গতকাল এজেসি বোস কলেজে ঘটেছে এক নজিরবিহীন ঘটনা। কলেজ ক্যাম্পাসে ছেঁড়া জিন্স পড়ে প্রবেশ নিষেধ, এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেই কলেজের প্রিন্সিপ্যাল। নোটিস বোর্ডে লিখিত ভাবে টাঙানো সেই বিজ্ঞপ্তিতে রয়েছে অধক্ষ্যর স্বাক্ষর। শুধুই কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য নয়। অধ্যাপক থেকে অন্যান্য কর্মচারী সকলকেই মানতে হবে এই নির্দেশ। বিজ্ঞপ্তিতে লেখা রয়েছে, ছেঁড়া জিন্স পড়ে কলেজে ঢোকা নিষিদ্ধ। নিয়ম না মানলে তাঁকে টিসি দেওয়া হবে। অধ্যক্ষের বক্তব্য, এটি সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত - তিনি চান না কেউ এই ধরনের পোশাক পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসুক, এমন পোশাক রুচিবিরুদ্ধ!
একথা কারও অজানা নয় যে হাতে গোনা খুব কম কলেজেই নিজস্ব ড্রেস কোড রয়েছে। বেশিরভাগই ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের পছন্দের পোশাক পরতেই স্বাছন্দ্য বোধ করেন। এ প্রসঙ্গে, বিদ্যাসাগর কলেজের অধ্যক্ষ গৌতম কুণ্ডু বলেন, "উনি আগেই জানিয়েছেন এটি তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। কলেজ ক্যাম্পাসে পোশাক নিয়ে উত্তেজনা আগেও সৃষ্টি হয়েছে। কোন কলেজে কী নিয়ম থাকবে এটা তাঁদের কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত, একজন অধ্যক্ষ হিসেবে এটুকুই বলব, ড্রেস কোড না থাকুক তবে পোশাক নিয়ে সচেতন থাকলে খারাপ কিছুই নেই।"
অন্যদিকে, কলেজের অধ্যাপক অভিরূপ মুখোপাধ্যায় বললেন, "পোশাক দিয়ে কারওর আচার আচরণ যেমন বোঝা যায় না, তেমনই এটা নয় যে ছেঁড়া-ফাটা পোশাক পরলেই সে খারাপ। একেবারেই নয়! কিন্তু প্রবাদে আছে কাদা পায়ে যেমন ঠাকুরঘরে ঢোকা যায় না, তেমনই এটা তো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাই সচেতন হলে ক্ষতি কী? এর বাইরে তো অনেক জায়গা আছে, পোশাক যা খুশি পরুক শুধু মাথায় রাখতে হবে কোন জায়গায় যাচ্ছি।"
আরও পড়ুন রাজ্যের স্কুলে এবার নীল-সাদা ইউনিফর্ম, থাকবে বিশ্ববাংলার লোগো! কী বলছে শিক্ষক ও ছাত্র সংগঠন?
অন্যদিকে কলেজের সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট ছাত্র সংগঠনগুলিও। এভিবিপির রাজ্য সম্পাদক সুরঞ্জন সরকার বললেন, "কলেজ পড়াশোনা করার জায়গা। সেখানে ছাত্র-ছাত্রীদের বাক স্বাধীনতা থাকলেও শালীনতা রাখা অবশ্যই প্রয়োজন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বুঝে শুনেই পোশাক পরা উচিত, অধ্যক্ষ প্রয়োজন মনে করেছেন বলেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।" এ প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও টিএমসিপির রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য এবং এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।