Advertisment

নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি: এম ফিল বাতিল, বিদেশী কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়কে ক্যাম্পাস গড়ার অনুমতি মোদী সরকারের

১০০ টি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় ভারতে তাদের ক্যাম্পাস খুলতে চলেছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

নতুন শিক্ষানীতিতে স্বীকৃতি দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সভা। একইসঙ্গে বদলে গেল কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ নাম বদলে হয়ে গেল শিক্ষা মন্ত্রক। এদিন ঘোষণা করা হয় এবার থেকে দেশের উচ্চ শিক্ষার একটিই মাত্র নিয়ন্ত্রক সংস্থা থাকবে এবং এম ফিল বন্ধ হতে চলেছে। ডিজিটাল লার্নিংয়ে গতি আনার জন্য National Educational Technology Forum গঠিত হবে।

Advertisment

উচ্চশিক্ষা মন্ত্রকের সচিব অমিত খারে বলেন, প্রাথমিকভাবে আটটি ভাষাই পাঠক্রম চালু হবে। এবং ভার্চুয়াল ল্যাবরেটরি গড়ার দিকেও এগোনো হবে। ১০০ টি শীর্ষ ভিন দেশী কলেজ বিশ্ববিলয়কে ভারতে ক্যাম্পাস খোলার জন্য অনুমতি দেওয়া হল। এই নয়া জাতীয় শিক্ষানীতিতে।

মন্ত্রকের নথি বলছে, এই সব বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে পরিচালনা এবং প্রশাসনিক ক্ষেত্রে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হবে। যেমন বর্তমানে ভারতে বিভিন্ন স্বশাসিত শিক্ষা সংস্থা এই অধিকার পেয়ে থাকে।

বর্তমানে দেশের যে সব একক উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলিকে বহুমুখী (মাল্টিডিসিপ্লিনারি) করে তোলা হবে।

অমিত খারে, " দেশে ৪৫,০০০ এর বেশি অনুমোদিত কলেজ রয়েছে। তাদের অনুমোদনের মান অনুযায়ী আন্ডারগ্রেডের অটোনমি, শিক্ষা সংক্রান্ত, প্রশাসনিক এবং অর্থনৈতিক স্বশাসনের অধিকার দেওয়া হবে।"

জাতীয় শিক্ষা নীতি গঠনে যে কমিটির সুপারিশ নেওয়া হয়েছে তার শীর্ষে ছিলেন, ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের প্রাক্তন প্রধান কে কোস্তুরী রঙ্গন। জাতীয় শিক্ষা নীতি খসড়া করা হয়েছিল ১৯৮৬ সালে। পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে তা আপডেট করা হয়। এই জাতীয় শিক্ষামীতি ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির নির্বাচনী ইস্তাহারের অংশ ছিল।

এক নজরে দেখে নিন নতুন শিক্ষানীতির গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি

* বন্ধ করা হচ্ছে এম ফিল। স্নাতক, স্নাতকত্তরের পর থাকবে পিএইচডি।

* জাতীয় শিক্ষা নীতি অনুযায়ী, ২০২১ সাল থেকে স্কুল স্তরের যাবতীয় পরীক্ষা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন (এমএইচআরডি) মন্ত্রক। নতুন পদ্ধতিতে ‘৫-৩-৩-৪’ কাঠামোয় শ্রেণি ভিত্তিক মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু হবে। বোর্ডগুলির এবং শিক্ষাবিদদের সুপারিশ পাওয়ার পরই ১০+২ কাঠামো বাতিল করা হবে এবং ২০২১ সাল থেকে নয়া মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু হবে।

শিক্ষা ব্যবস্থার একদম গোড়া থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষন কালকে মোট চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রাক প্রাথমিকের তিন বছর এবং প্রথম- দ্বিতীয় শ্রেণিকে নিয়ে পাঁচ বছরের ভিত্তিশিক্ষাকালকে চিহ্নিত করা হয়েছে প্রথমে। এরপর তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সময়কে প্রস্তুতি পর্ব হিসাবে সুপারিশ করা হয়েছে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকালকে মধ্যবর্তী দশা হিসেবে দেখা হয়েছে এবং নবম থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত মোট চার বছরের ‘সেকেন্ডারি’ স্তর রূপে সুপারিশ করা হয়েছে। জানা গিয়েছ, ক্লাস ফাইভ ও এইটে থাকতে পারে বোর্ডের পরীক্ষা।

* শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার মাঝে লম্বা ছুটি নিতে পারবে। এই ধরনের ছুটিকে বলা হয় ‘স্যাবাটিকাল’। কতদিনের জন্য ছুটি দেওয়া হবে তা স্থির করবে উচ্চশিক্ষা কমিশন। শিক্ষার্থীরা নিজেদের পছন্দমতো মেজর ও মাইনর সাবজেক্ট বাছতে পারবে। কলেজগুলিকে দেওয়া হবে স্বশাসন।

* ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই কোডিং শিখতে পারবে পড়ুয়ারা।

* ভাষা, সাহিত্য, সংগীত, দর্শন, শিল্প, নৃত্য, থিয়েটার, গণিত, পরিসংখ্যান, বিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি, ক্রীড়া, ইত্যাদি বিভাগে উচ্চশিক্ষাকে প্রতিষ্ঠিত ও জোরদার করা হবে ইনস্টিটিউটগুলিতে।

* ১০০ টি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় ভারতে তাদের ক্যাম্পাস খুলতে চলেছে।

* সংস্কৃতকে মূল বিষয় হিসেবে অন্তভূর্ত করা হবে স্কুল স্তরে।

* নয়া শিক্ষানীতিতে জাতীয় একাডেমিক ক্রেডিট ব্যাঙ্কের (এনএসিবি) প্রস্তাবকে মান্যতা দেওয়া হয়েছে। যার মারফত কোনও কোর্স শেষ করার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা ওই ক্রেডিট ব্যাঙ্ক মারফত টাকা জমা করতে পারবে। এটি একটি কোর্স বা ইনস্টিটিউট থেকে সহজেই অন্য কোর্সে স্থানান্তর করতে সহায়তা করবে।

* নতুন নীতিতে একাধিক ভাষাগত শিক্ষাব্যবস্থার দিকে মনোনিবেশ করা হবে। শিক্ষকরা কেবল ইংরেজিতেই নয়, ভারতীয় আঞ্চলিক ভাষাতেও শিক্ষাদান করতে হবে তাদের। এমএইচআরডি ইতিমধ্যে অন্যান্য রাজ্যে শিক্ষার্থীদের আঞ্চলিক ভাষা শেখানোর জন্য পর্যালোচনামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।

* নতুন শিক্ষা নীতিতে থাকছে ২২ টি ভাষা, পাশাপাশি থাকছে অডিও বই।

* ভারতে মোট তালিকাভুক্ত পড়ুয়ার অনুপাত ২০৩৫ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ করতে হবে।

* শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত ফি নেওয়া যাবে না। কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়মাবলি মেনেই তৈরি করতে হবে বেতনের পরিকাঠামো।

* আঞ্চলিক ভাষায় ই-কোর্সের ব্যবস্থা থাকবে। শিক্ষাদান, মূল্যায়ন, এবং শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের মধ্যে থাকবে প্রযুক্তির ব্যবহার। ই-কোর্সের সিলেবাস অনুযায়ী পঠনপাঠনের ব্যবস্থা আঞ্চলিক ভাষায় উপলভ্য থাকবে। হিন্দি এবং ইংলিশ ই-কোর্সের পাশাপাশি প্রথম পর্যায়ে প্রধান ভাষা যেমন কান্নাডা, ওড়িয়া, বাংলা ভাষায় কোর্সের ব্যবস্থা থাকবে।

Read the full story in English 

Advertisment