Advertisment

ফের নোটবাতিল, বাজার থেকে ২,০০০ টাকার নোট তুলে নিচ্ছে RBI

এবছর, ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৈধ থাকবে ২,০০০ টাকার নোট।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Bank Notes

কয়েক বছর আগে (২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর) রাতের বেলায় পুরোনো ৫০০ আর ১,০০০ টাকার নোট বাতিলের ঘোষণা করে গোটা দেশকে পরদিন থেকে ব্যাংকের সামনে লাইনে দাঁড় করিয়েছিল নরেন্দ্র মোদীর কেন্দ্রীয় সরকার। যার জেরে সাধারণ মানুষ ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হয়। সাধারণ মানুষ থেকে ব্যবসায়ীরা আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত হয়েছিলেন। এমনকী, নোট বাতিলের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ এবং বয়স্কদের মৃত্যুর অভিযোগও উঠেছিল।

Advertisment

বিপুল কালো টাকা উদ্ধার হয়নি
কিন্তু, যে কারণে অর্থাৎ কালো টাকা উদ্ধারের নামে সেই নোটবাতিলের সিদ্ধান্ত, তাতে কাজের কাজ তেমন কিছুই হয়নি। অথবা, বলা যায় যে বিপুল পরিমাণ কালো টাকা উদ্ধার হয়নি। কারণ, রিজার্ভ ব্যাংক পরে জানিয়ে দেয়, যে পরিমাণ নোট বাজারে ছাড়া হয়েছিল, প্রায় সেই পরিমাণ নোটই ব্যাংক থেকে বদলানো হয়েছে বা ব্যাংকের কাছে ফেরত এসেছে। বিপুল পরিমাণ কালো টাকা উদ্ধারের কোনও প্রমাণ মেলেনি।

যা ঘোষণা হয়েছে
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রায় একবছর আগে আবারও ফিরল দিনের পর দিন লাইনে দাঁড়িয়ে নোট বাতিলের দুঃসহ সেইসব স্মৃতি। আর, তা ফিরিয়ে আনল মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকারই। সামনে ভোট থাকায় এবার অবশ্য প্রধানমন্ত্রী নিজে নোটবাতিলের ঘোষণা করেননি। বদলে রিজার্ভ ব্যাংক জানিয়েছে যে, ২,০০০ টাকার নোট বাতিল করা হবে। এই ২,০০০ টাকার নোট মোদী সরকারের জমানাতেই রিজার্ভ ব্যাংক বাজারে ছেড়েছিল। এবার সেই রিজার্ভ ব্যাংকই জানিয়েছে, ২৩ মে থেকে বদলানো যাবে। আর, ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৈধ থাকবে ২,০০০ টাকার নোট। বাতিল ২,০০০ টাকার নোট একসঙ্গে কেবল ১০টি বদলানো যাবে বলেও জানিয়ে দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাংক। ২,০০০ টাকার নোট জমা দিয়ে গ্রাহকরা পরিবর্তে অন্য নোট ব্যাংক থেকে নিতে পারবেন।

কীভাবে বদলাবেন পুরনো নোট?
নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকে বা পোস্ট অফিসে পুরনো নোট বদলাতে হলে প্রথমে নির্দিষ্ট ফর্মে কিছু তথ্য জানাতে হয়। সঙ্গে, নিজের সচিত্র পরিচয়পত্রের ফটোকপি জমা দিতে হয়। সেই সচিত্র পরিচয়পত্রে উল্লেখ করে দিতে হয় যে তা পুরনো নোট বদলানোর জন্য জমা দিচ্ছেন। সঙ্গে সচিত্র পরিচয়পত্রে তারিখও উল্লেখ করে দিতে হবে। যাতে সেই সচিত্র পরিচয়পত্রের কোনও অপব্যবহার না-হয়। যেসব সচিত্র পরিচয়পত্র জমা দেওয়া যাবে, সেগুলো হল- আধার কার্ড, ভোটার আইডি, প্যান কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট, NREGA কার্ড অথবা, সরকার ইস্যু করেছে এমন কোনও সচিত্র কার্ড। যে ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট আছে, সেই ব্যাংকেই যাওয়া বাঞ্ছনীয়।

কী লাগবে?
নিজে না গিয়ে কোনও প্রতিনিধিকে ব্যাংকে পাঠালে, সেটাও লিখিতভাবে ব্যাংককে জানাতে হবে। সেই চিঠি গ্রাহকের প্রতিনিধি ব্যাংক বা পোস্ট অফিসে নিয়ে গিয়ে আধিকারিকদের দেখাবেন। সঙ্গে তাঁর পরিচয়পত্র দেখাবেন। তাহলেই পুরনো নোট বদলের প্রক্রিয়া শুরু হবে। আবার, গ্রাহক কোনও বন্ধু বা আত্মীয়ের অ্যাকাউন্টেও পুরনো নোট জমা করতে পারেন। তবে, সেক্ষেত্রে সেই বন্ধু বা আত্মীয়ের লিখিত অনুমতি প্রয়োজন। ব্যাংকের আধিকারিকদের সেই লিখিত অনুমতি দেখাতে হবে। সঙ্গে দেখাতে হবে যিনি পুরনো নোট জমা করতে গিয়েছেন, তার সচিত্র পরিচয়পত্র।

আরও পড়ুন- NCB কর্তার বিরুদ্ধে মামলা, খতিয়ে দেখা হচ্ছে SRK-ম্যানেজার পূজা দাদলানিরও বয়ান

কতটা প্রভাব পড়বে বাজারে?
রিজার্ভ ব্যাংকের হিসেব অনুযায়ী, বর্তমানে বাজারে ২১, ৪২০ লক্ষ কোটি ২০০০ টাকার নোট রয়েছে। ঠিক কী কারণে ২,০০০ টাকার নোট বাতিল করা হল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কারণ, এর আগে ২০১৬ সালের নভেম্বরে ২,০০০ টাকার নোট চালু করার সময় জানানো হয়েছিল, তাতে চিপ জাতীয় কিছু থাকার কথা। যাতে জাল নোটের বাড়বাড়ন্ত রোখা যায়। বাজারে যত ২,০০০ টাকার নোট আছে, তার ৮৯% শতাংশ নোটই ২০১৭-র মার্চের আগে ছাপা। সাধারণ মানুষ আর খুচরো ব্যবসায়ীরা আর্থিক অসুবিধার জন্য এই ২,০০০ টাকার নোট এতদিন সাধারণত এড়িয়েই গিয়েছেন।

fake note RBI bank
Advertisment