গত দুই বছর ধরে করোনা মহামারীর জেরে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ছিল স্থগিতাদেশ। একাদশ শ্রেণীর নম্বর অনুযায়ী পাশ করিয়ে দেওয়া হচ্ছিল পড়ুয়াদের। তাই পরীক্ষা দেওয়ার টেনশন-আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন তাঁরা। এবছরও কী হতে চলেছে? সেই বিষয়েই একপ্রকার আশঙ্কায় ছিলেন পড়ুয়া তথা অভিভাবকরা। তবে শেষমেশ দীর্ঘ টালবাহানার পর রাজ্য সরকারের নির্দেশে শনিবার থেকে শুরু হল উচ্চমাধ্যামিক। হোমসেন্টার অর্থাৎ নিজেদের স্কুলেই পরীক্ষায় বসলেন তাঁরা। কেমন অনুভূতি? সে খবর জানতে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা একাধিক স্কুলে পৌঁছে গিয়েছিল।
Advertisment
স্কুলের পরিবেশ যেহেতু, তাই পরীক্ষার্থীরা বেজায় সাবলীল। চারপাশের চেনা মানুষজন, অসুবিধে একটু কম হওয়াই স্বাভাবিক। বারাসাত প্রণব কন্যা সঙ্ঘের ছাত্রী স্নেহা দত্ত বললেন, "যেহেতু নিজের স্কুলে পরীক্ষা, তাই ভয় একটু কমই লেগেছে। শিক্ষিকারা ভীষণ সাহায্য করেছেন, এমন সুবিধা পাওয়া যায় না। শুধু তাই নয়, বন্ধুরাও ভীষণ ভাল, প্রত্যেকেই নিজের মত করে সাহায্য করেছে। প্রশ্নপত্র ভালই ছিল, তাই লিখতে অসুবিধে হয়নি। আশা করছি পরবর্তী বিষয়গুলোও ভালই হবে।" অন্যদিকে আরেক ছাত্রী তৃপ্তি মণ্ডল জানান, "বড় পরীক্ষা তো, প্রথমটায় হালকা ভয় লাগছিল! কিন্তু হলে সবাই এত হেল্পফুল ছিল যে সব ঠিক হয়ে গেল। কড়া নিরাপত্তা ছিল, গার্ডে দু'জন করেই ছিলেন, তবে কোনও অসুবিধে হয়নি।"
অন্যদিকে পরীক্ষার্থীদের সুবিধে-অসুবিধে নিয়ে সর্বদাই তৎপর ছিলেন শিক্ষক শিক্ষিকারা। গড়িয়া হরিমতি দেবী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ইন্দ্রাণী সেনগুপ্ত বললেন, "সমস্ত কাজ ভীষণ সুন্দরভাবে হচ্ছে। সরকারের তরফে এত ভাল ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, প্রথম দিনের পরীক্ষা সুষ্ঠু ভাবেই হয়েছে। আর ছাত্রীদের কথা বলতে গেলে, ওরা অতিরিক্ত কোনও সুবিধা না পেলেও চেনা মানুষগুলোকে সামনে পেয়েছে, এটা একটা বিরাট স্বস্তি! যেহেতু দুবছর একেবারে হালকা চালে গিয়েছে, সেভাবে পড়াশোনাও হয়নি, ওরা একটু ঘাবড়েছিল। সেই ভয়টা কেটেছে। শিক্ষিকারাও যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন।"
এরপরই তিনি আরও বলেন, "সরকার থেকে বেঁধে দেওয়া নিয়ম দারুণ ভাবে মানা হচ্ছে। প্রথমত, যেমন ১০টার আগে প্রশ্নপত্র খোলা যাবে না। দ্বিতীয়ত, প্রতি বেঞ্চে দুইজন করে পরীক্ষার্থী। এমনকী শিক্ষিকাদের ক্ষেত্রেও রাখা হয়েছে নিয়ম। কারওর নিজের সন্তান যদি উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী হন, তবে তাঁর সকালে গার্ডে থাকার প্রয়োজন নেই। তবে পরীক্ষা বেশ সাংগঠনিকভাবেই হচ্ছে, আগামীতেও যেন তাই হয়।"