আদানির সংস্থাকে। ২০৭০ সালের মধ্যে দেশকে কার্বনমুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে মোদি সরকার। এক্ষেত্রেও সরকারের অন্যতম ভরসা আদানি গোষ্ঠীর দূষণ হ্রাস করার বিভিন্ন প্রকল্প।
এবছর যেমন আদানির চোখধাঁধানো সাফল্য দেখল বিশ্ব। ২০২০ সালে তেমনই সাফল্যের চূড়া স্পর্শ করেছিল অম্বানিদের সংস্থা। তেল থেকে পেট্রোকেমিক্যাল, নানাক্ষেত্রে সাফল্যের মুখ দেখেছে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ। পাশাপাশি, গুগল ইংক এবং ফেসবুকে বিনিয়োগ করেও কারিগরি ক্ষেত্রে বিপুল লাভবান হয়েছিলেন অম্বানিরা। এবছর, আর্থিক অগ্রগতির সেই পেন্ডুলামটাই যেন ঘুরে গিয়েছে আদানিদের দিকে।
Read in English