West Bengal College Admissions Online Process: প্রত্যেক বছর কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে ভর্তি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের অন্ত থাকে না। গতবছর সেই অভিযোগের পরিমাণ ছিল তুলনামূলক বেশি। টাকা নিয়ে একের পর এক ভর্তির অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে। এবার সেই দুর্নীতি রুখতে তৎপর হল প্রশাসন।
সোমবার কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দুর্নীতি রুখতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশও দেন তিনি। বৈঠকে ঘোষণা করা হয়, ভর্তির জন্য কোনও ছাত্রছাত্রীকে কলেজ ক্যাম্পাসে আসতে হবে না। ভর্তির সমস্ত প্রক্রিয়াই হবে অনলাইন মাধ্যমে। এমনকি ভর্তির টাকা জমা দিতে হবে অনলাইনেই। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজগুলিতে ভর্তির জন্য কোনও প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
কিন্তু এখন প্রশ্ন কীভাবে হবে এই অনলাইনে ভর্তির গোটা কর্মকান্ড ?
এ বিষয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সঙ্গে কথা বললেন বিদ্যাসাগর কলেজের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগের প্রধান অধ্যাপিকা সোনারেখা চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, কোনো ব্যাপারেই কলেজে আসতে হবে না ছাত্রছাত্রী বা অভিভাবকদের। একটা নির্দিষ্ট সময় অবধি অনলাইনে কলেজের সাইট থেকে পাওয়া যাবে ফর্ম। সেটি পূরণ করে জমা দেওয়ার জন্যও থাকবে নির্দিষ্ট সময়সীমা। ফর্ম জমা দেওয়ার সময় অনলাইনেই দিতে হবে ফর্মের দাম।
আরও পড়ুন: ‘একদম কম নম্বর পেলে কলা বিভাগেই পড়তে হবে, এই চিরাচরিত ধারাটা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে’
বিষয় ভিত্তিক কত খরচ বা কত টাকা জমা দিতে হবে তার সম্পূর্ণ পরিকাঠামো উল্লেখ করা থাকবে প্রত্যেকটি কলেজ ওয়েবসাইটে। উল্লেখ্য, যে সব বিষয়ে প্র্যাকটিকাল কোর্স থাকে সেক্ষেত্রে খরচ বেশি।
দ্বাদশ শ্রেণির ফলাফলের ভিত্তিতে প্রথমে বেশ কিছুজনের তালিকা প্রকাশ করা হবে। কবে তালিকা প্রকাশ হবে , সেই তারিখ আগাম জানিয়ে দেওয়া হবে কলেজ ওয়েবসাইটে। প্রসঙ্গত, প্রত্যেক কলেজ যে কোনো একটি ব্যাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত থাকে। সেই ব্যাঙ্কের মাধ্যমে অনলাইনে জমা দিতে হবে ভর্তির টাকা। অনলাইনে অথবা সেই নির্দিষ্ট ব্যাঙ্কে গিয়ে ভর্তির টাকা জমা দিতে পারে। কাজেই কলেজে আসার কোনো প্রয়োজন হবে না।
আগে দীর্ঘ কাউন্সিলিংয়ের যে বৃহৎ কর্মকান্ড ছিল এবার সেটি সম্পন্ন হবে অনলাইনে। মেধাতালিকা প্রকাশ হওয়ার পর কতদিনের মধ্যে ভর্তির টাকা জমা দিতে হবে তা উল্লেখ থাকবে ওয়েবসাইটে। এরকম মোট তিনটি মেধাতালিকা প্রকাশ করবে কলেজ। তালিকা কবে প্রকাশ করা হবে সেই তারিখ আগেই উল্লেখ করা থাকবে কলেজ ওয়েবসাইটে।
আরও পড়ুন: উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশের দিন ঘোষণা করল সংসদ
টাকা জমা দিয়ে ভর্তি হয়ে গেলে ব্যাঙ্ক একটা রসিদ পাঠিয়ে দেবে কলেজে। যেখানে উল্লেখ থাকবে কারা কারা ভর্তি হয়েছে। অর্থাৎ ২৭ টা আসনের জন্য প্রথম যে মেধাতিলিকা প্রকাশ করা হবে, তাদের চার থেকে সাত দিনের মধ্যে জমা দিতে হবে ভর্তির টাকা। সাধারণত দেখা যায়, সব আসন প্রথম বারেই পূর্ণ হয় না। হয়ত ১৫ জন ভর্তি হয়েছে। বাকি ১২ টা আসনের জন্য কলেজ একটা দ্বিতীয় মেধা তালিকা প্রকাশ করবে। সেখানে নতুন প্রার্থীর সঙ্গে উল্লেখ থাকবে প্রথমে মেধাতালিকায় যাদের নাম থাকা সত্তেও ভর্তি হয়নি, সেসব প্রার্থীর নামও। ভর্তির পদ্ধতি শেষ হলে অনলাইনে তালিকা প্রকাশ করা হবে এবং জানিয়ে দেওয়া হবে কবে থেকে ক্লাস শুরু হবে।
কিন্তু এখনও বহু মানুষ এই অনলাইনের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেননি। একইসঙ্গে সাম্প্রতিককালের ঘটনার জেরে নেট ব্যাঙ্কিংয়েও ভরসা করতে পারেন না অনেকেই। যার ফলে তাদের ক্ষেত্রে অসুবিধা হতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, গ্রাম থেকে শহরে পড়তে আসা বহু ছাত্রছাত্রী, অনলাইনে ভর্তির পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত নয়। সেক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে বলে মনে করছেন অধ্যাপিকা সোনারেখা চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে যেহুতু কলেজে আসা একেবারেই বারণ সেহুতু তারা সমস্যায় পড়লেও কিছু করার থাকবে না। কলেজে কোনও ছাত্রসংগঠন হেল্প ডেস্ক ব্যবহার করতে পারবে না, এমন নির্দেশও জারি করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। অনলাইনেই মিলবে সমস্ত তথ্য।