রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার গভর্নর শক্তিকান্ত দাস বুধবার ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে একটি বড় বিবৃতি জারি করেছেন। আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস বলেছেন যে ক্রিপ্টোকারেন্সির কারণে বিশ্বে পরবর্তী আর্থিক সংকট আসবে। শুধু তাই নয়, তিনি আরও বলেন যে আমি এখনও মনে করি ক্রিপ্টোকারেন্সি নিষিদ্ধ করা উচিত।
বিএফএসআই সামিটের প্রোগ্রামে, আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে এই বিবৃতি দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তিনি দেশীয় ডিজিটাল মুদ্রা সম্পর্কে বিবৃতি দিয়েছেন এবং বলেছেন যে কীভাবে এটি যে কোনও ব্যক্তিগত ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে আলাদা। আরবিআই গভর্নর বিশ্বাস করেন যে ক্রিপ্টো যদি বৃদ্ধি পায়, তবে এর ফলে পরবর্তী আর্থিক সংকট সৃষ্টি হতে পারে। ক্রিপ্টোকারেন্সি যেকোনো দেশের অর্থনীতিকে আর্থিক সঙ্কটের দিকে ঠেলে দিতে পারে। কারণ, এর কোন স্থিতিশীলতা নেই। এই কারেন্সির কুপ্রভাব সবথেকে বেশি পরে ছোট বিনিয়োগকারীদের মধ্যে।
আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস এদিন তাঁর এক ভাষণে বলেন, ‘প্রাইভেট ক্রিপ্টোকারেন্সি আর্থিক সংকটের দিকে দেশকে নিয়ে যেতে পারে। তিনি ক্রিপ্টোকে বাজি ধরার মাধ্যম হিসেবেও অভিহিত করেছেন। আরবিআই গভর্নর গত কয়েক মাস ধরে ক্রমাগত ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কে সতর্ক করে আসছেন।
বিএফএসআই সামিটের ভাষণে, আরবিআই গভর্নর বলেছিলেন যে ক্রিপ্টোকারেন্সি আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। তিনি আরও বলেন, যে ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্যায়নের কোনও ভিত্তি নেই এবং এটি সম্পূর্ণরূপে অনুমানের উপর ভিত্তি করে। RBI বারবার ক্রিপ্টোকারেন্সির বিরুদ্ধে তার মতামত জানিয়েছে। আরবিআই গভর্নর ইতিমধ্যেই বলেছেন যে এটি দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক এবং আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করতে পারে। দাস বলেন, আমাদের অবশ্যই আসন্ন ঝুঁকির বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। ক্রিপ্টোকারেন্সি একটি স্পষ্ট বিপদ। বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে এখানে যে কোনো কিছুর মূল্য পাওয়া যায়। তবে পুরোটাই অনিশ্চিত।'
এটা ধারণা করা হয়েছিল সরকার ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ন্ত্রণের জন্য সংসদে একটি বিল আনবে। কিন্তু সরকার এই বিল আনা থেকে বিরত থেকেছে। সম্প্রতি সংসদে এ নিয়ে সরকারের কাছে প্রশ্নও করা হয়। যার জবাবে সরকার বলেছে যে ক্রিপ্টোকারেন্সি একটি বৈশ্বিক সমস্যা। আর শুধু ভারতে নিয়ন্ত্রণ করলে চলবে না। গোটা বিশ্বকে একসঙ্গে এটি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিতে হবে।
২০২২৩ আর্থিক বছরের বাজেট পেশের সময় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে লাভের উপর ৩০ শতাংশ কর আরোপ করেছিলেন, যা ১ এপ্রিল, ২০২২ থেকে কার্যকর হয়েছে। এর পরে, ভার্চুয়াল ডিজিটাল সম্পদ (ভিডিএ) অর্থাৎ ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং নন-ফাঞ্জিবল টোকেন (এনএফটি) স্থানান্তরের উপর করা অর্থের উপর ১% টিডিএস (ট্যাক্স ডিডাক্টেড অ্যাট সোর্স) আরোপের বিধান কার্যকর করা হয়েছে। ১০হাজার টাকার উপরে লেনদেনে ১ শতাংশ TDS আরোপ করা হয়।
আরও পড়ুন: < ‘প্রটোকল মানতে না পারলে বন্ধ করুন ভারত জোড়ো যাত্রা’, রাহুলকে চিঠি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর >
ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রান্সফার করার সময় যদি ক্রেতার PAN না থাকে, তাহলে ২০ শতাংশ হারে ট্যাক্স ধার্য করার নিয়ম জারি করা হয়েছে। আর যদি ক্রেতা আয়কর রিটার্ন দাখিল না করে থাকে তাহলে ৫% হারে TDS জমা দিতে হবে। ১ জুলাই, সমস্ত ক্রিপ্টো লেনদেনে TDS দিতে হবে বলে এক বিবৃতি জারি করে সরকার। আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস বলেছেন যে ক্রিপ্টোকারেন্সির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা উচিত। 'বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড' আয়োজিত বিএফএসআই ইনসাইট সামিট ২০২২-এ ভাষণকালীন সময়ে কথা বলেন তিনি। দাস আরও বলেন, ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলির কোনও অন্তর্নিহিত মূল্য নেই এটি আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য ঝুঁকি তৈরি করে।