স্টুডেন্ট ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার (এসএফআই) ছাত্রদের অবস্থান বিক্ষোভের চাপে অবশেষে পিছু হটলেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ছাত্রছাত্রীদের যে দুটি মূল দাবি, তা কার্যত মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ সায়েন্স, ডাঃ অরবিন্দ নায়ক।
ছাত্র আন্দোলনের চাপে সোমবার দুপুরেই প্রকাশিত হয় প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক প্রবেশিকা পরীক্ষার মেধাতালিকা। কিন্তু সেদিন ফি কমানো নিয়ে কোনো কথা বলা হয়নি। প্রেসিডেন্সির আন্দোলনরত পড়ুয়া শুভজিৎ সরকার বলেন, "মঙ্গলবার পড়ুয়াদের সমবেত চাপের মুখে পড়ে ডিন অফ সায়েন্স ডাঃ অরবিন্দ নায়ক কাউন্সেলিং ফি বাবদ ৪০০ টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে এটি সময়সাপেক্ষ এবং আলোচনার বিষয়।" এই সিদ্ধান্ত কার্যকরী হলে কাউন্সেলিং ফি আগের মতোই ১০০ টাকা থাকবে।
সপ্তাহ শুরুতে ছাত্র আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল প্রসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়। কাউন্সেলিং ফি কমানো এবং স্বচ্ছ মেধাতালিকা প্রকাশের দাবিতে ডিনের ঘরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন পড়ুয়ারা। গত বছর থেকে একই দাবি নিয়ে আন্দোলন চললেও কাল পর্যন্ত কোনো আশানুরূপ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বিশ্ববিদ্যালয়, এমনটাই জানিয়েছিলেন আন্দোলনরত পড়ুয়ারা।
প্রেসিডেন্সিতে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা
আন্দোলনরত পড়ুয়া শুভজিৎ বলেছিলেন, “ডিন অফ সায়েন্স ডাঃ অরবিন্দ নায়ক মৌখিকভাবে জানিয়েছেন, কালকের (মঙ্গলবারের) মধ্যেই মেধাতালিকা বের করা হবে, তবে যতক্ষণ এই কাউন্সেলিং ফি না কমানো হয় ততক্ষণ চলবে বিক্ষোভ।”
সোমবার থেকে কাউন্সেলিং ফি কমানোর দাবিতে সোচ্চার থাকেন পড়ুয়ারা। সোমবারই অবশ্য এ ব্যাপারে প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, যেসব পড়ুয়া দরিদ্র ও প্রান্তিক পরিবারের সদস্য, তাঁদের জন্য বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করা হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির দায়িত্বে থাকা রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের কাছে।
উল্লেখ্য, মেধাতালিকা প্রকাশিত না হওয়ার ফলে কে কোন র্যাঙ্ক পেয়েছেন তা নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছিল পরীক্ষার্থীদের মধ্যে। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা জানিয়েছেন, শুধু নিজেদের নম্বর দেখতে পাচ্ছিলেন প্রার্থীরা, কিন্তু অন্যেরা কে কত নম্বর পেয়েছেন, বা নিজের অবস্থান কী, তা জানতে পারছিলেন না কেউ। ফলে নানা প্রশ্ন ওঠে প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে। নিজের র্যাঙ্ক ভালো না হলে অন্য কোথাও ভর্তি হওয়ার ভাবনাচিন্তাও করতে পারছিলেন না প্রার্থীরা। এত কিছু না জেনেই মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে কাউন্সেলিং করাতে হবে, এমনটা নিয়ম করা হয়েছিল। ২০১৭ সাল অবধি কাউন্সেলিং ফি ছিল ১০০ টাকা। গতবছর থেকে সেটি এক ধাক্কায় ৫০০ টাকা করে দেওয়া হয়।