ধারাবাহিক পতনের পর অবশেষে টাকার দাম বাড়ল। টানা দুসপ্তাহ ধরে ঊর্ধ্বমুখী টাকার দাম। শুক্রবার সকালে বাজার খোলার পর পর ৫৩ পয়সা বাড়ল ভারতীয় টাকার দাম। মার্কিন ডলার পিছু টাকার দাম এখন ৭১ টাকা ৮৪ পয়সা। গত বুধবার ৬১ পয়সা বেড়েছিল টাকার দাম। ২০১৭ সালের মার্চ মাসের পর থেকে এক দিনে টাকার দাম এতটা বাড়ার ঘটনা এই প্রথম।
গত দু'মাস ধরে ক্রমশ পড়ছিল টাকার দাম। টাকার দামের ক্রমাগত পতনে চিন্তিত ছিলেন দেশের অর্থনীতিবিদরা। অধিকাংশের বিশ্লেষণ বলছিল, একদিকে যেমন মার্কিন ডলারের চাহিদা বাড়ছে, অন্যদিকে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়ছে আন্তর্জাতিক বাজারে। স্বভাবতই ভারতের তেল পরিশোধনকারী সংস্থাকে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে মার্কিন ডলারের বিনিময়েই কিনতে হচ্ছে তেল। টাকার দাম পড়ে যাওয়ার পেছনে ছিল এইসব কারণ।
আন্তর্জাতিক বাজারে তেল সরবরাহকারী দেশগুলির মধ্যে ইরান অন্যতম। অথচ সেই ইরানের তেল সরবরাহের ওপরেই নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেক্ষেত্রে তেলের মন্দা দেখা দিতে পারে, এই আশঙ্কা থেকে সাত তাড়াতাড়ি বেশি পরিমাণ অপরিশোধিত তেল কিনতে চাইছে বাকি দেশ। তাই ক্রমশ চাহিদা বাড়ায় দাম বাড়ছিল তেলেরও। স্বাভাবিকভাবেই মার্কিন ডলারের তুলনায় পড়ছিল ভারতীয় টাকার দাম।
আরও পড়ুন, তিন ব্যাঙ্কের সংযুক্তির ব্যাখ্যাসমূহ
এশিয়া মহাদেশের দেশগুলোর মধ্যে ভারতীয় টাকার দামই সবচেয়ে বেশি পড়েছে। পতনের হার ৯.৯০ শতাংশ। চলতি মাসেই টাকার দাম পড়েছে ৩.৩০ শতাংশ।
অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেছিলেন, টাকার দাম পড়ার পেছনে সবটাই ‘বাহ্যিক কারণ’। আন্তর্জাতিক সংকটকেও দায়ী করেছিলেন তিনি। আশ্বাস দিয়েছিলেন দেশের আভ্যন্তরীণ অর্থনীতি মজবুত রয়েছে। তবে শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞরা প্রমাদ গুনেছিলেন অন্যখানে। বলেছিলেন মার্কিন মুদ্রার পাশাপাশি যদি প্রতিদ্বন্দ্বী অর্থনীতির চাহিদা বাড়ত, সেক্ষেত্রে টাকার দাম আরও পড়লেও চিন্তার তেমন কারণ ছিল না। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। মার্কিন ডলারের চাহিদাই কেবল চড়চড় করে বাড়ছে।
তবে গত এক সপ্তাহে ছবিটা পাল্টেছে অনেকটাই। ফোরেক্স ডিলাররা বলছেন, বিশ্বের অন্যান্য অর্থনীতির অবস্থার তেমন উন্নতি না হলেও মার্কিন ডলারের তুলনায় ভারতের টাকার দাম খুব অল্প হলেও বাড়ছে, যা দেশের অর্থনীতির পক্ষে নিঃসন্দেহে ইতিবাচক।