মাধ্যমিকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ছড়ানোর ঘটনার থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার ব্যাপক কড়াকড়ি উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায়। ক্লাসরুমে কোনও পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন পাওয়া গেলে, তার পরীক্ষা তো বাতিল করা হবেই, সেইসঙ্গে ‘অপরাধের গুরুত্ব বুঝে’ তার রেজিস্ট্রেশনও বাতিল করা হবে। আর কোনও দিন সংসদের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে পারবে না ওই পরীক্ষার্থী। শনিবার এমন 'চরম' সিদ্ধান্তের কথাই জানালেন উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মহুয়া দাস।
শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি জানান, "ক্লাসরুমে কোনও পরীক্ষার্থীর থেকে মোবাইল ফোন পাওয়া গেলে তা বাজেয়াপ্ত করা হবে। পরীক্ষা তো বাতিল করা হবেই। তবে এবার আমরা এ নিয়ে চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পরীক্ষা বাতিলের পাশাপাশি অপরাধের গুরুত্ব বুঝে পরীক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশনও বাতিল করা হবে। অর্থাৎ ওই পরীক্ষার্থী সংসদের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় আর কোনওদিন বসতে পারবে না।’’
আরও পড়ুন, উচ্চ মাধ্যমিকে নয়া নিয়ম, এক ঘণ্টা আগে পৌঁছোতে হবে কেন্দ্রে
পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোনের ব্যবহার ঠেকাতে আরও কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে সংসদ। মহুয়া দেবী জানান, "ভেন্যু সুপারভাইজার অর্থাৎ প্রধান শিক্ষক, সেন্টার ইন চার্জ, সেন্টার সেক্রেটারি ছাড়া আর কারও কাছে মোবাইল ফোন রাখা যাবে না। এটা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই ব্যবস্থা বহাল রাখার জন্য কড়া নিরাপত্তা বলয় রাখা হয়েছে। প্রায় এক চতুর্থাংশ পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ডিটেকশন সেন্টার থাকছে।"
অন্যদিকে, পরীক্ষা শুরুর প্রথম ঘণ্টায় কোনও পরীক্ষার্থীকেই শৌচাগারে যেতে দেওয়া হবে না বলেও এদিন উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে জানানো হয়েছে। এমনকি, প্রথম ঘণ্টায় কোনও শিক্ষক-শিক্ষিকা বা শিক্ষাকর্মীও পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে যেতে পারবেন না।
আরও পড়ুন, মাধ্যমিক প্রশ্নপত্র পাচারের মাধ্যম ছিল ‘খোকা ৪২০’
মহুয়া দেবী আরও জানান, "প্রতিটি পরীক্ষাকন্দ্রে ভেন্যু সুপারভাইজারকে আলাদা আই কার্ড দেওয়া হচ্ছে। পরীক্ষাকেন্দ্রের সুরক্ষার দায়িত্ব ওঁর উপরই থাকছে। পরীক্ষাকেন্দ্রে তাঁর ঘরের গুরুত্ব বোঝাতে কন্ট্রোল রুম পোস্টার দেওয়া থাকবে। প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে তিনজন পরিদর্শক থাকছেন। প্রশ্নপত্রের খামে কম্পিউটার ট্র্যাকিং সিস্টেম থাকছে। নিয়ম পালন করা হচ্ছে কিনা, তার ওপর নজরদারি চালানো হবে। কোনওরকম গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না।"
ভেন্যু সুপারভাইজারদের পাঠানো পাঁচটি নির্দেশিকা প্রসঙ্গে এদিন সংসদ সভাপতি জানান, "কারও কাছে মোবাইল থাকলে, কেউ টোকাটুকি করলে, পরিদর্শক বা শিক্ষককে নিগ্রহ করা হলে, বিশৃঙ্খলা তৈরি হলে, খাতার কোনও অংশ জমা না দিয়ে বাড়ি নিয়ে চলে গেলে, উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল করা হতে পারে।"
অন্যদিকে, মহুয়া দেবীর পরামর্শ, "আজকাল অনেকে গুজব রটছে। সকলকে বলছি, কোনও গুজবে কান দেবেন না। যদি কোনও কিছু ঘটে, আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব।"