অভাবের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। আর সেই ঘর আলো করেছে মেয়ের উচ্চমাধ্যমিকের রেজাল্ট। গরিব মা-বাবার মুখে যুদ্ধজয়ের হাসি ফুটিয়েছে শিলিগুড়ির রীতা হালদার। মা বাড়ি পরিচারিকার কাজ করেন। বাবা পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে মাছ বিক্রি করেন। টিনের চালের বাড়ি, স্যাঁতসেতে ঘর। সূর্যের আলো ঠিকমতো ঢোকে না। সেই বাড়ির মেয়ে রাজ্যে সপ্তম হয়েছে। রীতা হালদারের সাফল্যে অভাবের ঘরে খুশির হাওয়া।
Advertisment
শিলিগুড়ির বুদ্ধভারতী স্কুলের ছাত্রী রীতা। মাধ্যমিকে এই স্কুলেই প্রথম হয়েছিল সে। তখন থেকেই জেদ চেপে ধরে। আরও ভাল ফল করতে হবে উচ্চমাধ্যমিকে। প্রবল ইচ্ছাশক্তি, জেদ আর মেধার উপর ভর করে দুর্দান্ত ফল করেছে উচ্চমাধ্যমিকে। লকডাউনে বাড়িতে বসে পড়াশোনা করেছে। অনলাইন ক্লাসেও রীতিমতো কোনও ছেদ পড়েনি। রীতার এই অসম লড়াইয়ে পাশে এসে দাঁড়ায় রামকৃষ্ণ মিশন এবং পাড়ার এক স্কুল শিক্ষক।
আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তারা। এর পর আর আটকানো যায়নি রীতাকে। অদম্য ইচ্ছাশক্তির জেরে পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে এই কৃতী পড়ুয়া। ভাল ফল নিয়ে আশাবাদীই ছিল রীতা। মেধাতালিকায় নাম আসায় তাই অবাক হয়নি। ইংরাজি নিয়ে স্নাতক হতে চায় আর্টসের ছাত্রী। ভবিষ্যতে পরিবারের পাশে দাঁড়ানোই একমাত্র লক্ষ্য।
ভবিষ্যতে আর পাঁচজনের মতো ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতে চায় না রীতা। তাঁর লক্ষ্য, মানুষের সেবা করা। তাই নার্স হয়ে মানুষের সেবা করতে চায়। নার্সিং নিয়ে পড়াশোনা অনেক খরচের ব্যাপার। তবে চিন্তা নেই তার। ঈশ্বরের উপর ভরসা আছে। এতদূর যখন সাফল্য এসেছে, ভবিষ্যৎ লক্ষ্য়েও কোনও বাধা আসবে না বলে মনে করে শিলিগুড়ির রীতা।