আজকাল চাকরিতে অনিশ্চয়তা নেই, এরকমটা কমই দেখা যায়। দেশে সরকারি চাকরির তুলনায় বেসরকারি চাকরির বাজার বেশি প্রশস্ত। স্বভাবতই অধিকাংশ চাকরিই এখন স্থায়ী নয়। চুক্তি শেষ হয়ে গেলে চাকরি চলে যাচ্ছে, নতুন চাকরি খুঁজতে হন্যে হয়ে ঘুরতে হচ্ছে, এমনটা আকছার ঘটছে। আবার মোটা মাইনের চাকরিই ক্ষেত্রে তেমনটা হচ্ছে না, বা হবে না, তাও হলফ করে বলা যাচ্ছে না আজকাল। জীবন যাপনের মান যদি উঁচু হয়, সেক্ষেত্রেও হঠাৎ চাকরি খোয়া গেলে সমস্যা কিছুমাত্র কমে না।
দেশের অর্থনীতিতে মন্দা আসতে পারে যখন তখন। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি চলে এলে যুঝবেন কী ভাবে?
মাসের শুরুতে বাজেট করুন
সারা মাসের কী খরচ, তার একটা বাজেট তৈরি করে নিন। খরচ দু’ধরনের হয়। কিছু অত্যাবশ্যক। যেমন বাড়িতে যাই হয়ে যাক না কেন, চাল-ডাল-সব্জির বাজার প্রতি মাসেই কম বেশি একই থাকে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে মাসে মাসে টাকা বা কাউকে মাইনে দেওয়ার থাকলে তাও দিতেই হবে। এগুলি কোনও মাসেই কমবে না। এছাড়া কিছু খরচ থাকে, অতিরিক্ত। এগুলো চাইলেই কোনও মাসে কমানো যায়। এই যেমন ধরুন, হলে গিয়ে সিনেমা দেখা, রেস্তরাঁয় খাওয়া। কিমবা লম্বা ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান। এগুলি পরিস্থিতি সাপেক্ষ পরিকল্পনা করুন। যে মাসে পয়সার টানাটানি, সে মাসে এসব আর নাই বা করলেন।
আরও পড়ুন, আপনার কি সারাক্ষণ কিনতে ইচ্ছে করে? কীভাবে সামলাবেন নিজেকে?
ডিজিটাল খরচ কমান
আর্থিক লেনদেনে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। সরকার নিজেও চাইছে নগদে লেনদেন কমাতে। দৌড়ঝাঁপ কমিয়ে বাড়িতে বসে বিভিন্ন খরচ মেটানো বেশ সুবিধাজনক তো বটেই! কিন্তু অন্য সমস্যা রয়েছে। প্রযুক্তি নির্ভর লেনদেন সহজ হয়ে যাওয়ায় বেহিসেবি খরচের প্রবণতাও তৈরি হচ্ছে মানুষের মধ্যে। অতএব এ ব্যাপের সতর্ক থাকতে হবে। ক্রেডিট কার্ড থাকলে তার দেনাও ঠিক সময়ে মিটিয়ে দিন। কোনও বিলের ক্ষেত্রেই যেন বাড়তি সুদ কিংবা দেরির জন্য জরিমানা গুনতে না-হয়।
অহেতুক ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়া বন্ধ করুন
কেরিয়ারের শুরুতে একটা সমস্যা অনেকেরই হয়। হাতে এক সঙ্গে অনেক বাড়তি টাকা এসে যাওয়ায় অনেকেই লাগামছাড়া খরচ করে ফেলেন। আর ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে বাড়ি-গাড়ি কেনা তো আছেই। সেটাও আবার ঋণ নিয়ে। শুধু মাত্র সম্পদ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে। কেউ কেউ আবার দামি গ্যাজেট কেনার জন্য মোটা টাকা ইএমআই চোকাতে থাকেন মাসে মাসে। এবার সমস্যা হল, এর মাঝে যদি কারোর চাকরি অনিশ্চিত হয়ে পড়ে, সেক্ষেত্রে চিন্তা বাড়ে। তাই ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে ভালো করে ভেবে দেখুন, আপনার চাকরি কতোটা নিশ্চিত?
লগ্নি করুন অল্প বয়সেই
কেরিয়ারের শুরুর সময় বাড়তি দায়দায়িত্ব কম থাকায়, এই সময় যে টাকা আয় করছেন, তা থেকে বেশ কিছু লগ্নি করতে পারেন। তবে পরিবারের একাধিক সদস্য যদি বেতনভোগী হন, তবে নিশ্চিন্তে লগ্নির ঝুঁকি নেওয়া যায়। বাড়িতে একা রোজগেরে হলে সমস্যা থাকে। তবে অল্প বয়সে লগ্নি করার সুবিধে হল, লগ্নির মেয়াদ যত বেশি হবে তহবিল বেড়ে ওঠার সম্ভাবনাও ততই বাড়বে