সেদিন দু’জনে। এক্সপ্রেস ফটো: পার্থ পাল।
General Election 2019: কাকা-ভাইপোর সৌজন্য সাক্ষাতে শেষ পর্যন্ত ছন্দ পতন ঘটল। সোমবার চতুর্থ দফার লোকসভা নির্বাচনের দিন আচমকা বোলপুরে তৃণমূল কার্য্যালয়ে গিয়ে সদ্য মাতৃহারা অনুব্রত মণ্ডলকে প্রণাম করে সৌজন্যের বার্তা দিয়েছিলেন অনুপম হাজরা। কিন্তু, ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে ‘কেষ্ট কাকু’র বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দিলেন ‘ভাইপো’ অনুপম। এমনকী, তাঁর মাধ্যমে তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ অনুব্রত পদ্ম শিবিরে ‘ইট পাতছেন কিনা’ সে বিষয়ে তাৎপর্যপূর্ণ জল্পনার জন্ম দিলেন অধ্যাপক অনুপম হাজরা।
লোকসভা নির্বাচনের আরও খবর পড়ুন, এখানে
অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে অনুপমের সাক্ষাৎ, প্রণাম এবং তৃণমূল কার্য্যালয়ে ‘প্রসাদ’ খাওয়া। সোমবার এ দৃশ্য দেখেই চমকে যায় এ রাজ্যের সাধারণ মানুষ থেকে তামাম রাজনীতিকরা। এমনকী অনুব্রত বলেন, অনুপম তৃণমূলে ফিরতে চাইলে, তিনি ‘দিদি’কে বলে রাজ্যসভার সাংসদ করার চেষ্টা করবেন। এরপরই বিজেপির অন্দরে চরম জল ঘোলা হতে শুরু করে। এরপরই মঙ্গলবার মুরলীধর সেন লেনে সাংবাদিক বৈঠকে বসেন মুকুল রায় ও অনুপম হাজরা।
কী বললেন অনুপম?
এদিন অনুপম বলেন, “আমার দুটো বাড়ি পরে থাকেন অনুব্রত। দলের বাইরে সে আমার প্রতিবেশী। কেষ্টকাকু। প্রতিবেশীর বাড়িতে কারও মৃত্যু হলে আমরা দেখতে যাই। ভদ্রতার খাতিরে দেখতে যাওটাই বাংলার রীতি। ফোন করে আমাকে বলেছিলেন একবার পারলে আসিস। যখন ছোটো ছিলাম, তাঁর কোলে মানুষ হয়েছি। জ্যেঠিমা বলে ডাকতাম (অনুব্রতর মাকে)। দেখা করাটা নিতান্তই সৌজন্য। এর বাইরে কিছু নয়”।
শুধু সৌজন্যের যুক্তিই নয়, এদিন অনুব্রতর বিরুদ্ধে চক্রান্তেরও অভিযোগ করেন অনুপম। ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় কেন সংবাদমাধ্যম হাজির ছিল তা নিয়ে তোপ দেগেছেন অনুপম। তাঁর বক্তব্য়, “তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলাম অনুব্রত মণ্ডলের কারণেই। তাঁর জন্যই তৃণমূলে কাজ করতে পারতাম না। প্রথমে বাড়িতে যেতে বলেছিলেন। বাড়িতে না থাকায় তৃণমূলের কার্য্যালয়ে যাই। ভিতরে মিডিয়াকে আগেভাগেই বলে রাখা হয়েছিল। মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি এতটা নোংরা হতে পারে জানা ছিল না। এভাবে চক্রান্ত করা হবে, তা জানা ছিল না”।
তৃণমূলের রাজ্যসভার টিকিট প্রসঙ্গেও সরাসরি জবাব দিয়েছেন অনুপম হাজরা। তাঁর দাবি, “তৃণমূলে যখন ছিলাম, ঝগড়া ছিল অনুব্রতর সঙ্গেই। এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছিল যে দল ছাড়তে বাধ্য হই। তাছাড়া, যে আজ পর্যন্ত কাউন্সিলর হয়নি, বিধায়ক হয়নি, তাঁর মুখে সংসদের টিকিট পাইয়ে দেওয়ার কথার কোনও গুরুত্ব নেই”। অনুপম যখন এ কথা বলছেন, তখনই পাশ থেকে মুকুল রায় বলেন, “কারও বাড়িতে যদি কেউ দেখা করতে যায়, তখন মিডিয়াকে ডাকা মানেই রাজনীতির ব্যাপার থাকে। এটা রাজনৈতিক চক্রান্ত। অনুপম ভাল ছেলে। রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার করা হচ্ছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সর্বভারতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহারা বলতে শুরু করেছিলেন অনুপম দলীয় কার্য্যালয়ে গিয়ে অনুব্রত মন্ডলের সঙ্গে দেখা না করলেই পারত। এ প্রসঙ্গে অনুপমের বক্তব্য, ইতিমধ্যে নেতৃত্বের সঙ্গে কথা হয়েছে।
সাংবাদিক বৈঠকের শেষ লগ্নে অনুব্রত মণ্ডলের বিজেপিতে যোগদান সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন অনুপম। তিনি বলেন, ” উনি আমায় কানে কানে কী বলেছেন তা কি আপনারা শুনেছেন”? তাঁর দাবি, “বিজেপিতে উনি আসবেন নাকি আমি আসব তৃণমূলে, সেটা সময় বলবে। উনি কি আগে থেকে ইট পেতে রাখছেন না বিজেপিতে আসার জন্য! একদিনের কঠিন সুর কেন নরম হতে শুরু করলো, কেন ফোন করে বললেন, একবার আয়। ভূতের মুখে রামনাম। যখন দলে ছিলাম, তখন তো বলেননি। এত আবেগপ্রবণ কেন”?
Get all the Latest Bengali News and Election 2019 News in Bengali at Indian Express Bangla. You can also catch all the latest General Election 2019 Schedule by following us on Twitter and Facebook