NCERT-এর পরিবর্তিত সিলেবাসের নতুন বই ইতিমধ্যেই বাজারে এসেছে। এই পরিবর্তনের বিষয় গত বছরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নতুন যে বই প্রকাশিত হয়েছে তাতে আরও কিছু বিষয় বাদ দেওয়া হয়েছে, নিয়ে এখন সেগুলি নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রিপোর্ট অনুসারে, মহাত্মা গান্ধী, নাথুরাম গডসে এবং আরএসএস সম্পর্কিত কিছু বিষয় এনসিইআরটি সিলেবাদ থেকে মুছে ফেলা হয়েছে।
# গান্ধী বিশেষভাবে অপছন্দ করতেন প্রতিশোধের নীতি। যারা ভারতকে হিন্দুদের রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন তাদের বিশেষ অপছন্দ করতেন তিনি।
# হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের জন্য তার দৃঢ় প্রয়াস উগ্র হিন্দুবাদীদের এতটাই উস্কে দিয়েছিল যে তারা গান্ধীজিকে হত্যার বেশ কয়েকটি প্রচেষ্টা নেয়।
# গান্ধীজির মৃত্যু দেশের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির উপর একটি বড় প্রভাব ফেলেছিল... ভারত সরকার সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানো সংগঠনগুলিকে কঠোর হাতে দমন করতে শুরু করে। বাদ যায়নি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের মতো সংগঠনগুলি।
দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বইয়ে দীর্ঘ ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে গান্ধীজী সম্পর্কিত এই বিষয়গুলি পড়ানো হলেও এবার থেকে সেগুলি সিলেবাসের বাইরে থাকতে চলেছে। দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস বইতেও বেশ কিছু বদল আনা হয়েছে। এই বইয়ে মহাত্মা গান্ধীর হত্যাকারী গডসে সম্পর্কে কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। কী বলা হয়েছে তাতে? তাতে বলা হয়েছে গডসে পুনের একজন ব্রাহ্মণ ছিলেন। গডসে ছিলেন একটি চরমপন্থী হিন্দু সংবাদপত্রের সম্পাদক, যিনি গান্ধীজিকে 'মুসলিম তোষণকারী' বলে বর্ণনা করেছিলেন। এনসিইআরটি বই থেকে বাদ দেওয়া সকল বিষয় গত বছরের পরিকল্পনায় ছিল না। এনসিইআরটি-র পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট উত্তর দেওয়া হয়নি। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে, এনসিইআরটির ডিরেক্টর ডিএস সোকলানি বলেন, ‘সব পরিবর্তন গত বছর করা হয়েছে. এ বার নতুন করে কোন বদল আনা হয়নি”।
উল্লেখ্য, এনসিইআরটি পাঠ্যপুস্তকে করা পরিবর্তন নিয়ে সংসদে সরকারের পক্ষ থেকেও এক বিবৃতি দেওয়া হয়। এই ক্ষেত্রে, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবী, ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তক সংশোধন নিয়ে রাজ্যসভায় শিবসেনা সাংসদ অনিল দেশাইয়ের এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন যে মহামারীর কারণে স্কুল শিক্ষার ঘাটতির কথা মাথায় রেখে, শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ ও ভার কমানোর জন্য চেষ্টা করা উচিত।
এনসিইআরটি ডিরেক্টর দীনেশ প্রসাদ সাকলানি বলেছেন যে ‘আমরা যেমন গত বছর ব্যাখ্যা করেছি, কোভিড মহামারীর কারণে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে লেখাপড়ার অনেক ক্ষতি হয়েছে। শিক্ষার্থীদের চাপ কমাতে পাঠ্যবইয়ের বোঝা কমানো উচিত বলেই আমাদের মনে হয়েছে। যদিও এর সঙ্গে নির্দিষ্ট মতাদর্শকে তুলে ধরার মত অভিযোগকে অস্বীকার করেছে।