একটা ভুল কাড়ল ১৮ টি প্রাণ। তেলঙ্গানা বোর্ড অফ ইন্টারমিডিয়েট এডুকেশনের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর ফাইনাল পরীক্ষার রেজাল্টের জেরে প্রাণ খোয়াল ১৮ জন শিক্ষার্থী।
এবছর তেলঙ্গানা বোর্ডে দ্বাদশ শ্রেণীতে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৯ লক্ষ ৭৪ হাজার, তাদের মধ্যে অনুত্তীর্ণ হয়েছে ৩ লক্ষ ২৮ হাজার জন। এই ঘটনায় চরম অস্বস্তিতে পড়েছে তেলঙ্গানা সরকার, কারণ সরকারের একটি ভুল পদক্ষেপই এই ব্যাপক অসাফল্যের মূলে রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ছাত্রগোষ্ঠী ও তাদের পরিবারের বিক্ষোভের মুখোমুখি হয়ে রাজ্য সরকার বুধবার তিন লক্ষেরও বেশি শিক্ষার্থীর উত্তরপত্রের পুনর্মূল্যায়ন করার নির্দেশ দিয়েছে।
ভুল একটাই। সরকারের তরফ থেকে বোর্ড পরীক্ষা যথাযথভাবে সম্পন্ন করার দায়িত্ব পায় গ্লোবারেনা টেকনোলজিস। সেখানেই উঠেছে প্রশ্ন। শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকেরা এই সংস্থার সিস্টেম নিয়েই অভিযোগ করেছেন।
আরও পড়ুন: কবে হবে বৃষ্টি? কী বলছে পূর্বাভাস?
এই ঘটনার জেরে যারা আত্মহত্যা করেছে তাদের মধ্যে একজন জি নগেন্দ্র। অঙ্কে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া ছেলে নিজের ব্যর্থতার ভার মেনে নিতে পারেনি। কুশাইগুরার বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করার পর ঘটনায় স্তম্ভিত তার পরিবার।
শোকস্তব্ধ ভেনিলার পরিবারও। নিজামাবাদের ভি ভেনিলা দুটি বিষয়ে উত্তীর্ণ না হওয়ার ফলে রাসায়ানিক সার খেয়ে আত্মহত্যা করে। তেলঙ্গানার প্যারেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এন নারায়ণ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানান, "সংস্থাটির টেকনিক্যাল ত্রুটির কারণেই মেধাবী ছাত্ররা এক একটি বিষয়ে ৫-১০ নম্বর পেয়েছে এবং অনেককেই অনুপস্থিত মার্ক করা হয়েছে। যা শিক্ষার্থীদের জন্য মর্মান্তিক। এর দায় নিতে হবে সংস্থাটিকে।"
অভিভাবকদের তরফ থেকে বসুবর্ধন রেড্ডী জানান, "একাদশ শ্রেনীতে ৯৫ শতাংশ নম্বর পাওয়া ছাত্ররা কম নম্বর পাওয়া তো দূরের কথা, কী করে ফেল করতে পারে, সেখানেই আমাদের প্রশ্ন।" এই অভিযোগ মারাত্মক আকার নেয় যখন পরীক্ষার্থী নব্যার শূন্য পাওয়া খাতা পুনর্মূল্যায়ন করার পর তার নম্বর হয়ে যায় ৯৯।
তেলঙ্গানার শিক্ষামন্ত্রী জি জগদীশ রেড্ডী জানান, তাঁর দপ্তর এই মুহুর্তে তলব করা রিপোর্টের অপেক্ষায় আছে। "যদি কোনও রকম গাফিলতি সামনে আসে, আমরা তৎক্ষণাৎ দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করব," বলেন তিনি। "সব দিক বিচার করে তেলেঙ্গানা সরকার ৩ লক্ষ ৭৪ হাজার জন শিক্ষার্থীর খাতা পুনর্মূল্যায়নের বন্দোবস্ত করছে।" কিন্তু সরকার এবং ওই সংস্থার গাফিলতিতে এতগুলো নিরীহ প্রাণের চলে যাওয়া বৃহৎ একটি প্রশ্ন রেখে গেল সমাজে।
Read the full story in English