কর্পোরেট কর না কমিয়ে আগামী বাজেটে ভারত সরকারের এমন কিছু পদক্ষেপ করা উচিত, যাতে গরিব মানুষের হাতে টাকা আসে। শুক্রবার এমনটাই জানালেন ২০১৯ এর নোবেলজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। কৃষিঋণ মুকুব করে সমস্যার সমাধান হবে না, মনে করছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এমআইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। তিনি বলেন, শুধু যারা ঋণ নিয়েছে তাদের ওপর জোর না দিয়ে বড় সংখ্যক মানুষের কথাই ভাবা দরকার কেন্দ্রের।
কর্পোরেটের হাতে যথেষ্ট পয়সা রয়েছে। কিন্তু চাহিদার অভাবে তারা বিনিয়োগ করতে পারছে না, তাই চাহিদা যাতে বাড়ে, সেরকম পরিস্থিতি গড়ে তোলাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, মনে করছেন অধ্যাপক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন, পরিকাঠামো খাতে ১০২ লক্ষ কোটি বিনিয়োগের ঘোষণা কেন্দ্রের
২০২০-২১ এর বাজেটের থেকে কী প্রত্যাশা নোবেলজয়ীর? প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "আমি প্রথমেই বলব এই মুহূর্তে কর্পোরেট কর আর কমানোর দরকার নেই। কর্পোরেট সেক্টরের অনেকের সঙ্গেই কথা বলে আপনারা বুঝতে পারবেন, বিনিয়োগের বাজারটাই নেই। চাহিদা বাড়াতে গেলে তো মানুষের হাতে টাকার যোগান দিতে হবে"।
অধ্যাপক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমাদের সমীক্ষা বলছে, মানুষের হাতে টাকা থাকলে মানুষ খরচা করবেই। কোটিপতিদের হাতে পয়সা দিয়ে দেখার তো দরকার নেই"।
কৃষিঋণ মুকুব নীতির ব্যর্থতা নিয়ে অর্থনীতিবিদের মত, "আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পরা মানুষদের সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের দেশের নীতি খুব দুর্বল। শুধু যারা কৃষিঋণ নিয়েছে, তাঁদের কথা না ভেবে আরও বেশি মানুষের কথা ভাবতে হবে। এমন কিছু করতে হবে, যাতে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ ক্ষতিপূরণ পায়"।
আরও পড়ুন, ‘মোদী সরকারের নতুন বছরের উপহার’, দাম বাড়ল ভর্তুকিহীন রান্নার গ্যাসের
সাম্প্রতিক কালে দেশজুড়ে এনআরসি এবং সিএএ বিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে অভিজিৎ বাবু বলেন, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা যদি মুষ্টিমেয় মানুষের হাতে থাকে, তবে ক্ষমতার অপব্যবহার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
"আমি নিজেকে বিশেষজ্ঞ মনে করি না। তবে আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি কোনও একজন মানুষের ওপর যদি প্রচুর ক্ষমতা থাকে, আপনি কোন তালিকায় থাকবেন, সেই সিদ্ধান্ত নেবেন ওই ক্ষমতাবান মানুষটি। শুধু ধর্ম নয়, সেক্ষেত্রে আরও নানা কিছু নিয়ে সমস্যা হতে পারে। আজ যদি আমি নিজে সীমান্তবর্তী কোনও জেলায় থাকতাম, সারাদিন এই ভাবনায় ভয়ে ভয়ে থাকতাম। যে কেউ এসে আমায় বলে যাবে, তুমি সত্যি এদেশের নাগরিক কী না, অথবা সন্দেহজনক কী না, সেই সিদ্ধান্ত আমি নেব। এই পরিস্থিতির জন্যই কিন্তু সরকারের চ্যালেঞ্জটা আরও বড়।