রুশ ইউক্রেন আগ্রাসনের পড়ে দেশে ফিরেছিলেন বহু ভারতীয় পড়ুয়া, তারা বেশিরভাগই মেডিক্যাল শিক্ষার্থী। যুদ্ধের রেশ কম হলেই তারা পুনরায় ইউক্রেনে ফিরে পড়াশোনা করতে পারবেন এমনটাই নির্দেশ থাকলেও, আজ তা অনিশ্চিত। তাদের বেশিরভাগের বক্তব্য, ইউক্রেনের শিক্ষক এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ ভারতীয় পড়ুয়াদের নিরাপত্তা জনিত বিষয়গুলির দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছেন। এমনকি যুদ্ধ সংক্রান্ত নানা কারণের জন্যও দায়ী করছেন ভারতীয় পড়ুয়াদের।
ইউক্রেনে ফিরে গেলে, তাদের সুরক্ষার অভাব থাকবেই। এমনকি এই ধরনের সমর্থন মিলছে সেইদেশের মানুষদের থেকেও। ছাত্ররা বলছেন, সেদেশের শিক্ষক এবং স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন যে, নয়াদিল্লি এই যুদ্ধে ইউক্রেনকে একেবারেই সমর্থন করেনি। তাই তাদের স্পষ্ট বিশ্বাস, বেশ কিছু সমস্যা ভারতীয় ছাত্রদের অবস্থানের কারণেই বৃদ্ধি পেয়েছিল। আবার ছাত্রদের তরফে এমনও জানা গিয়েছে, তারা সুরক্ষার খাতিরে যখন সীমানার দিকে প্রস্থান করেছিলন তখন ইউক্রেনীয় বাহিনীর অন্যায় আচরণের কবলেও পড়েছেন।
আদৌ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে, তারা ইউক্রেনে ফিরে নিজেদের পড়াশোনা শেষ করতে পারবেন কিনা সেই নিয়েও হাজার প্রশ্ন উঠছে এবং অনিশ্চয়তায় রয়েছেন পড়ুয়ারা। কী বলছেন তারা?
ইভনো ফ্রানকিভাস্কিক এর ছাত্র কাঞ্চন রাজভার বলছেন, "বর্ডার পার করার সময়, আমরা গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন হই, ইউক্রেনের বাহিনী আমাদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করে। এমনকি তারা হুমকি পর্যন্ত দেয় যদি ইউক্রেনীয়দের আমরা পার হয়ে না দিই তবে তারা গুলি করবে, বাতাসে গুলি পর্যন্ত চালায় তারা। শুধু তাই নয়, পেপার স্প্রে ছড়িয়ে দেয় তারা, বহু মানুষ যে কারণে হাঁপানির আওতায় পড়ে।" পড়াশোনার ক্ষেত্রেও তাদের নানা সমস্যায় পড়তে হয়। যেমন অনলাইন ক্লাস চলাকালীন তাদের ঠিকভাবে শেখানো হচ্ছিল না, তাদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছিল - তারা বিশ্বাস করে যে রুশ ইউক্রেন যুদ্ধে ভারত রাশিয়াকে সমর্থন করেছে- তাই এধরনের আচরণ।
ভারতে ফিরে এসেই কিছু পড়ুয়া আন্দাজ করতে শুরু করেন যে শিক্ষকের ব্যবহারে পরিবর্তন এসেছে। ভারতীয় পড়ুয়াদের তারা সমর্থন করছেন না। কিছু স্ক্রিনশট পাওয়া যায় যাতে এমনও লেখা ছিল, ভারত রাশিয়ার থেকে তেল এবং গ্যাস কেনে তাই তাদেরকেই সমর্থন করবে - যেটি অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত। ভারতের এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা উচিত। আরেক ছাত্র মুকুল চৌধুরী বলছেন, "ইউক্রেনের সকলেই বিশ্বাস করেন যে আমরা রাশিয়াকে সমর্থন করি, কারণ আমাদের দেশ রাশিয়াকে সমর্থন করে। যদিও অনেকবার বোঝানো হয়েছে যে এসব রাজনীতি এবং কূটনীতি। সাধারণ ভারতীয় নাগরিকরা একেবারেই এই যুদ্ধকে সমর্থন করে না তারপরেও কোনও লাভ হয়নি।"
শিক্ষকরা যথেষ্ট খারাপ ব্যাবহার করছেন। অন্যান্য দেশের পড়ুয়াদের সঙ্গে তাদের আচরণ একেবারেই স্বাভাবিক। তাদের সুযোগ দেওয়াও হচ্ছে। তবে ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে। মহরুখ জামান বলছেন আমাদের ইউক্রেনীয় শিক্ষকরা চাইছেন আমরা যাতে সেদেশে গিয়েই পড়াশোনা করি। তাদের একটাই বক্তব্য, ভারত সরকারকে বলো আমাদের সাহায্য করতে আর তোমাদের অন্যান্য দেশে না পাঠিয়ে দিতে। তারা আমাদের সঙ্গে শত্রুতা রাখতে একেবারেই চায় না।