হেরোইন কাণ্ডের জের, বড়সড় পদক্ষেপ আদানি পোর্টের, মাথায় হাত ব্যবসায়ীদের

৩০০০ কেজি হেরোইন বাজেয়াপ্ত হওয়ার মাস খানকে পরে বড়সড় সিদ্ধান্ত নিল গুজরাটের মুন্দ্রা আদানি বন্দর।

Adani Ports and Special Economic Zone (APSEZ)
আদানি বন্দর। ফাইল ছবি

৩০০০ কেজি হেরোইন বাজেয়াপ্ত হওয়ার মাস খানকে পরে বড়সড় সিদ্ধান্ত নিল গুজরাটের মুন্দ্রা আদানি বন্দর। হেরোইন উদ্ধারের ঘটনায় তোলপাড় হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। কচ্ছের এই বন্দরে দেশের ইতিহাসে এত বিশাল পরিমাণে মাদক উদ্ধার হওয়ার পর আদানি পোর্ট এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (APSEZ) জানিয়েছে, পরের মাস থেকে ইরান, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে আর কার্গো কন্টেনার খালাস করতে দেওয়া হবে না।

APSEZ কর্তৃপক্ষ সোমবার একটি বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে, আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে ইরান, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে আর কোনও পণ্যবোঝাই কন্টেনার নামতে দেবে না। এমনকী থার্ড পার্টি কার্গো হলেও তা বন্দরে খালাসের অনুমতি দেওয়া হবে না আগামী নোটিস জারি পর্যন্ত। সিইও সুব্রত ত্রিপাঠী এই নির্দেশিকা স্বাক্ষর করেছেন। সূত্র মারফত দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানতে পেরেছে, রফতানিকারীরা সরকারের কাছে আবেদন করবে এই বিষয়ে। ইরানে রফতানির খরচ নিয়েও সরকারের হস্তক্ষেপ চাইবেন তাঁরা।

ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গ্যানাইজেশনসের অধিকর্তা অজয় সহায় বলেছেন, এই সিদ্ধান্তের জেরে বহু এক্সপোর্টার অন্য বন্দরের মাধ্যমে মাল রফতানি করতে সমস্যায় পড়বেন। বাণিজ্যের জন্য এটা বড় ধাক্কা। জাহাজে পাঠানোর খরচ অনেক বেড়ে যাবে। কারণ অনেক উত্তর ভারতীয় রফতানিকারী মুন্দ্রা বন্দর ব্যবহার করেন। সহায়ের মতে, রাজকোট থেকে মুন্দ্রায় একটি ২০ ফুটের কন্টেনার নিয়ে যাওয়ার খরচ ১৩-১৫ হাজার টাকা। একই কন্টেনার রাজকোট থেকে জওহরলাল নেহেরু পোর্ট ট্রাস্টে (নভি মুম্বই) নিয়ে যাওয়ার খরচ ৬০ হাজার টাকা।

আদানি পোর্টে এই তিন দেশ থেকে কত কন্টেনার আসে তা নিয়ে কোনও স্পষ্ট পরিসংখ্যান দেয়নি APSEZ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বাণিজ্য মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, ইরান থেকে মুন্দ্রায় আমদানির বহর অনেক। দেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক বন্দর তথা কন্টেনার কার্গোর অন্যতম বৃহৎ হ্যান্ডলার এই বন্দরে ইরান থেকে মূলত ফল, পেস্তা, খেজুর, আলমন্ড, পশম এবং জৈব-অজৈব রাসায়নিক আসে। ২০২০ অর্থ বর্ষে ইরান থেক ১৩৯৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য এসেছে ইরান থেকে।

আরও পড়ুন ৬৮ বছর পর ঘরে ফিরল ‘মহারাজা’, Air India’র মালিকানা পেল Tata Sons

আফগানিস্তান থেকে কিসমিস, খেজুর, বিভিন্ন ফলের বীজ, ফল আসে ভারতের বন্দরে। ২০২০ অর্থ বর্ষে আফগানিস্তান থেকে ভারতে ৪৩৫ মিলিয় মার্কিন ডলারের পণ্য এসেছে। পাকিস্তান থেকে মাত্র ১৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য ভারতে এসেছে। ওই দেশ থেকে মূলত সৈন্ধব লবন এবং খেজুর আমদানি হয়। আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের তুলনায় ইরান ভারতের কাছে বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দেশ। ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, APSEZ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত বাণিজ্যে বড় ধাক্কা খাবে ভারত।

উল্লেখ্য, গত ১৬ সেপ্টেম্বর ডিআরআই মুন্দ্রা বন্দরে দুটি কন্টেনার বাজেয়াপ্ত করে। তাতে ছিল ২,৯৮৮ কেজি হেরোইন। যার বাজারমূল্য প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। কনসাইনমেন্ট ছিল আফনাগিস্তানের একটি সংস্থার নামে। সেটি ভায়া ইরানের বন্দর আব্বাস পোর্ট মুন্দ্রায় এসে পৌঁছয়। কন্টেনারটি যাচ্ছিল অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়ওয়াড়ার একটি ট্রেডিং কোম্পানির কাছে। গত ৬ অক্টোবর এই ঘটনার তদন্তভার ডিআরআই থেকে চলে যায় এনআইএ-র হাতে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Business news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Mundra drug haul adani ports containerised cargo iran pakistan or afghanistan

Next Story
৬৮ বছর পর ঘরে ফিরল ‘মহারাজা’, Air India’র মালিকানা পেল Tata Sons
Exit mobile version