যাদবপুর ক্যাম্পাসে কোর্ট মিটিং বা প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছেন রাজ্যপাল তথা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীপ ধনকড়। আজ, অর্থাৎ শুক্রবার, এই বৈঠক হওয়ার কথা জানিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। বৈঠকে আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হবে আসন্ন সমাবর্তনে সাম্মানিক ডিলিট এবং ডিএসসি প্রাপকদের নাম চূড়ান্ত করা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে যাওয়া নিয়ে রাজ্যপাল বলেন, "যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ক্রমাগত উন্নত হওয়া উচিত, এবং তাকে অবশ্যই নিজের প্রাতিষ্ঠানিক মর্যাদা ধরে রাখতে হবে।"
১৯ সেপ্টেম্বর বাবুল সুপ্রিয় হেনস্থাকাণ্ডের পর এই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখবেন আচার্য ধনকড়। গত মাসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে 'উদ্ধার' করার ঘটনাকে ঘিরে মমতা সরকারের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন রাজ্যপাল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট মিটিংয়ে রাজ্যপালের অংশ নিতে আসার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। সাধারণভাবে কোর্ট মিটিংয়ে উপস্থিত থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ-উপাচার্যরা, বিভিন্ন বিভাগীয় প্রধান, এবং রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের প্রতিনিধিরা।
সমাবর্তনে সাম্মানিক ডিগ্রি প্রাপকদের বাছাই করার প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠনের এক আধিকারিক জানান, সাধারণভাবে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে বিভিন্ন বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে গঠিত এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের দ্বারাই নির্বাচিত হন প্রাপকরা। এই নামের তালিকা পাঠানো হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্টে, যেখানে তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর তা যায় আচার্যের কাছে, যিনি তা অনুমোদন করেন।
আরও পড়ুন: সারদাকাণ্ডে জেলে গিয়ে সুদীপ্ত সেনকে জেরা সিবিআই-এর
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যাদবপুর ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক সদস্য বলেন, "সেপ্টেম্বরে রাজভবনে উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠককালে রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য স্পষ্ট করে বলে দেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো সিদ্ধান্তে তাঁর অংশ নেওয়া উচিত। বৈঠকের তারিখ ১৮ অক্টোবর করতে বলে তিনি বলেন, তাতে তিনি অংশ নিতে চান।"
এদিকে বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দেবরাজ দেবনাথ বলেন, "আচার্য হওয়ার কারণে আদালতের সভায় অংশ নেওয়ার তাঁর অধিকার রয়েছে, কিন্তু ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাজ্যপাল ধনকড় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে যেভাবে পড়ুয়াদের অধিকারকে অগ্রাহ্য করে গাড়িতে বাবুল সুপ্রিয়কে নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন, তা তাঁরা কখনওই ভুলতে পারবেন না।" পাশাপাশি দেবনাথ আরও বলেন, যাদবপুর ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে এবিভিপি কর্মীরা যেভাবে "ভাঙচুর চালায়", তার বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেন নি রাজ্যপাল। তবে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কোনো প্রতিবাদ হবে কিনা তা জানতে চাইলে দেবনাথ বলেন, "আমরা এরকম কোনো কর্মসূচীর কথা এখনও স্থির করিনি।"
টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের ওই সদস্য বলেছেন, তাঁরা আশাবাদী যে ধনকড় বিশ্ববিদ্যালয়ে এলে কোনোরকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না, কিন্তু শেষ মুহূর্তে কোনও গোলমাল হলে "আমরা ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের বোঝাব"।