বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে 'ড্রাগ ফ্রি জোন' করে তুলতে এবার উদ্যোগী হলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) বিচারে একাধিকবার দেশের প্রথম সারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে যাদবপুর। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন ক্যাম্পাসে মদ্যপান ও মাদক সেবনের অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন যাবত। সম্প্রতি একাধিকবার ইউজিসি জানিয়েছে, শিক্ষাগত উৎকর্ষতা এবং গবেষণার মান নিয়ে কোনও প্রশ্ন না থাকলেও জনমানসে ভাবমূর্তির বিচারে রাজ্যের অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির থেকে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে যাদবপুর। আসন্ন শিক্ষাবর্ষে সেই ধারনা বদলে ফেলতেই ক্যাম্পাসকে নেশা-মুক্ত করতে একাধিক পদক্ষেপ নিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং ও টেকনোলজি ফ্যাকাল্টির ডিন চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে যে ছাত্রছাত্রীরা যাদবপুরে ভর্তি হবেন, তাঁদের একইসঙ্গে দুটি অঙ্গীকারপত্রে সই করতে হবে। একটিতে সংশ্লিষ্ট ছাত্র বা ছাত্রী ঘোষণা করবেন তিনি ক্যাম্পাসে বা হস্টেলে র্যাগিং-এর সঙ্গে কোনওভাবে যুক্ত থাকবেন না। অন্যটি কার্যত একটি মুচলেকাপত্র। সেটিতে নতুন ভর্তি হতে আসা পড়ুয়া ক্যাম্পাসে মদ্যপান বা মাদক সেবন না করার বিষয়ে লিখিত প্রতিশ্রুতি দেবেন।
আরও পড়ুন, ‘কাশ্মীর জট কাটাতে মধ্যস্থতা করতে বলেছেন মোদী’, ট্রাম্পের এ দাবি ওড়াল দিল্লি
ডিন অফ স্টুডেন্টসের দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, এই মুচলেকাপত্রে ভর্তি হওয়ার সময় প্রথম বর্ষের সব ছাত্রছাত্রীকেই সই করতে হবে। তারপরও কেউ যদি অনভিপ্রেত কিছু করে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। তবে যাদবপুরের ক্যাম্পাসে কেবল পড়ুয়ারাই নয়, বহিরাগতরাও ঢুকে নানারকম নেশা করে। সেক্ষেত্রে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে কর্মসমিতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ক্যাম্পাসে নেশা বন্ধের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই সরব একাধিক শিক্ষক সংগঠনের নেতারা। তৃণমূল প্রভাবিত অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার নেতা মনোজিৎ মন্ডল, অল বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন বা আবুটার তরুণ নস্করেরা ক্যাম্পাসে নেশা-বিরোধী একাধিক কর্মসূচি নিয়েছেন। সম্প্রতি রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু নিয়মিত আধিকারিকদের নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় মদ্যপান ও মাদকসেবন রুখতে নিয়মিত টহল দিচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নেশা বিরোধী বিশেষ স্কোয়াডও গঠন করা হয়েছে।
স্নেহমঞ্জুবাবুর কথায়, "আমরা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরকে ড্রাগ ফ্রি জোন হিসাবে গড়ে তুলতে চাই। সেই উদ্দেশ্যেই যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।"