Petrol-Diesel Price Hike: জনকল্যাণ প্রকল্পের খাতে টাকা রাখতে বাড়ানো হয়েছে জ্বালানির দাম। রবিবার পরোক্ষে স্বীকার করে নিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এদিন পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি স্বীকার করছি জ্বালানির দাম গ্রাহকদের উদ্বেগের কারণ। কিন্তু এক বছরে ৩৫ হাজার কোটির বেশি করোনা টিকার জন্য খরচ করা হয়েছে। প্রায় এক লক্ষ কোটি প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনার জন্য খরচ হয়েছে। পিএম কিষান যোজনায় টাকা হস্তান্তর চলছে। এই সঙ্কটকালে তাই আমরা জনকল্যাণ খাতের জন্য অর্থ সঞ্চয় করছি।‘
ইতিমধ্যে জ্বালানির মুল্যবৃদ্ধি বিরোধীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে। কংগ্রেস-সহ অন্য বিরোধী দলগুলো মোদী সরকারের সমালোচনায় সরব। এবার ঘুরিয়ে তাদের কটাক্ষ করলেন পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী। তিনি রাজস্থান এবং মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস সরকারকে জ্বালানির ওপর থেকে কর লাঘবের চ্যালেঞ্জ ছোড়েন। রাহুল গান্ধীর প্রতি তাঁর প্রশ্ন, ‘রাহুল গান্ধীজির কাছে আমার প্রশ্ন রাজস্থান আর মহারাষ্ট্রে জ্বালানির দাম এত কেন? উনি যদি সত্যি গরিবের জন্য ভেবে থাকেন, এই দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের বলুন করের বোঝা লাঘব করতে।‘
এদিকে, লাগাম ছাড়া ঘোড়ার মতো ছুটে চলেছে তেল। পেট্রোল, ডিজেলের দাম। কেন? সোমবার কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান দাম-বৃদ্ধির জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের ঊর্ধ্বগামী মূল্যকেই দায়ী করেন। করোনায় লকডাউনে দেশের অর্থনীতির গতি মুমূর্ষু, তার উপর অগ্নিমূল্য তেল মড়ার উপর যেন খাঁড়ার ঘা।
মে মাস থেকে পেট্রোলের দাম বেড়েছে ৪ টাকা ৯০ পয়সা, ফলে অন্তত ৬টি রাজ্যে এর দাম লিটার পিছু ১০০ টাকা পেরিয়ে গিয়েছে। মুম্বইতে খুচরো বাজারে পেট্রোলের লিটার পিছু দাম ১০১ টাকা ৫০ পয়সা, ডিজেলের দাম ৯৩ টাকা ৬০ পয়সা। আর বছরের শুরু থেকে পেট্রোলের দাম বেড়েছে ১১ টাকা ৬০ পয়সা, ডিজেলের দাম-বৃদ্ধি ১২ টাকা ৪০ পয়সা।
ক্রুড অয়েল বা অপরিশোধিত তেলের দাম পেট্রোল-ডিজেলের দামে প্রভাব ফেলে কী ভাবে?
২০২১-এ বিশ্ব অর্থনীতি কোভিডের ক্ষত সারিয়ে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। সেই সঙ্গে ক্রুড অয়েলেরও দাম বাড়ছে। ব্রেন্ট ক্রুড বেড়েছে ৩৭.১%, ব্যারেল পিছু ৫১.৮ ডলার থেকে বেড়ে ৭১ ডলার পৌঁছেছে। যদিও বর্তমানে পেট্রোলের যে দাম, তা ২০১৪ অর্থবর্ষের পেট্রোলের দামের চেয়েও বেশি, যখন ভারতে অশোধিত তেলের গড় দাম ছিল ব্যারেলে ১০৫. ৫ ডলার। আর ২০১৩-র জুন মাসে ভারতে ক্রুড অয়েল বাস্কেটের গড় দাম ছিল ব্যারেল পিছু ১০১ ডলার।
আরও পড়ুন Explained: সেন্ট্রাল ভিস্তা ও হেরিটেজে আঁধার
ভারতের গড় ক্রুড বাস্কেট বা ইন্ডিয়াস অ্যাভারেজ ক্রুড বাস্কেট কী? এর অর্থ, দুবাই, ওমান এবং ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের গড় মূল্য। ভারতের তেল আমদানির ক্ষেত্রে এটিকে সূচক হিসেবে ধরা হয়। কেন্দ্রীয় সরকার এ দিকেই নজর রাখে। তা, ২০১৩ সালের জুনে ভারতের গড় ক্রুড বাস্কেটের দাম যখন ব্যারেল পিছু ১০১ ডলার, তখন পেট্রোল খুচরো বাজারে বিক্রি হয়েছে লিটার পিছু ৬৩ টাকা ০৯ পয়সা অথবা ৭৬ টাকা ৬০ পয়সায় (ডলারের তুলনায় টাকার অবচয় বা ডেপ্রিসিয়েশন যদি হিসাবে করা হয়)।
একই ভাবে ২০১৮-র অক্টোবরে যখন ভারতের গড় ক্রুড অয়েল বাস্কেটের দাম ছিল ব্যারেল পিছু ৮০.১ ডলার, তখন ডিজেলের দাম ছিল লিটার পিছু ৭৫ টাকা ৭০ পয়সা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন