হিন্দু হস্টেল ফেরতের দাবিতে গত ১০ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্সির গেট অবরোধ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। মঙ্গলবার সেই ঘটনায় অভিযুক্ত ২৩ জন ছাত্র-ছাত্রীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিলেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এখন পর্যন্ত তিনজন পড়ুয়াকে এক বছরের জন্য এবং ১৮ জন পড়ুয়াকে ছ'মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, শুক্রবার থেকেই ওই পড়ুয়াদের বাড়িতে এই মর্মে প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষের চিঠি পৌঁছতে শুরু করে।
উপাচার্যের নির্দেশে তিনজন ডিন এবং ফ্যাকাল্টি সদস্যদের একটি তদন্ত কমিটি গড়া হয়। এরপর অক্টোবরের শুরুতে তদন্ত কমিটির চিঠি পায় প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ৩৫ জন আন্দোলনরত পড়ুয়া। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, "বার্ষিক সমাবর্তনের আগের দিন, অর্থাৎ ১০ সেপ্টেম্বর, মূল গেটে তালা ঝুলিয়ে সমস্ত কাজ বন্ধ করে প্রেসিডেন্সিতে যে অস্বস্তিকর, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, তার তদন্তেই গত সপ্তাহে উপাচার্য এবং ডিন সহ ছ'জন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কে বা কারা এই কাজ করেছিল, তার সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহের জন্যই ছাত্রদের চিঠি দেওয়া হয়েছে।"
আরও পড়ুন: বাতিল কনভোকেশন, সারাদিন তালা বন্ধ রইল প্রেসিডেন্সির গেট
তবে শাস্তির সিদ্ধান্ত জানানোর পরেই ফের শুরু হয় চাপানউতোর। একটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা অনৈতিক ভাবে বন্ধ রাখার জন্য অভিযুক্তদের শাস্তি পেতেই হবে। তবে তিনি এও বলেছেন, এক বছরের সাসপেনশন অর্ডারকে কমিয়ে ছ'মাস এবং ছ'মাসের সাসপেনশন প্রাপ্ত পড়ুয়াদের সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।
তবে এই সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ প্রেসিডেন্সির পড়ুয়ারা। এটিকে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকারে হস্তক্ষেপ বলেই মনে করছে তারা। পাশাপাশি অভিযুক্ত ছাত্রদের পাল্টা অভিযোগ, যাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে তাদের তদন্তের সময় কোনও প্রশ্নই করা হয়নি। অন্যদিকে, যারা ছ'মাসের জন্য সাসপেনশন অর্ডার পেল তাদের পড়াশোনারও অনেকটাই ক্ষতি হবে এই শাস্তি বহাল হলে। বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র অনিতের কথায়, "কর্তৃপক্ষের তরফে বারবার আন্দোলনের যে নেতৃত্বের কথা বলা হচ্ছে তা একেবারেই ভুল, এটা কারও একার আন্দোলন ছিল না, হিন্দু হস্টেলের দাবি ছিল গণ আন্দোলন।"