শিক্ষাক্ষেত্রে বিভিন্ন রদবদলের ইঙ্গিতে সরগরম রাজ্য। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্যে পদে বসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনই অনুমোদন মিলেছিল রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে। অর্থাৎ কোপ পড়বে রাজ্যপালের উপর। সূত্রের খবর, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ভিজিটর পদ থেকেও এবার সরানো হতে পারে রাজ্যপালকে। অচিরেই বদলানো হতে পারে আইনে। নবান্নের তরফে সবুজ সংকেতও নাকি মিলেছে। এই দুই রদবদল বাংলার শিক্ষাক্ষত্রে আশার আলো দেখাচ্ছে, নাকি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে? তা নিয়েই এখন জোর চর্চা।
নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী হতে চলেছেন নতুন ভিজিটর? বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এই বদল প্রসঙ্গে যথেষ্টই অবাক অধ্যাপকরা। সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মৃণাল পারেখ বলছেন, 'আমার তো মনে হয়না এসবের কিছু দরকার ছিল। এত বছর ধরে একই নিয়ম চলে আসছে। গভর্নর বডির তত্বাবধানে কাজ ভালভাবেই হয়। নতুন করে একজন এই পদে বসলে অনেক পরিবর্তন আসবে। তার সম্পূর্ন বিষয়টি বুঝে উঠতে সময় লাগবে - এবং নতুন করে যে নিয়ম আসবে সেটা কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। এখন সেইভাবে কিছুই বলা সম্ভব নয়। তবে আমরা তো সকলেই অবাক হয়েছি। এটুকু বলা যায়, শিক্ষার সঙ্গে রাজনীতি গুলিয়ে ফেললে খুব মুশকিল।'
সহমত পোষণ করছেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সরিত চক্রবর্তী। তার বক্তব্য, 'রাজ্য রাজ্যপাল বিবাদ, শিক্ষায় এটা ঢুকবে কেন? শিক্ষার ক্ষেত্র আলাদা। সেই ব্রিটিশ আমল থেকে গভর্নিং বডির দায়িত্ব কী সেটা বোঝানো আছে। ছেলেমেয়েদের কথা একটু ভাবা উচিত, এরকম ভাবে সংঘর্ষ না করে দুই পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে শিক্ষা ক্ষেত্রকে আরও মসৃণ করা উচিত। সকলের সহযোগিতা দরকার। পড়ালেখা কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটাতো আর ছেলে খেলা তো নয়। রাজ্য রাজনীতির ঘেরাটোপে শিক্ষা না এলেই ভাল।'
আচার্যের পদে মুখ্যমন্ত্রী বসার প্রস্তাব নিয়েও বিতর্ক হয়েছে। রাজ্যের ভূমিকায় সরব অনেকে। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থায় শাসক দলের আরও প্রভাব বৃদ্ধির আগ্রহের বিষয়টি স্পষ্ট হচ্ছে বলে অনেকেই মনে করছেন। তার মধ্যেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ভিজিটর পদে শিক্ষামন্ত্রীকে বসানোর বিষয়টিতে বিতর্কের আগুনে আরও ঘি ঢালল।