২০১৪ সালে দিল্লির মসনদে ক্ষমতায় আসার আগে বিদেশ থেকে সমস্ত কালো টাকা দেশে ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। বিশেষ করে সুইস ব্যাঙ্কে যত কালো ধন রয়েছে তা দেশে ফেরালে সমস্ত দেশবাসীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়া কোনও ব্যাপার নয় বলে ঘোষণাও করেন তিনি। এমনকী ক্ষমতায় আসার পর নোটবন্দি করে কালো টাকার হদিশ পাওয়ার চেষ্টা করে মোদী সরকার।
কিন্তু মোদী সরকারের ৮ বছরের কার্যকালে কালো টাকা দেশে তো ফেরেইনি, উল্টে বিদেশি ব্যাঙ্কে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে ভারতীয়দের সম্পদ। ভারতীয়রা আরও বেশি করে সুইস ব্যাঙ্কে টাকা রাখছে বলে খবর। গত বছর ভারতীয়রা যে পরিমাণ টাকা সুইস ব্যাঙ্কে রেখেছে তা গত ১৪ বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। ভারতীয় ব্যক্তিত্ব এবং সংস্থাগুলির বিভিন্ন সুইস ব্যাঙ্কে রাখা টাকার পরিমাণ প্রায় ৩.৮৩ বিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ। ভারতীয় সুদ্রায় ৩০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। মনমোহনের ইউপিএ জমানাতেও এত টাকা সুইস ব্যাঙ্কে ছিল না।
২০২০ সালে সুইস ব্যাঙ্কে জমানো টাকার পরিমাণ ছিল প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। ২০২১ সালে তা লাফিয়ে বেড়ে হয়েছে প্রায় ৩১ হাজার কোটি। তবে সুইস কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে, সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাঙ্ক জমা থাকা ভারতীয়দের সম্পদকে কালো ধন বলা যাবে না, বা বিবেচনা করা যাবে না। তাদের কথায়, যদি করফাঁকি বা জালিয়াতি হয় তাহলে সুইস কর্তৃপক্ষও ভারত সরকারের মতো সমান পদক্ষেপ করবে। ভারতকে এই ব্যাপারে সমর্থন করে সুইস সরকার।
আরও পড়ুন ইতিহাসে প্রথম, আমেরিকা থেকে বিপুল পরিমাণ ইউরিয়া কিনল ভারত
প্রসঙ্গত, বিশ্বের মোট ৮৬টি দেশের নাগরিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে সেই দেশের সরকারকে অবগত করে সুইস ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। কোন দেশের কোন কোন নাগরিক সুইস ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলেছে, কত টাকা গচ্ছিত আছে সে সম্পর্কে তথ্য দেয় সুইস ফেডারেল ট্যাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। আর সেই তালিকায় ভারতও রয়েছে।
তবে এই জমার হিসাব পুরোটাই সরকারি তথ্য অনুযায়ী। কিন্তু সুইস ব্যাঙ্কগুলিতে অনেক বেনামী অ্যাকাউন্টে বেনামী সম্পদ গচ্ছিত রয়েছে। বেআইনি ভাবে অনেক ভারতীয় টাকা রাখেন। যার হিসাব সুইস বা ভারত সরকার কারও কাছে থাকে না। তাই সুইস ব্যাঙ্কে জমা কালো টাকার পরিমাণ জানা কার্যত অসম্ভব।