সামনেই উচ্চ মাধ্যমিক। বছর দুয়েক পর, আবারও স্বাভাবিক নিয়মে পরীক্ষা। জীবনের দ্বিতীয় বড় পরীক্ষা নিয়ে চিন্তায় থাকা খুব স্বাভাবিক। শুধু পরীক্ষার্থী নয়, তাঁর সঙ্গে পরিবারের মানসিক অবস্থাও থাকে অন্যরকম। উচ্চ মাধ্যমিকের পরেই জীবনের গতি নির্ধারণ, কোন বিষয় নিয়ে এগোবে পড়ুয়ারা, নির্ভর করে এই পরীক্ষার ওপরে।
বিজ্ঞান, কলা অথবা বাণিজ্য - যে বিভাগেই পড়াশোনা করুন না কেন, পরীক্ষার হলে সবথেকে গুরুত্বপূর্ন যে বিষয়টা, সেটি হল মাথা ঠান্ডা রেখে উত্তর লিখে আসা। গত দুইবছর বিশেষ করে স্কুলের ক্ষেত্রে পড়াশোনায় বেশ গাফিলতি দেখা গিয়েছে। অনলাইনে ক্লাস এবং পরীক্ষার দরুণ, নম্বরের মধ্যেও এক বিরাট পরিবর্তন দেখা গিয়েছে। ফলেই, এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা ছাত্রছাত্রীদের কাছে বেশ চ্যালেঞ্জিং। বড় পরীক্ষার হল তাঁদের কাছে একটু চাপের প্রমাণিত হতেই পারে! কিন্তু মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকার খুব দরকার... কিভাবে? জানাচ্ছেন মনোবিদ দেবজিতা দত্ত।
এবছর কি একটু হলেও বেশি চ্যালেঞ্জিং?
ঠিক সেরকম বলব না, তবে হ্যাঁ! বছর দুয়েক ধরে অনলাইনে ক্লাস করেছে ওরা। অন্যরকম ভাবে পরীক্ষা দিয়েছে। তাই, একটা প্রেসার তো থাকেই তাঁর মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক বলে কথা। পরবর্তী ধাপে এটা দিয়েই ভবিষ্যত নির্ধারণ হয়।
মানসিকভাবে ঠিক থাকতে গেলে কী করা উচিত ওদের?
- একটা কথা যেটা না বললেই নয়, ওরা জানে কিন্তু সব কিন্তু হয়তো গুছিয়ে উঠতে পারছে না। এটা হয়েই থাকে। তাই আগেই যেটা মাথায় রাখতে হবে যে আমরা সবটা পড়েছি, এখন শুধু রিভিশন করার পালা। কোনও চাপ না নিয়ে, যে এটা পড়া হয় নি, ওটা হয় নি, এগুলো না করে সব কিছু রিভাইস করা দরকার।
- দ্বিতীয়ত, অতিরিক্ত চাপ এবং স্ট্রেস না নিয়ে সঠিক সময়ে সঠিক কাজ করা। রাত জেগে পড়াশোনা একদম নয়। সঠিক মাত্রায় ঘুম খুব দরকার। নাহলে শরীর খারাপ। আর ভয় পেলে চলবে না। যা কিছু পড়েছে যদি ঘুরিয়েও আসে, যেহেতু বড় পরীক্ষা তাই মোকাবিলা করা দরকার।
- তৃতীয়ত, মেডিটেশন! যদি সকলের দিকে একটু সময় পায় তবে মেডিটেশন করা ভাল। অথবা যেটা করে ওরা রিফ্রেশ অনুভব করে। একনাগাড়ে পড়াশোনা করতে করতে মাথা গন্ডগোল করবে এটা খুব স্বাভাবিক। তাই, একটু মেডিটেশন বা গল্পের বই পড়া খুব স্বাভাবিক।
- চতুর্থত, খারাপ অথবা প্যানিক ইনফ্লুয়েন্স! পরীক্ষার আগে যারা খুব প্যানিক করে তাঁদের থেকে দূরে থাকাই ভাল, নাহলে খুব সমস্যা হতে পারে। নিজের ওপর থেকে কনফিডেন্স হারিয়ে যেতে পারে।
- এবং শেষ, বাবা মায়ের সাপোর্ট। তারা যেন ওদের একদম টেনশন না দেয়। এটা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। কারণ, দিনশেষে পরিবারের সাপোর্ট থাকা খুব দরকার। বাবা মায়ের সঙ্গ যদি থাকে অনেকটা সহজ সবকিছু।
শিক্ষকদের কী কোনও ভূমিকা থাকে?
অবশ্যই! শুধু তো পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা নয় এটা। শিক্ষকদেরও পরীক্ষা। শুধু তাই নয়, একজন শিক্ষক যিনি শেখাচ্ছেন, টিপস দিচ্ছেন তাঁর একটা বিরাট ভূমিকা থেকে যায়। দ্বিতীয়, যিনি গার্ড দিচ্ছেন তারও একটা ভূমিকা থাকে। কারণ, পরীক্ষার হলে খুব মানসিক স্টেবিলিটি থাকা দরকার। একজন পড়ুয়ার সঙ্গে যত তারা ভাল আচরণ করবে ততই মঙ্গল। যদি কোনও প্রশ্ন বুঝতে না পারে, সেটাই সাহায্য করা এগুলো খুব দরকার।