মেডিক্যাল কলেজের অনশন ও আন্দোলনের সমর্থনে আয়োজিত নাগরিক কনভেনশনে ঢুকতে পারলেন না বিজেপি নেতা মুকুল রায়। তাঁকে হলের বাইরেই জানিয়ে দেওয়া হয়, দলীয় রাজনৈতিক জায়গা থেকে কেউই কনভেনশনে যোগ দিতে পারবেন না।
রবিবারের কনভেনশনে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এই আন্দোলনের সমর্থনে শহরে একটি মহামিছিল হবে। মিছিলের পরে গোটা বিষয়টি জানিয়ে ডেপুটেশন দেওয়া হবে রাজ্যপালকে। বিষয়টি নিয়ে অবহিত করা হবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য সচিবকে।
রবিবারের কনভেনশনের শুরুর আগেই অনশন মঞ্চে পৌঁছে যান কবীর সুমন। ছাত্রদের অনশন ভাঙতে অনুরোধ করেন তিনি। ছাত্ররা তাঁর সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের কথা মনে করিয়ে দিয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থাগ্রহণ করতে বললে সুমন সাফ জানিয়ে দেন, তেমন অবস্থানে তিনি নেই। তাঁর অভিযোগ, "কোনও বোধসম্পন্ন লোক আছে বলে মনে হয়? থাকলে তাঁরা এখানে আসতেন। আমি তৃণমূলের কেউ নই। আমি বিজেপি-র বিরুদ্ধে মমতার সমর্থক।" ছাত্রদের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, তাঁরা দাবি না মানা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন।
আরও পড়ুন: কেমনভাবে থাকেন মেডিক্যাল কলেজে হবু ডাক্তাররা? এভাবেও থাকা যায়?
গণকনভেনশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আইনজীবী এবং শহরের প্রাক্তন মেয়র বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, মেডিকেল কলেজের ঘটনা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, রাজ্যে তথা দেশে সেন্টার অফ এক্সেলেন্সগুলিতে ইচ্ছাকৃতভাবে সমস্যা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে যাদবপুর ও প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি জেএনইউয়ের উদাহরণ দেন তিনি। অভিনেতা কৌশিক সেন তাঁর বক্তব্যে ছাত্রদের রাজনীতিবিমুখ করে তোলার সার্বিক প্রয়াস চলছে বলে অভিযোগ করেন।
রবিবার কনভেনশনের শুরুতে আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তনী তথা চলচ্চিত্র পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়।
এদিনের কনভেনশন থেকেই দাবি ওঠে, রবিবারও মিছিল করার। সেই দাবি মেনে কনভেনশন শেষে মেডিক্যাল কলেজ থেকে একটি মিছিল বেরিয়ে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত যায়।
এদিকে কনভেনশনে ঢুকতে না পেরে ফিরে যাওয়ার অব্যবহিত পরেই মুকুল রায়ের তরফে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডা ও মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট জয়শ্রী মেহতাকে পরিস্থিতি জানিয়ে একটি চিঠি দেওয়া হয়। প্রাক্তন রেলমন্ত্রীর প্যাডে লেখা ওই চিঠিতে ছজন ছাত্রের শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় দুই অনশনকারী ছাত্রকে ইতিমধ্যেই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে চিকিৎসা চললেও খাদ্য গ্রহণ না করার ব্যাপারে অনড় রয়েছেন তাঁরা।