সাম্প্রতিকতম কেন্দ্রীয় বাজেট প্রস্তাবে মধ্যবিত্তের জন্য নতুন আয়কর বিকল্পের কথা ঘশনা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। নতুন বিকল্পে বলা হয়েছে কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। বাজেট পেশের পরপরই বিরোধী দল এবং আমজনতার একটা বড় অংশের মধ্যেই আয়কর নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা ধন্দ। সেই প্রসঙ্গেই নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমার বুধবার বলেছেন, "মধ্যবিত্ত নিজেদের জন্য লাভজনক আয়কর বিকল্প বেছে নেওয়ার মতো বিচক্ষণ"।
সদ্য পেশ হওয়া বাজেট প্রস্তাবের স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, "এখন মধ্যবিত্ত নিজেই নিজের জন্য উপযোগী আয়কর বেছে নিতে পারে। মধ্যবিত্তের সেই বিচক্ষণতা মাথায় রেখেই বাজেট প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে"।
আয়করে ছাড় বিলোপের কথা ভাবছে সরকার: সীতারামন
রাজীব কুমার পিটিআইকে বলেন, "মধ্যবিত্তের রোজগার বাড়ানো হয়েছে। এবার তাঁকে সিদ্ধান্ত নিতে দিতে হবে সে কত সঞ্চয় করতে চায়"।
অর্থনীতি বিশারদ মহলে অবশ্য অধিকাংশের মত, দু'ধরনের আয়কর ব্যবস্থা আদতে জটিলতা বাড়িয়েছে। সেই প্রসঙ্গে নীতি আয়োগ চেয়ারম্যান রাজীব কুমার বলেন, "মানুষ নিজের পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নিক কোন আয়কর ব্যবস্থার আওতায় সে পড়তে চায়"।
দ্বিতীয় মোদী সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেটে আয়কর ছাড়ের খবর শুনে স্বস্তি পেয়েছে দেশের মধ্যবিত্ত বেতনভোগী শ্রেণি। কিন্তু শনিবারের এই ঘোষণা কিন্তু শর্তসাপেক্ষ। অর্থাৎ নির্দিষ্ট কিছু শর্ত মানলে তবেই এই নতুন কর স্ল্যাবের আওতায় পড়বেন বেতনভোগীরা।
আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ল বাজেটে, সবচেয়ে বেশি স্বস্তির খবর এটাই। ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থাৎ বার্ষিক ৫ লক্ষ টাকার নীচে যাঁরা আয় করেন এবার তাঁদের আর আয়কর দিতে হবে না। ৫ লক্ষ থেকে সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা আয়ে- ১০ শতাংশ কর লাগু হবে। সাড়ে ৭ থেকে ১০ লক্ষ টাকা আয়ে আয়কর ১৫ শতাংশ হবে। ১০ থেকে সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা আয়- ২০ শতাংশ কর দিতে হবে। সাড়ে ১২ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা আয় চাপবে ২৫ শতাংশ কর। এ তো গেল নতুন আয়কর বিন্যাসের ঘোষণা। তবে এবার জানা যাক, এই নয়া কর কাঠামোর আওতায় আসতে গেলে যেসব শর্ত মানতে হবে সেগুলি।
আরও পড়ুন, ধুকতে থাকা অর্থনৈতিক আবহে আশা-নিরাশার বাজেট
চলতি নিয়মে এইচআরএ (বেতনের অন্তর্গত হাউজ রেন্ট অ্যালাওয়েন্স), গৃহ ঋণের সুদ, এলটিএ (বেতনের লিভ ট্র্যাভেল অ্যালাওয়েন্স), স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়াম বাবদ ব্যায়ের মতো বিভিন্ন উপাদান মোট আয় থেকে বাদ দিয়ে বার্ষিক করযোগ্য আয়ের হিসাব কষা হয়। কিন্তু, নতুন ব্যবস্থায় কর ছাড়ের সুবিধা নিতে চাইলে এইসব বিভিন্ন উপাদান বাদ দেওয়া যাবে না। আর কেউ যদি চলতি স্ল্যাবে আয়কর দিতে চান, সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন উপাদান বাদ দেওয়ার যে ব্যবস্থা রয়েছে তা জারি থাকবে। নতুন কর স্ল্যাবের আওতায় আসতে গেলে অবশ্য উল্লেখ্য হিসেব সমেত আয় ধরা হবে।