ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের জেরে ভারতে ফিরেছেন বহু শিক্ষার্থী। পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই দেশেই পড়াশোনা সম্পূর্ণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে মেডিক্যাল পড়ুয়াদের ইন্টার্নশিপ সম্পূর্ণ করার অনুমতি মিলেছে।
ইউক্রেনের এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ইউনেস্কোর তরফে জানানো রিপোর্টে বলা হয়েছে, এমন ঘটনা যেকোনও সময়ে যে কোনও দেশে হতে পারে তাই, জরুরি অবস্থা থেকে অন্তত শিক্ষা ব্যবস্থাকে পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনা সকলকেই রাখতে হবে। নির্দেশ রয়েছে, শিক্ষকদের নিজস্ব যোগ্যতায় এই ধরনের ক্ষতিগ্রস্থ পরিস্থিতিতে পঠনপাঠন যাতে সহজ ভাবে হয় সেই বিষয়ে নজর দিতে হবে। দরকারে শিক্ষা ব্যবস্থা আলাদা করতে হবে তবে তাদের শিক্ষায় ছেদ পড়লে চলবে না। পড়ুয়াদের নিজেদের সঙ্গে মানিয়ে নিতে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে।
শুধুই রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ নয় বরং করোনা অতিমারির মতো এক চলমান সংকটের কারণে অনেক শিক্ষার্থীরাই পিছিয়ে পড়েছে। যেকোনও বিপর্যয় হতে পারে, মানুষের বাসস্থান হারিয়ে যেতে পারে। এতে শিক্ষার ধারাবাহিকতা যেন নষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অনেকেই কোভিডের সময় নানান দেশ থেকে নিজের দেশে ফিরে গিয়েছেন। তাদের পড়াশোনা আজ স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার মুখে, রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্ট বলছে ২০২১ সালে বিশ্বব্যাপী সেই সংখ্যা ছিল ৮.৪ কোটি, বর্তমানে সেটি বেড়েই যাবে কারণ বহু শিক্ষার্থী ইউক্রেন ছেড়ে নিজের দেশে ফিরে গেছে।
সমস্ত দেশকেই সংকটের জন্য তৈরি থাকতে হবে। যাতে পড়ুয়ারা দেশে ফিরে নিজেদের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয় তেমন পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। নতুন পরিকল্পনা অবশ্যই রাখতে হবে। অনেক দেশেই এসবের অভাব রয়েছে, যেটি আরও বেশি করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা এবং ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়েই তাদের দূরবর্তী শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। শুধু যারা জরুরি অবস্থার শিকার হয়েছেন তাঁরাই নয়, সবাইকে সমান তালে কাজ করতে হবে।
শুধু শিক্ষকরাই নয়, ছাত্র-ছাত্রীদের সমানভাবে তৎপর হওয়া উচিত। দুর থেকে আগত ছাত্র-ছাত্রীদের সমর্থন করা খুব দরকার। শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে তাদের সাহায্য করতে হবে, মানসিক ভাবে পাশে থাকতে হবে। জাতীয় শিক্ষক নীতির উন্নয়ন এবং বাস্তবায়ন হওয়া প্রয়োজন, শিক্ষকরা যাতে মন সম্পন্ন শিক্ষা প্রদান করতে পারে সে বিষয়ে নজর রাখা দরকার। শিক্ষক নিয়োগের বিষয়েও এই রিপোর্টে বলা হয়েছে। সঙ্গেই তাদের প্রশিক্ষণ এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার, নিরাপত্তা প্রদানের তথা পদমর্যাদার দিকে নজর রাখার নির্দেশ মিলেছে। পড়ুয়ারা যাতে নিরাপদে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারে, শিক্ষায় বাধা না পড়ে সেটাই আসল উদ্দেশ্য।