সদ্য প্রকাশিত সিবিএসই দ্বাদশ শ্রেণির ফলাফলে ত্রিবান্দ্রম রিজিয়নের পারফরম্যান্স সবথেকে ভালো। ৯৮.৮৩ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করেছে এখানে। এবারের ফলাফলে বোর্ডের সার্বিক পাসের হার ৯২.৭১ শতাংশ। সিবিএসই দ্বাদশ শ্রেণির ফলাফলে রীতিমত তাক লাগাল কোচির এক প্রতিবন্ধী ছাত্রী, হান্না অ্যালিস সাইমন।
জন্ম থেকেই মাইক্রোফথালমিয়া রোগে আক্রান্ত সে। জন্মগত মাইক্রোফথালমিয়া, যা জন্মগত মাইক্রোফথালমিয়া নামেও পরিচিত, চোখের একটি গুরুতর রোগ। প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে ৫০০ এর মধ্যে ৪৯৬ নম্বর পেয়ে সকলকে চমকে দিয়েছেন হান্না। তবে শুধুমাত্র পড়াশুনা নয়। আরও একাধিক প্রতিভা রয়েছে তার। হান্না একাধারে ইউটিউবার, সেই সঙ্গে অসাধারণ গানও করেন। পাশাপাশি তার অনুপ্রেরণামূলক বক্তৃতা অনেকের কাছেই অক্সিজেন স্বরূপ।
দ্বাদশের পরীক্ষায় অর্থনীতিতে ১০০, ইংরাজিতে ৯৭, পলিটিক্যাল সায়েন্সে ১০০ সোশিওলজি, সাইকোলজি সহ সকল বিষয়ে চোখ ধাঁধানো নম্বর নিয়ে পাস করেছেন তিনি। পড়াশুনার পাশাপাশি আটটি গানও লিখেছেন তিনি। ইউটিউবে তার চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা এখন প্রায় ২০ হাজার। হান্নার মা’র কথায়, “মেয়ে ছোট থেকেই অসম্ভব জেদি। কিছু করবে বলে মনে করলে সেটা ও করেই ছাড়বে। ভাল কিছু করার খিদে ওর মধ্যে সব সময় তাড়া করে বেড়ায়। সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী দের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ও এত ভাল পারফর্ম করেছে ভেবেই ভাল লাগছে। পাড়া পড়শি থেকে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা সকলেই ওর সাফল্যে উচ্ছ্বসিত”।
আরও পড়ুন: <বিশ্বব্যাপী জরুরি পরিস্থিতি তৈরি করেছে মাঙ্কিপক্স, ঘোষণা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার>
হান্না ট্রিনিটি ফ্যাকাল্টি লন্ডন থেকে ওয়েস্টার্ন ক্লাসিক্যাল এবং রক এবং পপ বিষয়ে তার গ্রেড ৮ সম্পন্ন করেছেন। তার কথায় ‘তখন সবে ক্লাস সিক্স! স্কুলে একটি গান আমি লিখি, সেই গানের প্রশংসা সকলেই করেন।এরপর বাবার পরামর্শে একটি ইউটিউব চ্যানেলও খুলি। এখন সেই চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার প্রায় ২০ হাজারের কাছাকাছি। মানুষজন আমার গান ভালবাসে এটা আমার কাছে একটা অনুপ্রেরণা। অনেক জায়গা থেকেই আমি আমার জীবনের গল্প শেয়ার করার জন্য ডাক পাই। আমি সেখানে গিয়ে নিজের জীবনের কথা তুলে ধরি। সেটা আজ অনেকের কাছেই অক্সিজেন জোগায়’।
অগাস্টেই উচ্চশিক্ষার জন্য বাবা-মায়ের সঙ্গে মার্কিন মুলুকে পাড়ি দেবেন সে। তাঁর কথায়, “প্রথম দিকে কয়েকটা মাস বিদেশ আমার জন্য একটা চ্যালেঞ্জ হতে পারে। তবে আমি দেখাতে চাই যে আমি অন্য ছাত্রদের মত বিদেশে গিয়েই একাই বাঁচতে পারি”। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ অফ নটরডেম থেকে ইতিমধ্যেই মিলেছে স্কলারশিপের সুযোগ।