রাজ্যের ভুয়ো দুই বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি-র তালিকা ঘিরে বিরাট শোরগোল। এ রাজ্যের দুই প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে তাতে। চৌরঙ্গী রোডের ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ অলটারনেটিভ মেডিসিন তার মধ্যে একটা। রবীন্দ্র সদন মেট্রো স্টেশন থেকে বেরিয়ে সোজা হাঁটলে পি.সি চন্দ্র জুয়েলার্সের ঠিক বিপরীতে দেখা মিলবে এই প্রতিষ্ঠানের। আদতে দেখে বোঝার উপায় নেই যে এই প্রতিষ্ঠানকেই ভুয়ো তকমা দিয়েছে ইউজিসি।
Advertisment
ঘিঞ্জি এলাকা, চারপাশে ছোট-বড় বাড়ি। সেলুন এবং তাঁর মধ্যেখানে ছোট্ট একটি গলি। সাইনবোর্ড দেখে বোঝা দায়, এখানে কোনও বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। এক কামরার ঘর, তাও শাটার নামানো। বন্ধ হয়েই পড়ে আছে সেই প্রতিষ্ঠান। আশেপাশে মানুষজনও সেইভাবে নেই। পাশের সেলুনের এক কর্মী তপন কর্মকার জানান, "গত পাঁচ বছর ধরে বন্ধ এই প্রতিষ্ঠান। তাঁর আগে অনেকে আসতেন এখানে লাইন দিয়ে কীসব নিতেন। অনেকে বলে থাকেন, ডিগ্রি দিত।"
সহমত পাশের বাড়ির এক ব্যাক্তিও। তাঁরও বক্তব্য, অনেকদিন আগে থেকেই এই প্রতিষ্ঠান বন্ধ। কিছুদিন আগে শুনলাম সরকারি ভাবে এটিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, উল্লেখ করলেন ঠাকুরপুকুরের প্রতিষ্ঠানের কথাও। শিক্ষায় দুর্নীতি নিয়ে সরগরম পশ্চিমবঙ্গ। তাঁর মধ্যেই রাজ্যের এই দুই প্রতিষ্ঠানকে ভুয়ো চিহ্নিত করেছে ইউজিসি।
জং পড়া গেট, ভাঙাচোরা দেয়াল- বন্ধ শাটারের আড়ালে একসময় ডিগ্রি দেওয়া হত এই বিষয়ে অনেকেই নিশ্চিত। তবে ভুয়ো কিনা সেই নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ অনেকেই। ইউজিসির তরফে এই প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করা হয়েছে সবেমাত্র। এলাকার মানুষদের দাবি, "অনেকেই আসছেন, এর ব্যাপারে জানতেও চাইছেন। আবার কেউ কেউ সম্পূর্ণ এড়িয়েও গেলেন বিষয়টি। সরকারি খবর যে অনেকের কাছেই পৌঁছেছে তা স্পষ্ট।"
কিছুদিন আগেই ইউজিসির তরফে জানানো হয়েছিল, দেশের ২১টি বিশ্ববিদ্যালয় ভুয়ো। তাঁর মধ্যে ছিল, চৌরঙ্গী রোডের ইন্সটিটিউট অব অলটারনেটিভ মেডিসিন এবং ঠাকুরপুকুরের ইন্সটিটিউট অব অলটারনেটিভ মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্চ এর নাম। কমিশনের সচিব রজনীশ জৈন জানিয়েছিলেন, ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট অনুযায়ী কোনও দেশীয় কিংবা কেন্দ্রীয়, অথবা রাজ্য সরকারি অনুমোদন-হীন সংস্থা কাউকে ডিগ্রি প্রদান করতে পারে না। এমনকি তাদের নিজের নামের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় যোগ করারও আইন নেই।