Advertisment

আন্দোলনের আট মাস পার, এবার আমরণ অনশনের পথে GKCIET-এর পড়ুয়ারা

কলেজের পড়ুয়ারা জানালেন দু বছরের ডিপ্লোমা শেষে বৈধ শংসাপত্র মিলেছে ঠিকই, কিন্তু তৃতীয় বর্ষে বি টেক কোর্সে ভর্তি নেওয়া হয়নি কলেজের পড়ুয়াদের। অথচ ৬ বছরের মডিউলার কোর্সে সেরকমটাই শর্ত ছিল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
gkciet

ছবি সূত্র - ফেসবুক

মাস আটেক আগে সোশাল মিডিয়া জুড়ে কিমবা খবরের শিরোনামে ছিল মালদার গণিখান চৌধুরী ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়রিং অ্যান্ড টেকনোলজি (জিকেসিআইইটি)-র পড়ুয়াদের আন্দোলন। গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাস থেকে বৈধ শংসাপত্রের দাবিতে এবং সিভিল ও কম্পিউটার সায়েন্সের ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের অনুমোদন না থাকার মতো একাধিক অভিযোগে মালদা এবং কলকাতায় আন্দোলনে বসেছিল প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা। কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের তরফে গত অক্টোবরে গেজেট প্রকাশ করে বেশ কিছু সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দেওয়া হলেও আসলে কিছুই হয়নি, বলছে ছাত্রছাত্রীরা। আগামী ২৩ মার্চের মধ্যে প্রশাসন অথবা কলেজের পক্ষ থেকে সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু না জানালে আমরণ অনশনের পথ বেছে নেবে আন্দোলনকারীরা। ইতিমধ্যে এই মর্মে চিঠি পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।

Advertisment

আরও পড়ুন, LIC AAO recruitment 2019: বিমা সংস্থায় ৫৯০টি শূন্যপদে চাকরির বিজ্ঞপ্তি

কলেজের পড়ুয়া অঙ্কুশ মণ্ডল জানালেন দু বছরের ডিপ্লোমা শেষে বৈধ শংসাপত্র মিলেছে ঠিকই, কিন্তু তৃতীয় বর্ষে বি টেক কোর্সে ভর্তি নেওয়া হয়নি কলেজের পড়ুয়াদের। অথচ ৬ বছরের মডিউলার কোর্সে সেরকমটাই শর্ত ছিল। অঙ্কুশ জানালেন, "আমরা যাতে আন্দোলন সংগঠিত করতে না পারি, ক্যাম্পাসে পুলিশি পাহারা থাকে সারাক্ষণ, আমাদের ঢুকতেই দেওয়া হয় না। আরটিআই থেকে গ্রিভান্স সেলে অভিযোগ জানানো, সবই করেছি আমরা, কোনও লাভ হয়নি। কর্তৃপক্ষ শুধু জানিয়েছে, সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে ওয়েবসাইট মারফত জানানো হবে তা। ৬ মাস কেতে গেল, কিছুই জানানো হল না"।

publive-image প্রশাসনকে দেওয়া আন্দোলনকারীদের চিঠি

চতুর্থ বর্ষের ছাত্র সাইন জাহেদী বললেন, "কেন্দ্র থেকে গ্যাজেট জারি করার পর মালদা থানার আইসি, অতিরিক্ত জেলাশাসক (এডিএম), এবং  জিকেসিআইইটি-র ডিরেক্টর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। পরে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করলে পুলিশ আমাদের ওপর লাঠি চার্জ করে। ১৬ জন পড়ুয়া সব মিলিয়ে আহত হয়েছিলেন।, এদের অনেকেই ভর্তি ছিলেন মালদা জেলা হাসপাতালে"। সাইন আরও বলেন, "আমরা এখনও প্রতি শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মালদার জেলাশাসকের বাসভবনের সামনে প্রতীকী প্রতিবাদ করি। স্থানীয় সাংসদদের সঙ্গেও আমাদের সমস্যার কথা জানিয়ে দেখা করেছি। তেমন ফল হয়নি। এবার প্রশাসন এবং কলেজ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি আগামী ২৩ মার্চের মধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে আমরা আমরণ অনশনের পথে হাঁটব"।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে পড়ুয়াদের আন্দোলন চলাকালীন অর্থ সাহায্য করেছিলেন অনেকেই। জেকেসিআইইটি-র  আলমগীর খান এবং আরও কিছু সহপাঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে আন্দোলনের টাকা নয়ছয় করার। বর্তমানে গণিখান চৌধুরী কলেজ ছেড়ে সোনারপুরের স্বামী বিবেকানন্দ ইন্সটিটিউটে ভর্তি হয়েছেন আলমগীর।  ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে জানালেন, "আমি নিজে দুটো এনজিও চালাই। মালদায় ব্লাড ব্যাঙ্কে ব্লাডের অভাব থাকে। অনালাইনে নিজের উদ্যোগে ব্লাড ব্যাঙ্ক চালাই, অনাথ শিশুদের নিয়ে কাজ করি। আমার যদি টাকা নয়ছয় করার হতো, ওই কটা টাকা নিয়ে কী করতাম? তাছাড়া আন্দোলন চলার সময় যে অর্থ সাহায্য এসেছিল, তা আমার কাছে থাকত না। সেই সময়ে একটি চাকরি করছিলাম বলে রানুছায়া অনশন মঞ্চে আমি ২ থেকে ৩ দিনের বেশি থাকতেও পারিনি। তবে এটুকু বলতে পারি যে পরিমাণ অর্থ সাহায্য এসেছিল, তার যথাযথ ব্যবহার হয়েছিল"।

"আমি বলছি না যারা এখনও আন্দোলন চালাচ্ছে, তাঁদের দাবিটা ন্যায্য নয়। তবে আমার পরিবারের তরফ থেকে চাপ আসছিল। বুঝতে পারছিলাম, আন্দোলন করে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পারব না। তাই সরে আসতে হয়েছে"।

students West Bengal
Advertisment