বহুদিনের অপেক্ষার পর কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট খুলে শিক্ষার্থীরা পৌঁছেছিল অন্দরে। তবে ভাইরাসের রেশ যেন বেশিদিন শান্তি দিল না পড়ুয়াদের জীবনে। ফের করোনার চোখরাঙানির জেরে বন্ধ দরজা। ছাত্র জীবনের এই টানাপোড়েন কী অধগতি তাদের জীবনে? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
ছাত্র সংগঠনের সকলের সুর কিন্তু এর বিপক্ষেই! এবিভিপির সম্পাদক সুরঞ্জন সরকার বলছেন, "এটি আর কিছুই নয় ছাত্রজীবনের কাছে এক অভিশাপ স্বরূপ। ওরা ছন্দে ফিরেছিল তবে ফের ছন্দপতন! পড়াশোনার ক্ষেত্রে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি। সবকিছু খোলা থাকলে কলেজ কেন নয়? কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের এমনিও ভ্যাকসিন প্রক্রিয়া হয়ে গিয়েছে, তাহলে সমস্যা কোথায়?" অন্যদিকে এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্যর দাবি, "আর কতভাবে যে ওরা সমস্যার সম্মুখীন হবে! যেখানে সবকিছুই চলছে সেখানে শুধু শুধু অনলাইনের ঝামেলা করার কোনও দরকার নেই। একেতেই ডেটা চার্জ বেড়ে আকাশ ছোঁয়া, অবশ্যই চিন্তা ভাবনা করা উচিত।"
অন্যদিকে চিন্তায় কপালে ভাঁজ শিক্ষকদের। এতদিন প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে কাটিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের বেশিরভাগের বক্তব্য, অনলাইন মাধ্যমে আর যাই হোক লেখাপড়া সম্ভব নয়। বিদ্যাসাগর কলেজের অধ্যাপক সোনারেখা চট্টোপাধ্যায় বলছেন, "যথেষ্ট বেড়ে গেছে ডেটার দাম, এভাবে সম্ভব নয়! ছেলে মেয়েরা ব্যবহারিক বিষয়ে পিছিয়ে পড়েছে, ভবিষ্যৎ একেবারেই অন্ধকার। ওদের ভিত একেবারে দুর্বল, অর্ধেক ছেলে মেয়ে অনলাইনে ক্লাসে থাকলেও মন কোথায় থাকে বোঝা দায়!" মণীন্দ্র কলেজের অধ্যাপক বিশ্বজিৎ দাস বলছেন, "বিধি নিষেধ মেনে কলেজ খোলা উচিত, গ্রাম-গঞ্জের ছেলেমেয়েদের পক্ষে সবসময় ভাল কানেকশন পাওয়া সম্ভব নয়। অনেক ক্ষতি হয়েছে, এবার আসল অর্থেই ভাবনা চিন্তার প্রয়োজন, আর্থিক ভাবেও অনেকের সমস্যা হচ্ছে।"
জয়পুরিয়া কলেজের অধ্যাপক আবীর চট্টোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, "ক্লাস করানো এভাবে বেশ সমস্যার। ছেলে-মেয়েরা পরীক্ষার সময় প্রশ্ন বুঝতে পারছে না, ওদের পড়াশোনাতে বিরাট তফাৎ তৈরি হচ্ছে! অনলাইন বাজেট তো বিশাল সমস্যার। এত টাকা খরচ করা খুব কষ্টদায়ক, সম্ভবই নয় অনেকের পক্ষে।" শিক্ষকদের বক্তব্য থেকেই তাঁদের চিন্তার বিষ. পরিষ্কার! শিক্ষার্থীদের জীবন নিয়েও তাঁদের উদ্বেগ কম নেই, এর শেষ কবে সেই আশাতেই দিন গুনছেন তাঁরা।