Advertisment

'গদ্দার' চাণক্যই বিজেপির বাংলা জয়ের কারিগর

রাজনৈতিক মহল মনে করে, কোন আসনে কার সঙ্গে গোপন বৈঠক করলে দলের লাভ হবে, তা মুকুলের চেয়ে ভাল কেউ জানেন না। তৃণমূল কংগ্রেসের কারা গোপনে বিজেপিকে সাহায্য করবেন তাও বিলক্ষণ জানতেন মুকুল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
bjp

মুকুল রায়।

নিন্দুকেরা বলে, সারদা-নারদ থেকে বাঁচতে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন একসময়ের তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড মুকুল রায়। বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় দলের নেতৃত্বস্থানীয়রা শুধু নন, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম না করে "গদ্দার" বলে চিহ্নিত করেছেন তাঁকে। এবং কলকাতা প্রেস ক্লাবে মিট দ্য প্রেসে মুকুল রায়ের মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করাতে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবজ্ঞার ছলে প্রশ্নই শোনেন নি। বৃহস্পতিবার লোকসভার ফল বেরনোর দিনে সেই মুকুল রায়ের চোখেমুখে আত্মবিশ্বাসের ছাপ। তবে চোয়াল শক্ত, মুখ যেন আরও সংযত। তাঁর কাজ এখনও বাকি।

Advertisment

বৃহস্পতিবার দিল্লি থেকে ফিরে কলকাতায় বিজেপির রাজ্য দপ্তরে যান মুকুল রায়। বিজেপির ভাল ফলের পরও ভিক্টরি সিম্বল দেখান নি তিনি। স্রেফ বলেন, "এখনও সব ফল প্রকাশ হয় নি।" দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পর, হাজারো কটূক্তি শোনার পরও নিজের লক্ষ্যে অটল মুকুল। তাঁর মুখ বলছে এই ফল নয়, তাঁর নিশানা আরও দূরে। সংবাদ মাধ্যমে তিনি এদিন বলেই ফেলেন, তৃণমূল কংগ্রেসকে তুলে দেওয়াই তাঁর উদ্দেশ্য। তবে এও তিনি স্বীকার করেছেন, বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব সকলে মিলে এক যোগে লড়াই করেই লোকসভা নির্বাচনে সাফল্য এনেছেন।

সারদা-কাণ্ডে সিবিআই মুকুল রায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। তিনি তখন বলেছিলেন তদন্তে সহযোগিতা করবেন। সেই শুরু তৃণমূল সুপ্রিমোর সঙ্গে সংঘাত। তার শেষ বিজেপিতে যোগ দিয়ে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, তৃণমূল কংগ্রেসের মূল সেনাপতিকে দলে নিয়ে পদ্ম শিবির যে ভুল করে নি, বৃহস্পতিবারের ফলই তার প্রমাণ। তিনি নিজে প্রার্থী করেছিলেন বিষ্ণপুরের সৌমিত্র খাঁ, কোচবিহারের নিশীথ প্রামাণিকদের। এঁরাও আজ জয় পেয়েছেন। বাংলার রাজনীতির চাণক্য তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনীতির রণকৌশল সম্পর্কে অত্যন্ত সচেতন। তাই বিজেপির তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করা সহজ হয়েছে। নিজের দুর্দিনে মুকুল বলতেন, ক্রিজে থাকলে রান মিলবে। তা আরো একবার প্রমাণ করে দিলেন মুকুল রায়।

লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্যে সমানতালে প্রচার করেছেন নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ। বিজেপিও বছরভর কর্মসূচি পালন করেছে। কিন্তু সেই তরকারিতে নুনের কাজ করেছে মুকুলের রাজনৈতিক কৌশল। রাজনৈতিক মহল মনে করে, কোন আসনে কার সঙ্গে গোপন বৈঠক করলে দলের লাভ হবে, তা মুকুলের চেয়ে ভাল কেউ জানেন না। তৃণমূল কংগ্রেসের কারা গোপনে বিজেপিকে সাহায্য করবেন তাও বিলক্ষণ জানতেন মুকুল। এসবই বাড়তি সুবিধা দিয়েছে পদ্ম শিবিরকে। তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তৃণমূল বিধায়করা দলে দলে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, তা আগেই জানিয়েছিলেন তিনি। এবার দেখার বিষয়, বাংলার মসনদ দখলে কি কৌশল নেন এই চাণক্য।

bjp mukul roy General Election 2019
Advertisment