মোমিন স্কুলের উচ্চমাধ্যমিক প্রোজেক্টের খাতা মুদিখানায়!

"এক সপ্তাহ পার হয়ে গিয়েছে। এখনও আমার দোকানেই খাতাগুলো পড়ে রয়েছে। উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চয় খাতাগুলো সংরক্ষণের ব্যাপারটিকে গুরুত্ব দিতে হত। জানি না কবে খাতাগুলো নিয়ে যাবে।"

"এক সপ্তাহ পার হয়ে গিয়েছে। এখনও আমার দোকানেই খাতাগুলো পড়ে রয়েছে। উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চয় খাতাগুলো সংরক্ষণের ব্যাপারটিকে গুরুত্ব দিতে হত। জানি না কবে খাতাগুলো নিয়ে যাবে।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
education news, west bengal h s council,

মোমিন হাই স্কুলের উর্দু প্রোজেক্টের খাতা।

উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফল এখনও প্রকাশ হয়নি। তারই মধ্যে রাস্তায় মিলেছে বেশ কিছু উর্দু প্রোজেক্টের খাতা। ঝড়-জলের রাতে যশোর রোড থেকে কুড়িয়ে সেই খাতা নিজের মুদিখানায় আগলে রেখেছেন প্রাক্তন সামরিক কর্মী বিধান মন্ডল। কিন্তু কোনও হেলদোল নেই উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ বা সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষের। অন্যদিকে শিক্ষক মহলের মতে, পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হওয়ার আগে রাস্তায় খাতা পড়ে থাকা চূড়ান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনতার উদাহরণ।হোক প্রোজেক্টের খাতা, তাও এই ধরনের ঘটনা সাধারণ মানুষের কাছে শিক্ষা সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তাই বহন করে। তবে কাউন্সিলের বক্তব্য, নম্বর দেওয়া হয়ে গিয়েছে, কাজেই এটা তেমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়।

Advertisment

৭ এপ্রিল রবিবার প্রবল ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে যশোর রোড থেকে এক হাতে কোনওরকমে একটি একটি করে মোমিন হাইস্কুলের উর্দু প্রোজেক্টের খাতা কুড়িয়েছেন বিধান মন্ডল। সব খাতা একটি প্যাকেটে যত্ন করে রেখেও দিয়েছেন। কিন্তু সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও কেউ খোঁজ করেনি সেইসব খাতার। শনিবার বিধানবাবু বলেন, "এক সপ্তাহ পার হয়ে গিয়েছে। এখনও আমার দোকানেই খাতাগুলো পড়ে রয়েছে। উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চয় খাতাগুলো সংরক্ষণের ব্যাপারটিকে গুরুত্ব দিতে হত। জানি না কবে খাতাগুলো নিয়ে যাবে।" বিধানবাবু আরও জানান, "লরির চাকাও চলে গিয়েছে কিছু খাতার ওপর দিয়ে।"

কলকাতার মৌলানা আবুল কালাম আজাদ সরণীতে অবস্থিত মোমিন হাই স্কুল। স্কুলের প্রধান শিক্ষক শাহিদ আসলাম বলেন, "আমি কাউন্সিলে খাতা জমা দিয়েছিলাম। ওই প্রোজক্টের খাতাগুলো এক জায়গায় রয়েছে বলেও কাউন্সিলে জানিয়ে দিয়েছি। ওরা বলেছে ঠিক আছে, দেখছি। এরপর আর আমি কিছু করতে পারব না। কাউন্সিল নির্দেশ দিয়েছিল আমাদের খাতা জমা দেওয়ার জন্য। আমার কাছে জমা দেওয়ার রসিদ আছে। মূল্য না থাকলে খাতা জমা দিতে বলতেন কেন? কাউন্সিল বুঝবে কোথায় পড়ে রয়েছে।"

উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সেক্রেটারি তাপস মুখোপাধ্যায় অবশ্য প্রোজেক্টের ওই খাতাগুলিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি বলেন, "এটা একেবারেই গুরুত্বপূর্ণ নয়। খাতা স্কুলগুলো বিক্রি করে দিত, তাই আমরা বলেছি আমাদের কাছে জমা দিতে। কিন্তু কিভাবে খাতা ওখানে পৌঁছলো তা আমি জানি না।"

Advertisment

অল বেঙ্গল টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য বলেন, "এটা একেবারে হাস্যকর বিষয়। সব কিছু নিয়েই ছেলেখেলা হচ্ছে। উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ এসব জমা নেয় কিন্তু তার কোনও গুরুত্ব দেয় না। এটা অবহেলার একটা উদাহরন। ফল বেরনোর আগে এসব ঘটলে আগামী প্রজন্ম পড়াশোনাকে গুরুত্ব দেবে না।" আমাদের পাঠানো ছবি দেখে যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য বলেন, "কাউন্সিল ও স্কুল, দুপক্ষেরই দায়বদ্ধতা রয়েছে। তবে প্রথমে স্কুলের উচিত ওই খাতাগুলো নিয়ে আসা। পরে কাউন্সিলকে বলা যেতে পারত। তবে ছবি দেখে যা বুঝছি, খাতায় কোন স্ট্যাম্প বা স্বাক্ষর নেই।"

Education