'পরীক্ষা পে চর্চা' অনুষ্ঠানে শুক্রবার পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দিল্লির তালকাটরা স্টেডিয়ামে শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং পড়ুয়াদের সঙ্গে ফুরফুরে আমেজে একের পর এক প্রশ্নের জবাব দিলেন তিনি। জীবনে এগিয়ে চলার পথে একজন শিক্ষার্থীর কী করা উচিত, মানসিক এবং পড়াশোনার চাপ এমনকি অভিভাবকের ভূমিকা নিয়েও বক্তব্য রাখলেন মোদী।
অফলাইনে পরীক্ষা নিয়ে এখনও পড়ুয়াদের মধ্যে ভীতি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এদিন বললেন, "পরীক্ষা জীবনের একটি সিঁড়ি, এটি থাকলেই সহজে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। তবে ছাত্রদের পরীক্ষার ভয় থেকে দূরে থাকতে হবে। কোনওরকম চাপ নিলে চলবে না, বরং একে উৎসবের মতো আমেজে শেষ করতে হবে। বন্ধুদের থেকে টুকে লেখা, একদম উচিত নয়, নিজে যেটুকু জানো সেটুকুই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে লিখে আসো। শুধুই মোবাইল, কম্পিউটার নয় নিজেদের সঙ্গে সময় কাটাতে হবে। গভীরে খতিয়ে দেখতে হবে। পছন্দের মতো সব কাজ করতে হবে। শুধুই অভিভাবকরা চাইছেন কিংবা তারাই চাপ দিচ্ছেন বলেই কোনও কাজ করতে হবে এমনটি নয়।"
করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইন মোডে আদৌ শিক্ষা ব্যবস্থায় সুরাহা হয় কিনা সেই নিয়েও দ্বিমত রয়েছে। বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষকরাই উদ্বিগ্ন, তাদের মতামত এভাবে আদৌ পড়াশোনা সম্ভব? এদিন নরেন্দ্র মোদী আলোচনায় বলেন, "অনলাইন মোডে পড়াশোনা করার সময় শুধুই তোমরা রিডিং করো নাকি রিলস দেখ? কোনটা? তোমরা বুঝতেই পারছ আমি তোমাদের ধরে ফেলেছি! দোষ অনলাইন কিংবা অফলাইনের নয়, ক্লাসেও দেখা যায় তোমাদের শরীর এক জায়গায় কিন্তু মন আরেক জায়গায়, ফলে শুনেও কাজ দেবে না। মাধ্যম সমস্যা নয়, আসল সমস্যা মনে। অতীতেও বই খাতা ছিল না, তখন শুনে শুনে মুখস্থ হত। যত সময় যাবে ততই সবকিছু বদলাবে, তেমনই পরীক্ষা ব্যবস্থাও বদলেছে। অনলাইনে ব্যাপক ভাবে শিক্ষা গ্রহণ করে সেটিকে স্বাভাবিক জীবনে অফলাইনে প্রয়োগ করার থেকে ভাল উপায় আর কিছুই হয় না। এটিকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগানো উচিত, আশীর্বাদ হিসেবে নিজের জীবনের সঙ্গে মিলিয়ে নাও।"
আরও পড়ুন অনলাইন পরীক্ষায় বেড়েছে নকলের প্রবণতা, জানালেন শিক্ষকরা
জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়েও জানালেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, "এই কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে শিক্ষার যে নীতি নির্ধারণ হয়েছে, নানান স্তরে কত মানুষের যোগদান এতে কাজ করেছে সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। দুর পাহাড়ে, কঠিন জায়গায় এই নিয়ে কাজ চলে - দেশের বিদ্যান যারা বিজ্ঞান এবং অর্থনীতির সঙ্গে জড়িত তাদের নেতৃত্বে এই কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ১৫ থেকে ২০ লক্ষ মতামত পাওয়া গেছিল, তারপরেই এই শিক্ষানীতি নির্ধারণ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, খেলাধুলাকে এর মধ্যে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে এটিকে ধার্য করা হয়েছে। বিরোধ অনেক ছিল, তবে খুশি এখানেই যে ভারতজুড়ে এই নীতিকে সবাই গ্রহণ করেছেন, সরকার নয় দেশের মানুষ এই শিক্ষা ব্যবস্থাকে গ্রহণ করেছেন। বিদ্যার্থীদের সঙ্গেই দেশের শিক্ষক, অভিভাবক সকলকেই সেই জন্য ধন্যবাদ।"