প্রেসিডেন্সি আগেই করেছিল, এবার সেই পথে হাঁটল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিলেন, সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে গ্রন্থাগারের বিপুল সম্ভার।
২০১৬ সালে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, তাঁদের ঐতিহ্যশালী গ্রন্থাগারের দরজা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। সেই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে সম্প্রতি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাদের ১২ লক্ষ বইয়ের বিপুল সম্ভার এখন থেকে কেবল পড়ুয়া, শিক্ষক, গবেষক বা শিক্ষাকর্মীরাই নন, দেশের যে কোনও নাগরিক বৈধ পরিচয়পত্র দেখিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন। শিক্ষামহলের একাংশের বক্তব্য, এই সিদ্ধান্তের ফলে কেবলমাত্র কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী এলাকাই নয়, রাজ্য তথা পূর্ব ভারতের সবকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সমৃদ্ধ হবে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, বেশ কিছুদিন ধরেই এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছিলেন কর্তৃপক্ষ। উপাচার্য সহ শীর্ষ আধিকারিকেরা সম্প্রতি প্রস্তাবটিতে শিলমোহর দেন। আপাতত বইয়ের ক্যাটালগ তৈরির কাজ চলছে। মাসখানেকের মধ্যে তা মিটে গেলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। প্রধান গ্রন্থাগারিক সৌমিত্র সরকার বলেন, ''আমাদের মোট বইয়ের সংখ্যা প্রায় ১২ লক্ষ। তাছাড়া বিপুল পরিমাণে ডিজিটাল বই, জার্নাল, ই-জার্নাল রয়েছে। উৎসাহীরা বৈধ পরিচয়পত্র দেখিয়ে গ্রন্থাগারে বসে বই পড়তে পারবেন। তবে আপাতত বই বাড়িতে নিয়ে যাওয়া যাবে না। প্রয়োজনে ডিজিটাল বইয়ের প্রিন্ট-আউট নেওয়া যাবে।''
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গ্রন্থাগারটি কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসের ১১ তলায় অবস্থিত। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য সাতটি ক্যাম্পাসেও গ্রন্থাগার রয়েছে। উপাচার্য সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ''আমরা সবসময়ই মৌলিক গবেষণায় উৎসাহ দিতে চেয়েছি। আশা করি এই সিদ্ধান্তে গবেষকেরা উপকৃত হবেন।'' প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন পরে সম্প্রতি সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে প্রথম পাঁচে জায়গা করে নিয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।
২০১৬ সালে প্রেসিডেন্সিতে গ্রন্থাগার উন্মুক্ত করে দেওয়ার পর প্রতিদিনই সেখানে ভিড় জমান অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পড়ুয়া, গবেষকেরা। গ্রন্থাগারের আধিকারিক অরবিন্দ নায়েক বলেন, আই কার্ড দেখিয়ে বই, ই-জার্নাল পড়তে পারেন উৎসাহীরা। গ্রন্থাগারের সদস্যও হওয়া যায়, তবে সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রয়োজন।