জাতীয় শিক্ষা নীতি (এনইপি) কমিটির খসড়া প্রস্তাবের সুপারিশ অনুযায়ী, ২০২১ সাল থেকে স্কুল স্তরের যাবতীয় পরীক্ষা তুলে দেবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন (এমএইচআরডি) মন্ত্রক। নতুন পদ্ধতিতে '৫-৩-৩-৪' কাঠামোয় শ্রেণি ভিত্তিক মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রকের এক কর্তা। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে এই শিক্ষানীতি চূড়ান্ত করা হবে এবং ২০২১ সাল থেকে তা বলবৎ করা হবে বলে জানা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: অর্থের অভাবে ‘হোঁচট’ আইআইটি ও আইআইএসসি-র, বরাদ্দ খরচ হয়নি বলে দাবি সরকারের
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ডট কমকে এক আধিকারিক বলেন,''কমিটির এই সুপারিশের বিষয়ে বোর্ডগুলিকে তাদের সুপারিশ জানানোর জন্য শীঘ্রই আমরা বিজ্ঞপ্তি জারি করব। বোর্ডগুলির এবং শিক্ষাবিদদের সুপারিশ পাওয়ার পরই ১০+২ কাঠামো বাতিল করা হবে এবং ২০২১ সাল থেকে নয়া মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু হবে।''
আরও পড়ুন: বড় বদলের ইঙ্গিত! স্কুল সার্ভিস কমিশন কি তুলে দিচ্ছে ইন্টারভিউ-কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া?
উল্লেখ্য, জুন মাসে জাতীয় শিক্ষা নীতি কমিটির খসড়ায় '৫-৩-৩-৪' কাঠামোর কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ শিক্ষা ব্যবস্থার একদম গোড়া থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষন কালকে মোট চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রাক প্রাথমিকের তিন বছর এবং প্রথম- দ্বিতীয় শ্রেণিকে নিয়ে পাঁচ বছরের ভিত্তিশিক্ষাকালকে চিহ্নিত করা হয়েছে প্রথমে। এরপর তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সময়কে প্রস্তুতি পর্ব হিসাবে সুপারিশ করা হয়েছে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকালকে মধ্যবর্তী দশা হিসেবে দেখা হয়েছে এবং নবম থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত মোট চার বছরের 'সেকেন্ডারি' স্তর রূপে সুপারিশ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক স্কুল স্তরের প্রচলিত মূল্যায়ন ব্যবস্থা এ দেশে চালু করার উদ্দেশ্যেই এমন পরিবর্তনের কথা সুপারিশ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় নির্দিষ্ট শ্রেণিতে পাঠরত এক ছাত্র বছরভর যেমন লেখাপড়া করে থাকে, তার ভিত্তিতেই সামগ্রিকভাবে তাকে মূল্যায়ন করা হয়। এবার সেই পদ্ধতিই ভারতের স্কুল শিক্ষায় আনতে চাওয়া হচ্ছে। জাতীয় শিক্ষা নীতি কমিটি উল্লেখ করেছে যে বর্তমান পরীক্ষা ব্যবস্থা ছাত্রছাত্রীদের নির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয়ে মনোনিবেশ করতে বাধ্য করে। এর ফলে, সংশ্লিষ্ট বিষয়টিতে পড়ুয়াদের সার্বিক জ্ঞানলাভ আধরাই থেকে যায় এবং শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা ব্যবস্থা ছাত্রের মধ্যে মানসিক চাপের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
খসড়া সুপারিশ অনুযায়ী, সারা বছর স্কুলে লেখাপড়া করে পড়ুয়াদের কতটা উন্নতি হল তা বুঝতে তৃতীয়, পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণিতে রাজ্য ভিত্তিক পরীক্ষার সুপারিশ করেছে খসড়া শিক্ষা নীতি। এছাড়া, বোর্ডের পরীক্ষার কাঠামোও পুনর্বিণ্যাসের কথা বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিষয় ভিত্তিকভাবে সম্যক ধারণা এবং দক্ষতা মূল্যায়ন করার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি, বোর্ডের মূল্যায়নের আগে ছাত্রদের বিষয় বেছে নেওয়ার সুযোগের কথাও বলা হয়েছে। কোন সেমেস্টারে তারা বোর্ডের মূল্যায়নের মুখোমুখি হবে, সেই সিদ্ধান্তও গ্রহণ করতে পারবে পড়ুয়ারাই।
Read the full story in English