উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সভাপতি পদ থেকে অপসারিত মহুয়া দাস। এ বছর উচ্চমাধ্যমিকের রেজাল্ট বিতর্কের জেরেই এই অপসারণ বলে সংসদ সূত্রে খবর।
নতুন সংসদ সভাপতি হিসাবে দায়িত্বভার নিচ্ছেন অধ্যাপক চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপচার্ষ হিসাবে বর্তমানে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তিনি। জানা গিয়েছে, সংসদ সভাপতি হিসাবে ৪ বছর মেয়াদে কাজ করবেন চিরঞ্জিববাবু। দ্রুত তাঁকে দায়িত্বভার গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতর। সংসদ সূত্রে খবর, আগামী সোমবার থেকেই উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সভাপতির দায়িত্ব নেবেন তিনি।
করোনা আবহে চলতি বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হয়নি। বিকল্প পদ্ধতিতে গাণিতিক মূল্যায়ণের ভিত্তিতে এবার পড়ুয়াদের নম্বর নির্ধারিত হয়। যা নিয়ে পরীক্ষার্থী এবং অভিবাবকদের মধ্যে প্রবল ক্ষোভের সঞ্চার হয়। রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভ তুঙ্গে ওঠে। অকৃতকার্য পড়ুয়ারা প্রশ্ন তোলে যখন পরীক্ষাই হয়নি তাহলে কেন তাঁদের ফেল করানো হল? জানা যায়, ফলাফল নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিল রাজ্য প্রশাসনও। ফলে সংসদ সভাপতির সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বৈঠকও করেন। অভ্যন্তরীণ বৈঠক করে সংসদের পদাধিকারীরাও। এরপরই রিভিউতে বহু পড়ুয়ার নম্বর বেড়ে যায়। প্রায় সকল পড়ুয়াকেই উত্তীর্ণ বলে ঘোষণা করে সংসদ।
এছাড়া উচ্চমাধ্যমিকের ফল ঘোষণার সময় সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্ত ছাত্রীর ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ করেও বিতর্কে জড়ান সংসদ সভাপতি মহুয়া দাস। ফলাফল প্রকাশের দিন তিনি বলেছিলেন, সভানেত্রী মহুয়া দাস বলেছিলেন, "সর্বোচ্চ নম্বর ৪৯৯। পরিসংখ্যান যতটা দেখেছি, তাতে এই নম্বর একজনই পেয়েছে। মুর্শিদাবাদের এক মুসলিম কন্যা।" রাজ্য সরকারের নির্দেশেই সংসদ সভাপতি কৃতী ছাত্রীর ধর্মীয় পরিচয় তুলে ধরেছিলেন বলে অভিযোগ করে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। অস্বস্তিতে পড়ে রাজ্য সরকারও। সরব হন শাসক দলের একাধিক হেভিওয়েট নেতাও। পরে অবশ্য এই ধরণের মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশও করেন মহুয়া দাস। বলেছিলেন, "কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে নয়, আবেগের কারণেই এই ধরণের মন্তব্য করেছেন তিনি। যা না করলেই ভালো হত।"
প্রবল বিতর্কের মাঝে আগেই মহুয়া গদাস উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সভাপতি পদ থেকে ইস্তফার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন বলে সূত্রের খবর। ফলে জল্পনা ছিলই সংসদ সভাপতি পদ থেকে সরতে পারেন তিনি। সেই জল্পনা শুক্রবার ইতি পড়ল।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন