চলতি আর্থিক বছরে জিএসটি আদায় ২ লক্ষ ৩৫ হাজার কোটি টাকা কম হবে। জানিয়েছে জিএসটি কাউন্সিল। এর কারণ হিসাবে 'বিধির বিধান'কেই দায়ী করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। করোনা সংকটের কারণে অর্থনীতির ঝিমুনির ফলে রাজ্যগুলির জিএসটি বাবদ আয় কমেছে বলে জানিয়ে কেন্দ্র। তবে, এক বছর আগে থেকেই রাজ্যগুলোকে জিএসটি ক্ষতিপূরণ দানে স্থবিরতা দেখা গিয়েছিল। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের অগাস্ট-সেপ্টেম্বরের ক্ষতিপূরণ সঠিক সময়ে কেন্দ্র মেটায়নি। সেই সময় থেকেই অন্যান্য খাতেও রাজ্যগুলোকে দেয় অর্থ বিলম্ব হয়ে যায়।
গত তিন বছর ধরেই অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। গত অগাস্ট থেকে জিএসটি আদায়ে তার বিরূপ প্রভাব পড়ে। ২০১৯ সালের এপ্রিল-জুনে যেখানে জিএসটি আদায়ের পরিমান ছিল ৫.৫ শতাংশ, সেখানে জুলাই-সেপ্টেম্বরে তা কমে দাঁড়ায় ৪.৪ শতাংশে। অক্টোবর-ডিসেম্বরে তা আরও কমে হয় ৪.১ শতাংশ। জানুয়ারি-মার্চ ২০২০-তে এই হার ছিল ৩.১ শতাংশ।
পরিসংখ্যানের বিচারে গত অগাস্ট থেকে জিএসটি আদায়ে কম হলেও নভেম্বরে তা বৃদ্ধি পয়েছিল। উৎসবের মরসুম, কর ফাঁকি কমাতে পদক্ষেপ ও ইনপুট ট্যাক্সে পরিধি নির্ধারণের কারণেই এই বৃদ্ধি বলে মনে করা হয়।
রাজ্যগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে সমস্যার কথা গত সেপ্টেম্বরে গোয়ায় জিএসটি কাউন্সিলের ৩৭ তম বৈঠকে কেন্দ্রীয় সরকার প্রথম স্বীকার করেছিল। সেস থেকে কম আদায়ের কারণেই এই পরিস্থিতি বলে জানানো হয়।
কেন্দ্রের তরফে প্রাপ্য অর্থ না মেলায় সরব হয় পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা, পঞ্জাব, রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলি। তাদের বিস্তর অভিযোগের পর গত ৪ জুন তিন মাস অর্থাৎ ২০১৯ সালের ডিসেম্বর, চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারির ক্ষতিপূরণ মেটানো হয়েছিল। সবমিলিয়ে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৩৬,৪০০ কোটি টাকা দিয়েছিল কেন্দ্র। জুলাইতে মার্চের বাকি থাকা ১৩,৮০৬ কোটি রাজ্যগুলোকে দেওয়া হয়। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের জিএসটি বাবদ রাজ্যগুলোকে কেন্দ্র মোট ১.৬৫ লক্ষ কোটি টাকা দেয়।
জিএসটি আইন অনুযায়ী, ২০১৭ সালের জুলাই থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর পর্যন্ত রাজ্যগুলির যে পরিমাণ কর আদায় হবে, তার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা কেন্দ্রের। সিগারেট, অটোমাবাইল, কয়লা, বিলাসবহুল পণ্য ইত্যাদির উপর যে সেস চাপানো হয়, সেই আয়ের তহবিল থেকেই সেই ক্ষতিপূরণ মেটানো হয়। কিন্তু সেই তহবিলের অবস্থা শোচনীয়। ফলে রাজ্যগুলোকে টাকা দিতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানান সীতারমন। জিএসটি না মেলায় কেরালা ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার হুনমকি দিয়েছে। যা 'দুর্ভাগ্যজনক' বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন