২১ দিনের 'লকডাউন'। বাড়ির বাইরে বেরোনোর উপর নিষেধাজ্ঞা। স্কুল কলেজের গেটে তালা। কাজেই, চক, ডাস্টার, চেয়ার-টেবিলে এখন ধুলো জমছে। আর সিলেবাস? সেটিও জমছে। মানে, ক্লাস বন্ধ থাকার কারণে সিলেবাস শেষ করা যাচ্ছে না। সম্প্রতি এমনই এক কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ঘরে বসে নিশ্চিন্ত থাকার বদলে তাদের মাথায় এখন বিরাট চিন্তা। সিলেবাস কিভাবে শেষ হবে? লকডাউন উঠলেই সপ্তাহখানেক বাদেই যে পরীক্ষা।
পাটিগণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও অনার্সের কঠিন পেপারের জন্য প্রয়োজন শিক্ষকদের। নিজে নিজে তা উতরানো একেবারেই সম্ভব হচ্ছে না। বাড়িতে শিক্ষক আসছেন না, টিউশনে যেতে পারছে না ছাত্রছাত্রীরা, স্কুল-কলেজ তো দূর। তাহলে উপায়? অগত্যা ইন্টারনেটের দ্বারস্থ হয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্রছাত্রীদের একাংশ। ভিডিও কলিং-এ চলছে পড়াশোনা। এটি যে খুব একটা নতুন পদ্ধতি, এমনটা একেবারেই নয়। কিন্তু কলকাতার সরকারি স্কুল কলেজে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির উপর ভর করে পড়ুয়াদের পড়াশোনা করতে দেখা যায় না সচরাচর।
কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজের অধ্যাপকরা সিলেবাস শেষ করতে কাজে লাগিয়েছেন ইন্টারনেটকে। সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগের প্রধান সোনারেখা চট্টোপাধ্যায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, "এই ইন্টারনেটের মাধ্যমে যে পড়াশোনা, তাতে একেবারই আমরা অভ্যস্ত ছিলাম না। তাই প্রথমদিকে কিছুটা সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সিলেবাস শেষ করা হয়েছে, এমন নজির নেই। কিন্তু ছুটির পরিমাণ দিন দিন এতটাই বেড়ে চলেছে, তাই আমাদের একটা পথ বের করতে হয়েছে। সেমেস্টার সিস্টেমে জুনে শেষ হয়ে যাবে একটি সেশন। 'লকডাউন' ওঠামাত্রই ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলবে পরীক্ষা। তাই সিলেবাস শেষ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।"
কলেজ বন্ধ, সিলেবাস শেষ করতে বাড়ি থেকে ভিডিও কলে চলছে ক্লাস pic.twitter.com/htfpZ3dhLC
— Indian Express Bangla (@ieBangla) March 27, 2020
তিনি আরো বলেন, "প্রাণীবিদ্যা ও ভূগোল বিভাগের স্নাতকোত্তরের অধ্যাপকরা গত দিন দুয়েক ধরে ভিডিও কলে ক্লাস নিচ্ছেন। এরপরই বিদ্যাসাগরের অধ্যক্ষ অনুমতি দিলে, আমরা ভিডিও কলে ক্লাস শুরু করি। খুব মজার বিষয়, ছাত্রছাত্রীরা খুব মনোযোগ সহকারে এবং আনন্দের সঙ্গে ভিডিও কলে ক্লাস করছে। সহজ উপায়ে একসঙ্গে ৩২-৩৩ জনকে নিয়ে ক্লাস করানো সম্ভব হচ্ছে। করোনার জন্য অনেকে হোস্টেল ছেড়ে বাড়ি চলে গিয়েছে। সেখান থেকেই তারা ক্লাস 'জয়েন' করতে পারছে"।
সোনারেখা দেবী আরও বলেন, "আমরা জুম ডাউনলোড করে নিয়েছি এবং ছাত্র-ছাত্রীদেরও ডাউনলোড করতে বলেছি। এই সফটওয়্যার এর মাধ্যমে আমরা ক্লাস করছি। হোয়াটসঅ্যাপে আমরা জানিয়ে দিই, কোন সময় কোন সেমেস্টারের ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস নেওয়া হবে। সেই মতো সবাই অনলাইন হয়।"