Advertisment

বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য এবার মুখ্যমন্ত্রী! মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত নিয়ে কী বলছে রাজ্যের শিক্ষামহল?

শিক্ষার 'মমতায়ন' না কি বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত, কী বলছেন শিক্ষাবিদরা?

author-image
Anurupa Chakraborty
New Update
mamata banerjee - jagdeep dhankhar- university chancellor- west bengal

রাজ্যজুড়ে শিক্ষাব্যবস্থা একেবারেই গোলমেলে। বছর দুয়েক অনলাইনে পরীক্ষা, তাতে দেখা গিয়েছে তীব্র অসন্তোষ। তবে এরই মাঝে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিরাট সিদ্ধান্ত। রাজ্যপাল নয়, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী। ঠিক এমনটাই অনুমোদন মিলেছে মন্ত্রিসভার তরফে। শিক্ষাক্ষেত্রে এমন বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত নিয়ে কী ভাবছেন শিক্ষাঙ্গনের মানুষেরা। ছাত্র সংগঠনগুলিরই বা ঠিক কী প্রতিক্রিয়া?

Advertisment

প্রশ্ন যখন ছাত্রসমাজ এবং শিক্ষার, তখন অধ্যাপকদের ঠিক কী মতামত এই প্রসঙ্গে সেটি জেনে নেওয়া খুব জরুরি। জয়পুরিয়া কলেজের অধ্যাপক শ্রী আবির চট্টোপাধ্যায় বলছেন, "আমি তো এতে কোনওরকম অসুবিধা দেখছি না। এর দুটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, আগে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য ছিলেন রাষ্ট্রপতি মহাশয়। এখন সেটি পরিবর্তন হয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন - উনি আমাদের দেশের এক্সিকিউটিভ হেড। তাহলে উনি যদি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষে থাকতে পারেন তাহলে রাজ্যের এক্সিকিউটিভ হেড হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী কেন হতে পারেন না? আর দ্বিতীয়ত, কোনও রাজ্যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয় সেই রাজ্যের সরকার কিংবা সাংসদদের সঙ্গে কথা না বলে তো কাজ করে না। ইউজিসির নীতি থাকলেও রাজ্যের অনুমোদন প্রয়োজন হয় সুতরাং রাজনীতির দিক দিয়ে তাহলে এটাও স্বাভাবিক।"

অধ্যাপকের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষা প্রাঙ্গণের শীর্ষে যাঁরা রয়েছেন তাঁদের মতামত কিন্তু সমান গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গবাসী কলেজের অধ্যক্ষ হিমাদ্রী ভট্টাচার্য বলছেন, "হঠাৎ করে অত্যধিক মাত্রায় রদবদল হলে একটু মুশকিল হয়। যেমন চলছে, তেমনই যদি চালানো যায় অথবা ছোটখাটো কিছু নিয়ম এদিক ওদিক করে। উনি তো রাজ্যের দায়ভার সামলাচ্ছেন আশা করছি, যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেটা ভালই হবে। এবার তার থেকেও বড় প্রশ্ন, আগে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হোক এবং উনি এই পদের দায়িত্বে কাজ শুরু করুন, তারপর ভাল মন্দের কথা'।

আরও পড়ুন ক্যাবিনেট বৈঠকে বড় সিদ্ধান্ত, এবার রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মাথা হবেন মুখ্যমন্ত্রী

অন্যদিকে ছাত্র সংগঠনের নেতাদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষের সুর। তাঁদের সকলেই যেন সম্পূর্ণ বিষয়টিকে মেনে নিতে নারাজ। এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্যের সাফ বক্তব্য, "আমরা এবার শিক্ষায় মমতায়ন দেখার অপেক্ষায় রয়েছি, এবং বুদ্ধিজীবীরা কখন নিজেদের ভাষণ শুরু করেন সেটা দেখার অপেক্ষায় রয়েছি। এই প্রথম ভারতবর্ষের ইতিহাসে এমন একজন আচার্য হয়ে বসতে চলেছেন যিনি নিজেই কিছু জানেন না, আর কী বলার আছে! এ রাজ্যে সব সম্ভব"।

অন্যদিকে সম্পূর্ণ বিষয়টিকে বাঁকা চোখেই দেখছেন এবিভিপি-র রাজ্য সম্পাদক সুরঞ্জন সরকার। তাঁর বক্তব্য, "পশ্চিমবঙ্গ তো আর ভারতের বাইরে না! সবকিছু নিশ্চয়ই যা খুশি ইচ্ছেমতো হলেই হল না। শিক্ষায় এত কিছু পাল্টানো সহজ নয়। অবাক লাগছে এখানেই যে আচার্যের পদে যেখানে একজন দক্ষ এবং শিক্ষিত মানুষ বসতে পারেন, সেখানে স্বৈরাচারী ক্ষমতার মাধ্যমে যা খুশি তাই"। যদিও সবেমাত্র মন্ত্রিসভার অনুমোদন মিলেছে। কতটা এই ব্যবস্থা কার্যকরী হয় সেই সম্পর্কে এখনও অনেক বিচার বিবেচনা দরকার।

West Bengal Jagdeep Dhankhar university Mamata Banerjee Chancellor
Advertisment