Advertisment

আইআইএম রোহতকের ডিরেক্টর যোগ্য নন, প্রথমে অস্বীকার করেও শেষ পর্যন্ত মানল কেন্দ্র

এসব সত্ত্বেও গত ২৮ মার্চ ধীরজকে দ্বিতীয় দফার মেয়াদে আইআইএম-এর ডিরেক্টর পদে পুনর্বহাল করা হয়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
atlast modi Govt admits IIM-Rohtak head not eligible yet got job

আইআইএম রোহতকের ডিরেক্টর ধীরজ শর্মার নিয়োগ ঘিরে বিতর্ক।

ধীরজ শর্মার আইআইএম রোহতকের ডিরেক্টর পদে বসার নূন্যতম যোগ্যতা নেই, শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার আদালতে স্বীকার করতে বাধ্য হল। ইতিমধ্যেই পাঁচ বছর আইআইএম-এর ডিরেক্টর পদে কাজ সামলেছেন ধীরজ শর্মা। এর মধ্যেই তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। মামলা গড়ায় হাইকোর্টে। কিন্তু, এসব সত্ত্বেও গত ২৮ মার্চ ধীরজকে দ্বিতীয় দফার মেয়াদে আইআইএম রোহতকের এর ডিরেক্টর পদে পুনর্বহাল করা হয়েছে।

Advertisment

গত সোমবার, শিক্ষামন্ত্রক পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে একটি হলফনামা জমা করেছে। সেখানেই উল্লেখ যে, স্নাতকস্তরে দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও আইআইএম রোহতকের ডিরেক্টর পদে দ্বিতীয় দফায় কাজ চালানোর জন্য নিয়োগ পেয়েছেন ধীরজ শর্মা। এই পদে বসার জন্য স্নাতকস্তরে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হওয়াই হচ্ছে পূ্র্বশর্ত।

গতবছর সেপ্টেম্বরে ধীরজ শর্মার নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির বিষয়টি প্রথম সামনে আনে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। এরপর তিনটি চিঠির মাধ্যমে ধীরজ শর্মার থেকে তাঁর স্নাতকস্তরের সংশাপত্র তলব করেছিল শিক্ষা দফতর। তাসত্ত্বেও সেগুলি শর্মা জমা করেননি। যদিও তাঁর দ্বিতীয়বারের জন্য আইআইএম রোহতকের ডিরেক্টর পদে নিয়োগ পাওয়া আটকায়নি। ২৮ ফেব্রুয়ারি আইআইএম আইনের অধীনে ইনস্টিটিউটের বোর্ড অফ গভর্নরস (বিওজি) দ্বারা দ্বিতীয় দফার মেয়াদে পুনরায় নিয়োগ পান ধীরজ শর্মা।

এর আগে, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ক্যাবিনেটের নিয়োগ কমিটির (এসিসি) পূর্বানুমতি নিয়ে একজন আইআইএম ডিরেক্টরকে নিয়োগ করা হত। এসিসি ২০১৭ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি আইআইএম রোহতকের ডিরেক্টর হিসাবে শর্মার প্রথম দফার মেয়াদের ছাড়পত্র দিয়েছিল। (যা সরকার এখন অবৈধ বলে স্বীকার করেছে)। তবে ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি থেকে নয়া আইন কার্যকর হয়। নতুন আইন অনুযায়ী, দেশের ২০টি বিজনেজ স্কুলকেই তার ডিরেক্টর, চেয়ারপার্সন বাছাইয়ের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে আইআইএম রোহতকের ডিরেক্ট ধীরজ শর্মার নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা হয়েছিল। শিক্ষাগত যোগ্য অনুযায়ী শর্মা ওই পদে বসার যোগ্য নন বলে দাবি করেন মামলাকারী। এর বিরুদ্ধে এক বছর আগে আদলতে হলফনামা জমা করেছিল কেন্দ্র। তাদের দাবি ছিল, শর্মার সঙ্গে যে বাকি আবেদনকারীরা ছিলেন তাঁরা কোনও প্রশ্ন তোলেনি। তাই, এই মামলা খারিজ করা হোক। শিক্ষা মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছিল যে, ধীরজ শর্মার নিয়োগ যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করে হয়েছিল এবং তাঁকে বহাল রাখতে কেন্দ্র দায়বদ্ধ।

যা নিয়ে ২০২১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম খবর প্রকাশ করে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। এরপর গতবছর ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২৮ জুন ও ১৫ ডিসেম্বর শর্মার কাছে চিঠি দিয়ে তাঁর স্নাতক ডিগ্রি চায় শিক্ষামন্ত্রক।

এই বছরের ৯ ফেব্রুয়ারী, যখন ধীরজ শর্মা আইআইএম রোহতকের ডিরেক্টর পদে তাঁর পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করেন, তখন শিক্ষামন্ত্রককে চিঠি দিয়ে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে- তিনি ১৯৯৭ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এই নিয়ে নোটারাইজড হলফনামা প্রদান করবেন। ১৯৯৯ সালে বি আর আম্বেদকর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি, ২০০৬ সালে লুইসিয়ানা টেক ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি করেছেন বলে জানিয়েছিলেন। তিনি সাত বছর ধরে একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে পূর্ণ-সময়ের অধ্যাপক হিসাবে কাজ করেছেন। যদিও তিনি তার পরেও তার নথিপত্র পাঠাননি, শর্মা তাঁর মেয়াদ শেষ করার পরে মন্ত্রনালয় ১৭ ফেব্রুয়ারি আইআইএম-রোহতক থেকে সেগুলি পেয়েছিল।

কেন্দ্র সোমবার দাখিল করা হলফনামায় বলেছে, 'এটা দেখা যেতে পারে যে বিজ্ঞাপন অনুসারে প্রথম শ্রেণীর ডিগ্রির বদলে ডঃ ধীরজ শর্মা স্নাতক স্তরে দ্বিতীয় বিভাগ অর্জন করেছেন এবং পরিচালক পদের জন্য বিজ্ঞাপনে নির্ধারিত যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণ করেননি।' কীভাবে নিয়োগ পেলেন ধীরজ শর্মা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে যে, শর্মার প্রথম মেয়াদে নিয়োগ অবৈধভাবে হয়েছিল তা এই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি আইআইএম-রোহতকের বিওজি সভায় শিক্ষামন্ত্রকের প্রতিনিধি দ্বারা প্রকট হয়েছিল। ওই বৈঠকে শর্মার পুনর্নিযুক্তি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল এবং দ্বিতীয় দফার নিয়োগ অনুমোদিত হয়েছিল।

Read in English

Education Modi Government Punjab Haryana HC Education Minister
Advertisment