টোয়েন্টি টোয়েন্টির বাজেটে আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোর কথা ঘোষণা হতেই মধ্যবিত্ত চাকুরিজীবীদের মুখে হাসির রেখা ফুটে উঠেছে। কিন্তু পরক্ষণেই যেন সেই মধ্যবিত্তের কপালেই আবার চিন্তার ভাঁজ দেখা গেল। শর্তসাপেক্ষে কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোর কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। আর এতেই খানিকটা চিন্তায় পড়েছেন করদাতারা। বাজেট শেষে এদিন সাংবাদিক বৈঠকে সীতারামন বলেন, আগামীতে সার্বিকভাবে আয়করের ক্ষেত্রে ছাড় তুলে নেওয়ার কথা ভাবছে সরকার।
এবারের বাজেটে কর ছাড়ের ঊর্ধসীমা বাড়ানো হয়েছে। বার্ষিক ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়কর নয়। যাঁদের বার্ষিক আয় ৫-৭.৫ লক্ষ টাকা, তাঁদের কর কমে ১০%। ৭.৫-১০ লক্ষ টাকা আয়ে, কর কমে ১৫ শতাংশ। ১০-১২.৫ লক্ষ টাকা আয়ে কর কমে ২০ শতাংশ। ১২.৫-১৫ লক্ষ টাকা আয়ে কর কমে ২৫ শতাংশ। বার্ষিক ১৫ লক্ষ টাকার বেশি আয়ে কর ৩০ শতাংশ।
আরও পড়ুন: আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ল, কিন্তু শর্তগুলো জানেন?
আগের আয়কর হার কী ছিল?
বার্ষিক আয় আড়াই লক্ষ টাকা পর্যন্ত হলে আয়করে ১০০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছিল কেন্দ্র। আড়াই থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক আয়ে আয়কর দিতে হয়েছে ৫ শতাংশ। ৫ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক আয়ে করের পরিমাণ একলাফে বেড়ে হয়েছিল ২০ শতাংশ। ১০ লক্ষ টাকার ওপর আয়ে করের পরিমাণ ছিল ৩০ শতাংশ।
চলতি নিয়মে এইচআরএ (বেতনের অন্তর্গত হাউজ রেন্ট অ্যালাওয়েন্স), গৃহ ঋণের সুদ, এলটিএ (বেতনের লিভ ট্র্যাভেল অ্যালাওয়েন্স), স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়াম বাবদ ব্যায়ের মতো বিভিন্ন উপাদান মোট আয় থেকে বাদ দিয়ে বার্ষিক করযোগ্য আয়ের হিসাব কষা হয়। কিন্তু, নতুন ব্যবস্থায় কর ছাড়ের সুবিধা নিতে চাইলে এইসব বিভিন্ন উপাদান বাদ দেওয়া যাবে না। আর কেউ যদি চলতি স্ল্যাবে আয়কর দিতে চান, সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন উপাদান বাদ দেওয়ার যে ব্যবস্থা রয়েছে তা জারি থাকবে। নতুন কর স্ল্যাবের আওতায় আসতে গেলে অবশ্য উল্লেখ্য হিসেব সমেত আয় ধরা হবে।
নতুন কর স্ল্যাবের সুবিধে নেওয়ার জন্য কী কী করতে হবে:
আয়কর আইনের ১০ নম্বর অনুচ্ছেদের ৫ নম্বর ধারায় উল্লেখ থাকা লিভ ট্র্যাভেল ছাড় দাবি করা চলবে না।
আয়কর আইনের ১০ নম্বর অনুচ্ছেদের ১৩ এ ধারায় উল্লেখ থাকা হাউজ রেন্ট অ্যালাওয়েন্স দাবি করা যাবে না।
স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন, বিনোদন এবং আয়কর আইনের ১৬ নম্বর অনুচ্ছেদে উল্লেখ থাকা প্রফেশনাল ট্যাক্স বাবদ ছাড় দাবি করা যাবে না।
আয়কর আইনের ২৪ নম্বর অনুচ্ছেদে উল্লেখিত সম্পত্তি থেকে সুদ আদায় করা চলবে না।
আয়কর আইনের ৩৫ এ ডি অনুচ্ছেদ এবং ৩৫ সিসিসি এবং ৬-এ অধ্যায়ের আওতায় পড়া সমস্ত রকম (যেমন অনুচ্ছেদ ৮০সি, ৮০সিসিসি, ৮০সিসিডি, ৮০ডি, ৮০ডিডি, ৮০ডিডিবি, ৮০ই, ৮০ইই, ৮০ইইএ, ৮০ইইবি, ৮০জি, ৮০জিজি, ৮০জিজিএ, ৮০জিজিসি ইত্যাদি) কর ছাড়ের দাবি মান্যতা পাবে না।
আয়কর আইনের উপঅনুচ্ছেদ দুইয়ের ৮০ সিসিডি (পেনশন স্কিম) এবং ৮০জেজেএএ (নয়া নিয়োগের ক্ষেত্রে)-তে উল্লিখিত যাবতীয় সুবিধা গ্রহণ করা যাবে।
Read the full story in English