Center Asset Monetisation Scheme: কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক সম্প্রতি ৬ লক্ষ কোটির নগদীকরণ প্রকল্প বা ন্যাশনাল মনেটাইজেশন পাইপলাইন হাতে নিয়েছে। কেন্দ্রের কোষাগার ভরতে সরকারি সম্পত্তি সাময়িকভাবে বেসরকারি হাতে দিয়ে অর্থ উপার্জনের এই নীতি এখন ঘরে-বাইরে সমালোচিত। মঙ্গলবার রাহুল গান্ধি কেন্দ্রীয় এই নীতির সমালোচনায় বলেন, ’৭০ বছর দেশ যা গড়েছে, তাকে বেচে দিচ্ছে মোদী সরকার।‘ এবার রাহুলকে পাল্টা আক্রমণের পথে হাঁটলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। নির্মলা সীতারমণ মুম্বাইয়ে এক সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেস সাংসদকে খোঁচা দিয়ে বলেন, ‘যদি রাহুল গান্ধি সত্যিই এই উদ্যোগের পিছনের উদ্দেশ্য বুঝতেন।‘ তাঁর অভিযোগ, ‘ইউপিএ সরকারও দেশের সম্পদ, খনি, জমি বিক্রি করে নগদ কোষাগারে তুলেছে। ঘুষও পেয়েছে।‘
২০০৮ সালের প্রথম ইউপিএ সরকারের এক উদ্যোগের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সীতারমণ বলেন, ‘পুনে-বম্বে হাইওয়ের মাধ্যমে ৮ হাজার কোটি টাকা কোষাগারে তুলেছিল কংগ্রেস। ২০০৮ সালে নিউ দিল্লি রেলস্টেশনকে লিজে দেওয়ার প্রস্তাব পেশ করেছিল ইউপিএ সরকার।‘ সেই সময় তাহলে সেই প্রস্তাবের খসড়া ছিঁড়ে ফেলেননি কেন রাহুল গান্ধি? এদিন এভাবেও সরব হয়েছিলেন সীতারমণ। এদিকে, কম ব্যবহৃত সরকারি সম্পত্তিকে কাজে লাগিয়ে বিনিয়োগ টানার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। যা হল ৬ লক্ষ কোটি টাকার ‘ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইন’। সরকারি সম্পত্তি বিক্রি নয়, চার বছরের মেয়াদে কম ব্যবহার হওয়া সংস্থাগুলোকে বেসরকারি হাতে দিয়ে আর্থিক লাভ ঘরে তোলার চেষ্টাই সরকারি সম্পত্তির নগদীকরণর মূল উদ্দেশ্য বলে দাবি করেছে কেন্দ্র। যদিও এর বিরুদ্ধে সরব বিরোধী কংগ্রেস ও তৃণমূল। বিকল্প পদ্ধতিতে কেন্দ্রের এই আর্থিক লাভের চেষ্টা আদতে সরকারি সম্পত্তি বিক্রি বলে অভিযোগ তাদের।
তৃণমূলের তরফে ‘ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইন’-এর বিরুদ্ধে এ দিন মুখ খুলেছেন সাসংদ সুখেন্দুশেখর রায়। তাঁর অভিযোগ কেন্দ্রীয় এই সিদ্ধান্ত সংসদ বা সংদীয় কোনও কমিটিতে আলোচনা হয়নি। এই সিদ্ধান্ত নীতি আয়োগের দ্বারা গৃহীত যা সাংবিধানিক সংস্থা নয়। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপির নির্বাচনী ইস্তেহারেও এনিয়ে কিছু বলা হয়নি। ফলে ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইনে মানুষের সমর্থন রয়েছে বলে দাবি করা যাবে না। সুখেন্দুশেখর রায়ের কথায়, “আর্থিক সংস্কারের নামে বিজেপি সরকার আসলে বেসরকারি কতিপয় পুঁজিপতির হাতে দেশের সম্পত্তি তুলে দিচ্ছে। পিপিপি মডেলের বদলে সরকারি সম্পত্তি চিরতরে লিজ দেওয়া হচ্ছে। যা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।”
কেন্দ্রের ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইনের সমালোচনায় সরব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদিকা প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও। অর্থ সংগ্রহের এই নীতিকে “আইনগত ও সংগঠিত লুঠ” বলে দাবি করেছেন কংগ্রেস। হাত শিবিরের নেতা জয়রাম রমেশের দাবি, ”কোটি কোটি মানুষের বহু বছরের পরিশ্রমে দেশের যে সম্পত্তি তৈরি হয়েছে তার মূল্য অপরিসীম। যা এই কেন্দ্র বিজেপির কয়েকজন ‘বন্ধু’ শিল্পপতির কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে।”
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন