বিমা শিল্পে ৭৪% প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ বা এফডিআই এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। রাজ্য সভায় ধ্বনি ভোটে পাশ হল সংশোধিত বিমা বিল ২০২১। যাতে এফডিআইয়ের সর্বোচ্চ সীমা ৪৯% থেকে বাড়িয়ে ৭৪% করা হয়েছে। এই বিল আইনে পরিণত হলে বিমা শিল্পের বৃহৎ সংস্কারে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা ঘরোয়া সম্পদকে ব্যবহার করতে পারবে। এদিন রাজ্য সভায় জানান অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ।
অংশীদারদের সঙ্গে আইআরডিএ-র দীর্ঘ আলোচনার পর এই বিলের খসড়া তৈরি করা হয়েছিল। এই বিলে উল্লেখ বিমা সংস্থায় বিদেশী বিনিয়োগের স্বার্থে বেশিরভাগ ডিরেক্টরকে ভারতে বসবাস করতে হবে।
এদিকে, পথকর (Toll Tax) আদায়ে টোল বুথ প্রথা তুলে দেবে ভারত সরকার। আগামি এক বছরের মধ্যেই সম্পূর্ণ জিপিএস পথকর আদায়ের দিকে ঝুঁকবে কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার সংসদকে এই পরিকল্পনার কথা জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতীন গডকরি। এদিন লোকসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নিয়ে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী বলেন, ‘আমি সংসদকে আশ্বস্ত করতে চাই আগামি এক বছরের মধ্যে দেশে কোনও টোল বুথ থাকবে না। গাড়ির জিপিএস ইমেজিং পদ্ধতিতে আদায় হবে পথকর।‘ জানা গিয়েছে, এদিন বেলার দিকে অর্থমন্ত্রী সংশোধিত বিমা বিল ২০২১ রাজ্য সভায় পেশ করবেন। এদিন সকালের দিকে দুটি বিল নিয়ে লোকসভায় চর্চা হয়েছে।
এদিকে, বুধবার ভোটমুখী পাঁচ রাজ্যকে মাথায় রেখে জাতীয় নাগরিক পঞ্জী বা এনআরসি (NRC) নিয়ে পিছু হটল মোদী সরকার। দেশব্যাপী এনআরসি লাগুর এখনও কোনও বড় সিদ্ধান্ত হয়নি। বুধবার সংসদকে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। রাজ্য সভায় ওঠা এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত দেশব্যাপী জাতীয় নাগরিক পঞ্জী তৈরি কোনও সিদ্ধান্ত মন্ত্রক নেয়নি।‘ ২০১৯ সালে অসম জুড়ে জাতীয় নাগরিক পঞ্জী তৈরি করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে এই কাজ করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ৩১ অগাস্ট প্রকাশিত হয়েছিল এনআরসি তালিকা। তালিকা থেকে প্রায় প্রায় ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গিয়েছিল। মোট আবেদন জমা পড়েছিল ৩,৩০, ২৭, ৬৬১ জনের। এই পদ্ধতির জেরে অসমব্যাপী গণপ্রতিবাদ তৈরি হয়েছিল। যার ঝড় আছড়ে পড়েছিল গোটা দেশে।
এনআরসি মানে, দেশের কতজন নাগরিক অসমে বসবাস করে তার তালিকা। যদিও সেই তালিকা বের হওয়ার পর থেকে অসমে একটা বিজেপি-বিরোধী হাওয়া তৈরি হয়েছে। তাই মাস ঘুরলেই সেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। ফলে এনআরসি বা সিএএ-র আঁচ যাতে ভোটবাক্সে না পড়ে। তাই এই বড় ঘোষণা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সংসদে করল। এমনটাই বিরোধী শিবিরের দাবি।
পাশাপাশি মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আশ্বাস দিলেন যে, সারা দেশের সমস্ত ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ হবে না।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন আরও বলেছেন যে, কর্মীদের স্বার্থ রক্ষা করেই কাজ করা হবে। ২০২১ এর বাজেটেও বিলগ্নিকরণের উপরে বিশেষ জোর দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। ১ ফেব্রুয়ারি সংসদে পেশ করা বাজেট ভাষণে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের কথাও ঘোষণা করেছিলেন তিনি।
যদিও এদিন নির্মলা সীতারমন বলেন যে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার নির্দেশাবলী অনুযায়ী নতুন বেসরকারী ব্যাঙ্কগুলোকে সরকার-সম্পর্কিত ব্যবসা পরিচালনার জন্য কাজ করার অনুমতি দেওয়া হবে। কিছু বেসরকারী ব্যাঙ্ক ইতিমধ্যে তা করতে শুরু করেছে, সমস্ত সরকারী ব্যাংকগুলো এই কাজ করছে, সমস্ত বেসরকারী ব্যাঙ্কগুলো যাতে সেই সুযোগ পায় সেদিকে নজর রাখতে হবে।